বুধবার, মে ১৪, ২০২৫

আমেরিকান-ইসরাইলীর মুক্তি সম্পন্ন হওয়ায় গাজ্জায় আবার হামলা শুরু করেছে ইসরাইল

spot_imgspot_img

ফিলিস্তিন স্বাধীনতাকামী ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের হাতে আটক আমেরিকান-ইসরাইলী বন্দী ইদান আলেকজান্ডারের মুক্তি সম্পন্ন হওয়ায় গাজ্জায় আবার হামলা শুরু করেছে ইহুদিবাদী সন্ত্রাসীদের অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইল।

মঙ্গলবার (১৩ মে) মিডল ইস্ট মনিটরের খবরে একথা জানানো হয়।

খবরে বলা হয়, হামাস আমেরিকান-ইসরাইলী বন্দী ইদান আলেকজান্ডারকে মুক্তি দেওয়ার কয়েক ঘন্টা পর অবরুদ্ধ ও বিধ্বস্ত ভুতুড়ে নগরী গাজ্জায় পুনরায় নৃশংস হামলা শুরু করেছে ইসরাইল।

গতকাল মুক্তির পর ইদানকে আজ দখলকৃত ফিলিস্তিন বা অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইলের তেল আবিবের সোরাস্কি (ইচিলোভ) মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে সে তার পরিবারের সাথে মিলিত হয়। মুক্তির সময় তাকে আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা রেড ক্রসের প্রতিনিধিদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছিলো।

অপরদিকে ইদানকে বুঝে পাওয়ার পর গত রাত থেকেই পুনরায় হামলা শুরু করে দেয় দখলদার ইসরাইলের বাহিনী। হামলায় এক ফিলিস্তিনি নারী নিহত ও এক শিশু গুরুতর আহত হওয়ার নির্মম ঘটনাও ঘটেছে। এর পূর্বে ইদান আলেকজান্ডারের মুক্তির জন্য আমেরিকার সাথে চুক্তি অনুসারে সাময়িক যুদ্ধবিরতি চলছিলো।

আনাদোলুর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজ্জার আল-দারাজ পাড়ায় গোলাবর্ষণের মাধ্যমে পুনরায় হামলা শুরু করে ইসরাইল। এসময় রামল্লা স্কুলের কাছে একটি শেল আঘাত হানে, যেখানে ফিলিস্তিনের অনেক উদ্বাস্তু পরিবার আশ্রয় নিয়েছিলো।

এছাড়া আল-দারাজের একটি আবাসিক ভবনে ইসরাইলী গোলাবর্ষণে আরও বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন।

গাজ্জা শহরের পূর্ব ও উত্তরাঞ্চলের একাধিক এলাকায় দখলদার বাহিনী গোলাবর্ষণ চালিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া দক্ষিণের খান ইউনিসের পূর্ব প্রান্তে এবং রাফাহ সীমান্ত নগরীর উত্তরাংশেও এই হামলা ছড়িয়ে পড়ে। হাসসান আসলিহা নামের এক ফিলিস্তিনি সাংবাদিক খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালে আঘাত হানা একটি গোলার আঘাতে শহীদ হোন। তিনি গত মাসের এক হামলায় অত্যন্ত গুরুতরভাবে আহত হয়ে হাসপাতালটিতে চিকিৎসা নিয়ে যাচ্ছিলেন।

ফলে অক্টোবর ২০২৩ থেকে এখন পর্যন্ত ইসরাইলী হামলায় সাংবাদিক নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ২১৫ জনে।

এর আগে চ্যানেল ১৪-এ প্রকাশিত খবরে অবৈধ রাষ্ট্রটির এক উচ্চপদস্থ সেনা কর্মকর্তা বলেছিলেন, “ইদান ইসরাইলী ভূখণ্ডে পা রাখার সঙ্গে সঙ্গে আমরা আবার হামলা শুরু করবো। সামরিক পরিকল্পনা অনুযায়ী অভিযান চালিয়ে যাবো, যদি না রাজনৈতিক নেতৃত্ব অন্য কিছু নির্দেশ দেয়।”

সংবাদমাধ্যমের তথ্যমতে, ইদান আলেকজান্ডারকে মুক্তি দেওয়া হয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের নেতৃত্বে হামাসের সঙ্গে মধ্যস্থতায়।

অপরদিকে ইসরাইল দাবী করছে, গাজ্জায় এখনো ৫৮ জন ইসরাইলী বন্দি রয়েছে, যাদের মধ্যে ২১ জন জীবিত।

ফিলিস্তিনের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, ইসরাইলের কারাগারে এখনো ৯,৯০০-র অধিক ফিলিস্তিনি বন্দী রয়েছে। তারা সেখানে নিপীড়ন, অনাহার ও চিকিৎসায় অবহেলার শিকার হচ্ছে। যার ফলে বহু বন্দীর মৃত্যু হয়েছে। ফিলিস্তিনি ও ইসরাইলী।মিডিয়ায় এমনকি মানবাধিকার সংস্থাগুলোর প্রতিবেদনেও এমন তথ্য প্রতিনিয়ত উঠে আসছে।

মার্কিন মদদে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া গাজ্জা গণহত্যায় এখন পর্যন্ত প্রায় ৫২,৯০০ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে বিশ্ব মানবতার শত্রু ইহুদিবাদী সন্ত্রাসীদের অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইল, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।

সর্বশেষ

spot_img
spot_img
spot_img