ইমরান খান মামলায় ২০২৪ সালের এপ্রিলে বিষযুক্ত চিঠি পাওয়া ইসলামাবাদ হাইকোর্টের অন্যতম বিচারক তারেক মাহমুদ জাহাঙ্গীরী জাল সনদের অভিযোগে বরখাস্ত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত ইসলামাবাদ হাইকোর্ট তাকে বিচারিক কাজকর্ম থেকে বরখাস্ত করে। তার ডিভিশন ও সিঙ্গেল বেঞ্চও বিলুপ্ত ঘোষণা করে।
অ্যাডভোকেট মিয়া দাউদের দায়ের করা অভিযোগ ও আবেদনের শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতি সরদার সরফরাজ ডোগার এবং বিচারপতি মুহাম্মদ আজম খানের সমন্বয়ে গঠিত ডিভিশন বেঞ্চ এই সিদ্ধান্ত নেয়। এবিষয়ে বেঞ্চটি একটি লিখিত আদেশও জারি করে।
লিখিত আদেশে বলা হয়, বিচারপতি তারেক মাহমুদ জাহাঙ্গীরীর বিরুদ্ধে জাল ডিগ্রীর অভিযোগ মামলায় সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত তাকে সবধরণের বিচারিক কাজকর্ম পরিচালনা থেকে বরখাস্ত করছে আদালত। তার ডিভিশন ও সিঙ্গেল বেঞ্চও বিলুপ্ত ঘোষণা করা হচ্ছে। সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত মামলাটি ইসলামাবাদ হাইকোর্টে বিচারাধীন থাকবে।
এছাড়াও আদালত সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার জাফরুল্লাহ খান এবং আশতার আলী আওসাফকে বিচারিক সহকারী হিসেবে নিযুক্ত করে।
ইসলামাবাদ বার অ্যাসোসিয়েশনের আইনজীবী রাজা আলিম আব্বাসি এই প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চকে বলেন, আমরা আইনের শাসনে বিশ্বাস করি। এটি (মামলার মাঝপথে বিচারপতি বরখাস্তকরণ) একটি বিপজ্জনক প্রবণতা। যদি এই প্রবণতা অব্যাহত থাকে, তাহলে এটি বিপজ্জনক হবে। সুপ্রিম কোর্টের দুটি রায় রয়েছে। এই (জাহাঙ্গীরীকে বিচার পরিচালনা থেকে বরখাস্তের) অনুরোধের প্রতি আদালতের আপত্তি থাকা উচিত।
উল্লেখ্য, বিচারপতি তারেক মাহমুদ জাহাঙ্গীরী সেই ১৮/১৯ জন বিচারকদের একজন, যারা ইমরান খান মামলায় ২০২৪ সালের এপ্রিলে হুমকি স্বরূপ বিষ পাউডার বিশিষ্ট চিঠি পেয়েছিলেন।
তোষাখানা, তিন তালাক সহ একাধিক মিথ্যা মামলায় ইমরান খানের বিরুদ্ধে রায় দিতে পাক সেনাবাহিনী ও ইন্টেলিজেন্সের একটি অংশ বিচারকদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ উঠানোর পর তারা এসব বিষযুক্ত চিঠি পেয়েছিলেন। পরবর্তীতে ২০২৫ সালে এসে ইমরান খান বানোয়াট মামলাগুলোর সর্বশেষটি থেকেও বেকসুর খালাস পেয়েছিলেন। কিন্তু এনএপির পক্ষ থেকে পুনরায় একাধিক মামলা দিয়ে তার মুক্তি ঠেকানোকে নিশ্চিত করা হয়।
যে ১৮/১৯ বিচারপতি হুমকি স্বরূপ বিষযুক্ত চিঠি পেয়েছিলেন তারা হলেন,
পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্ট:
১. কাজী ফাইয়াজ ঈসা (প্রধান বিচারপতি)
২. আতহার মিনাল্লাহ
৩. জামাল খান ম্যান্ডোখাইল
৪. আমিন উদ্দিন
ইসলামাবাদ হাইকোর্ট:
৫. আমের ফারুক (প্রধান বিচারপতি)
৬. মহসিন আখতার কাইয়ানী
৭. তারিক মাহমুদ জাহাঙ্গীরী
৮. বাবর সাত্তার
৯. সারদার ইজাজ ইসহাক খান
১০. আরবাব মুহাম্মদ তাহির
১১. সামান রাফাত ইমতিয়াজ
লাহোর হাইকোর্ট:
১২. শুজাআত আলী খান
১৩. শাহিদ বিলাল হাসান
১৪. আলিয়া নীলাম
১৫. আয়েশা মালিক
১৬. ইরফান সাদাত খান
১৭. মুহাম্মদ আলী মাযহার
১৮. সাইয়েদ হাসান আযহার রিজভি
১৯. মুনিব আখতার
সূত্র: ডেইলি জাঙ্গ, ডন নিউজ