ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতী রেজাউল করীম চরমোনাই পীর বলেছেন, লেখাপড়ার মানের অবনতির কারণে সারা দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো শিক্ষার্থী শুণ্য হয়ে যাচ্ছে, বাচ্চাদের মানসিক ও আদর্শিক ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। সরকার সেদিকে লক্ষ না করে গানের জন্য শিক্ষক নিয়োগ দিচ্ছে। মানুষ বাচ্চাদেরকে ছোটকালে ইসলাম শিখাতে চায়। ইসলামের প্রতি মানুষের ভালোবাসা চিরন্তন। সরকারের উচিৎ স্কুলগুলোতে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ দেয়া। তারা সেটা করছে না। আমরা দাবী জানাচ্ছি যে, দক্ষ ও নৈতিকতা সম্পন্ন প্রজন্ম গড়তে অবিলম্বে সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে, না দেশের মানুষ রাজপথে নামতে বাধ্য হবে।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ-এর উদ্যোগে আয়োজিত “দেশের সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বাধ্যতামূলক ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের দাবীতে” জাতীয় সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
মুফতী রেজাউল করীম বলেন, শিক্ষা জাতীর মেরুদণ্ড তবে তা সুশিক্ষা হতে হবে। সাম্প্রতিক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির সাথে একটা দলের নেতার যে আচরন দেখলাম তাতেই বোঝা যায় দেশের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেও সুশিক্ষা অর্জন হয় নাই।
তিনি বলেন, দেশের মানুষ ইসলামের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত। ৫ আগস্টের পরে সুযোগ তৈরি হয়েছে। আমরা যদি সেই সুযোগ কাজে লাগাতে না পারি তাহলে আগামী প্রজন্ম আমাদেরকে ধিক্কার দেবে। তাই উলামায়ে কেরামকে তাদের দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন হতে হবে।
তিনি আরও বলেন, পরগাছা হয়ে থাকলে কখনোই মূল গাছ হয়ে ওঠা যায় না। এখন সময় মূলগাছা হয়ে ওঠা। তাই যারা ইসলামী মূল্যবোধের কথা বলে কিন্তু দেশকে মৌলবাদের অভয়ারণ্য হতে দেয়া হবে না মর্মে হুমকি দেয়, যারা ইসলামী শরিয়াহ আইনে বিশ্বাস করে না বলে ঘোষণা দেয় তাদের সাথে ঘনিষ্ঠতা উলামায়ে কেরামের শানে মানানসই না।
অনুষ্ঠিত সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন, মাওলানা মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, অধ্যক্ষ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, আহমাদ আবদুল কাদের (খেলাফত মজলিস), মাওলানা জালাল উদ্দীন (বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস), মাওলানা হাসান জামিল (রাবেতাতুল ওয়ায়েজীন), ড. খলিলুর রহমান মাদানী (বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী), মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন, মুফতী যোবায়ের আহমাদ, ড. মুফতী ইউসুফ সুলতান, মুফতী আবদুল্লাহ মাসুম, মুফতী আবদুল্লাহ আল-মাসউদ, মুফতী মনোয়ার (বগুড়া), মাওলানা মুহাম্মাদ সালমান (দ্বীনীয়াত ফাউন্ডেশন), মুফতী মোহাম্মদ আলী (ফেনী), মুফতী সুলতান মহিউদ্দিন (খেলাফত আন্দোলন), মাওলানা সাকিবুল ইসরাম কাসেমী, মাওলানা এনামুল হক মূসা, প্রফেসর ড. মুহাম্মদ সারওয়ার হোসেন, মুফতী শামসুদ্দোহা আশরাফী, মাওলানা আবদুর রাজ্জাক, মাওলানা কামাল উদ্দিন সিরাজ, মাওলানা ইউনুছ ঢালী এবং মুফতী ওয়ালী উল্লাহ প্রমূখ।
উল্লেখ্য সেমিনার থেকে জাতীয় ওলামা-মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের পক্ষ থেকে আগামী শুক্রবার বাদ জুমা দেশের সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ দেয়ার দাবীতে বিক্ষোভ মিছিলের ঘোষণা দেয়া হয়।