ইসরাইলের হামলার জবাবে ইরান একযোগে দুটি বড় ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। শত শত ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ব্যবহার করে চালানো এই আক্রমণকে বিশ্লেষকরা ইসরাইলের বিরুদ্ধে ইরানের পক্ষ থেকে এযাবৎকালের সবচেয়ে শক্তিশালী সামরিক পদক্ষেপ হিসেবে অভিহিত করছেন।
ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (আইআরজিসি) এক বিবৃতিতে জানায়, ইসরাইলের অভ্যন্তরে “অবৈধ দখলদার ইহুদিবাদী শাসনের সামরিক ঘাঁটি ও বিমান ঘাঁটি” লক্ষ্য করে এই হামলা চালানো হয়েছে।
রয়টার্সের বরাতে এক ইরানি কর্মকর্তা বলেন, “ইসরাইলে কোনো স্থানই আর নিরাপদ থাকবে না। আমাদের প্রতিশোধ হবে বেদনাদায়ক। আমাদের নেতৃবৃন্দ, বিজ্ঞানী এবং জনগণকে হত্যার জন্য দখলদার ইহুদিবাদী শত্রুকে ভয়াবহ মূল্য দিতে হবে।”
অন্যদিকে, ইসরাইলি সেনাবাহিনী হামলার প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে এখনো বিস্তারিত কিছু প্রকাশ করেনি। বরং তারা দেশবাসীকে আহ্বান জানিয়েছে হামলার স্থান বা ক্ষয়ক্ষতির চিত্র ও ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়ানো থেকে বিরত থাকতে।
এক বিবৃতিতে ইসরাইলি সেনাবাহিনী বলেছে, “শত্রুপক্ষ এই ভিডিও ও চিত্র বিশ্লেষণ করে তাদের পরবর্তী হামলার সক্ষমতা আরও উন্নত করতে পারে।”
এদিকে ইরান তাদের এই প্রতিরোধমূলক অভিযানের নাম দিয়েছে “আল-ওয়াদ আস-সাদিক ৩” বা “সত্য প্রতিশ্রুতি ৩”। উল্লেখ্য, এর আগে ইরান একই নামের দুটি সামরিক আক্রমণ চালিয়েছিল— এপ্রিল ২০২৪ সালে “আল-ওয়াদ আস-সাদিক ১” এবং অক্টোবর ২০২৪-এ “আল-ওয়াদ আস-সাদিক ২”।
এই হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত ৩ জন এবং আহত হয়েছেন ৯০ জনের বেশি। তবে এই সংখ্যা ধাপে ধাপে প্রকাশ পায় এবং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে।
হামলার কিছুক্ষণের মধ্যেই ইসরাইলি সম্প্রচার সংস্থা প্রথম জানায়, ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ১৭ জন আহত হয়েছেন। তখন তারা এই আহতদের অবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানায়নি, তাদের অবস্থা গুরুতর না হালকা, তাও স্পষ্ট করা হয়নি।
এরপর ইসরাইলি জরুরি সেবা সংস্থা “মাগেন ডেভিড আদম” (লাল দাউদ তারকা) জানায়, মধ্য ইসরাইলের বিভিন্ন স্থানে ক্ষেপণাস্ত্র আঘাতে আহতের সংখ্যা বেড়ে ২১-এ পৌঁছেছে, যাদের মধ্যে ২ জনের অবস্থা ‘গুরুতর’ বলে বর্ণনা করা হয়।
তারা আরও জানায়, তেল আবিবে একটি ভবনের ভেতরে কিছু মানুষ আটকে পড়েছেন, যেটি ইরান থেকে ছোঁড়া একটি ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
পরে দিন শেষে ইসরাইলি অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস নিশ্চিত করে, ইরানের এই হামলায় মোট আহতের সংখ্যা ৯০ জনে পৌঁছেছে।
সূত্র : আল জাজিরা