ভারতের স্বাধীনতার বিরোধিতা করা উগ্র হিন্দুত্ববাদী সন্ত্রাসী সংগঠন আরএসএসকে জাতির কল্যাণে নিবেদিত বিশ্বের বৃহত্তম এনজিও আখ্যা দিলেন ভারতের উগ্র হিন্দুত্ববাদী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
শনিবার (১৬ আগস্ট) মুসলিম মিররের এক প্রতিবেদনে একথা জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের ৭৯তম স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে উগ্র হিন্দুত্ববাদী সন্ত্রাসী সংগঠন আরএসএসকে জাতির কল্যাণে নিবেদিত বিশ্বের বৃহত্তম এনজিও বলে আখ্যা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি, যা ব্যাপক সমালোচনা ও বিরোধিতার মুখে পড়েছে।
তিনি বলেন, “শত বছর পূর্বে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস) প্রতিষ্ঠিত হয়, যা জাতির কল্যাণে নিজেকে উৎসর্গ করে। প্রতিষ্ঠার সময় থেকেই সংগঠনটি সেবা, নিষ্ঠা এবং শৃঙ্খলার মাধ্যমে জাতি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। এটি বিশ্বের বৃহত্তম এনজিও-ও বটে, যার ১০০ বছরের নিষ্ঠার ইতিহাস রয়েছে।”
দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়ে স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে ভারত বিরোধী হিন্দুত্ববাদী সন্ত্রাসী সংগঠনের ব্যাপারে এমন মন্তব্য করায় বিরোধী দলীয় নেতা, অধিকার কর্মী ও বিশিষ্টজনেরা তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
নরেন্দ্র মোদির মন্তব্যের নিন্দা করে কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ বলেন, “এটি (মোদির মন্তব্য) সাংবিধানিক ধর্মনিরপেক্ষ প্রজাতন্ত্রের চেতনার স্পষ্ট লঙ্ঘন ও সংগঠনটির কাছ থেকে প্রশংসা কুড়ানোর জরুরী প্রচেষ্টা।”
তিনি অভিযোগ করেন, “জুন, ২০২৪ এর ঘটনাবলীর কারণে উল্লেখযোগ্যভাবে অবমূল্যায়িত প্রধানমন্ত্রী বর্তমানে সেপ্টেম্বর পরবর্তী মেয়াদ বাড়াতে মোহন ভাগবতের অনুগ্রহের উপর সম্পূর্ণভাবে নির্ভরশীল।”
সিপিআই(এম) মোদীর ভাষণের নিন্দা করে বলেছে, “তার ভাষণ দেশের শহীদদের প্রতি অবমাননা ও ঐতিহাসিক ঘটনাকে কলঙ্কিত করে। এটি একই সাথে সাম্প্রদায়িকও। প্রায়শই নিষিদ্ধ সংগঠনটিকে এগিয়ে রাখতে তিনি এমনটি করে থাকেন। যা লজ্জাজনক এবং অগ্রহণযোগ্য।”
এআইএমআইএম প্রধান আসাদুদ্দিন ওয়াইসিও প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করে বলেন, “এটি স্বাধীনতা সংগ্রামের অপমান। তিনি আরএসএস এবং এর আদর্শিক মিত্রদের মহিমান্বিত করছেন যারা ব্রিটিশ পদাতিক সৈনিক হিসেবে কাজ করেছিলো এবং গান্ধীকে ব্রিটিশদের চেয়েও বেশি ঘৃণা করতো।”
এছাড়াও বেশ কয়েকজন রাজনীতিবিদ এবং সমাজ বা অধিকার কর্মী ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে সরাসরি কোনও ভূমিকা পালন না করার জন্য এই উগ্র হিন্দুত্ববাদী সন্ত্রাসী সংগঠনটির সমালোচনা করেছেন। তারা অভিযোগ করেছেন যে, আরএসএস স্বাধীনতা আন্দোলনের সময়কার ‘আইন অমান্য আন্দোলন’, ‘ভারত ছাড়ো আন্দোলন’ এবং ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে অনুষ্ঠিত অন্যান্য বিক্ষোভগুলো থেকেও দূরে ছিলো।
সমাজ বা অধিকার কর্মীরা আরো অভিযোগ করেন, বিজেপির মূল সংগঠন হলো আরএসএস, যারা স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলো। তারা ভারতের সংবিধান এবং জাতীয় পতাকারও বিরোধিতা করেছিলো। এমনকি স্বাধীনতা পরবর্তী ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে তিরঙ্গা (ভারতের জাতীয় পতাকা) উত্তোলন করেনি।
এছাড়া যে সংগঠনকে তার কার্যকলাপের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছিলো এবং জাতীয়তাবিরোধী ঘোষণা করা হয়েছিলো স্বাধীনতা দিবসে এমন একটি সংগঠনের প্রশংসা করায় তারা নরেন্দ্র মোদীর তীব্র নিন্দাও জানিয়েছে।









