জুলাই জাতীয় সনদ সংবিধানের ওপর রাখলে ভবিষ্যতের জন্য একটি খারাপ নজির স্থাপন হবে বলে দাবি করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
তিনি বলেন, ‘এখানে বলা হয়েছে জুলাই সনদের সবকিছু সংবিধান এবং কোনো আইনি ভিন্নতা থাকলেও এই সনদের বিধান-প্রস্তাব-সুপারিশ প্রাধান্য পাবে। তার মানে হচ্ছে এটি সংবিধানের উপরে। কোনো সমঝোতার দলিল কি সুপ্রা কনস্টিটিউশনাল ইন্সট্রুমেন্টাল হতে পারে? এটা হতে পারে না। আমরা সংবিধানের মধ্যে আইনি বৈধতা এবং সাংবিধানিক প্রক্রিয়ায় কিভাবে এই সমঝোতা দলিলটাকে বাস্তবায়ন করতে পারি সেই চিন্তায় করতে হবে। এখন যদি বলা হয় এই দলিলের সমস্ত কিছু সংবিধানের উপরে প্রাধান্য পাবে, তাহলে এটা ভবিষ্যতের জন্য খারাপ নজির সৃষ্টি করবে। এটা করা ঠিক হবে না।’
আজ মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) গুলশানের নিজ বাসায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা জানান।
সালাহউদ্দিন বলেন, ‘বলা হয়েছে এই সনদের বিধি-বিধানের ব্যাখ্যা চূড়ান্ত মীমাংসার এখতিয়ার বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের উপর ন্যস্ত থাকবে। আপিল বিভাগের উপর কি এমন কোনো আইন ন্যস্ত করতে পারি?’
তিনি জানান, কোনো মামলার রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্ট ডিভিশন থেকে আপিল বিভাগে আপিল হয়। তাছাড়া সংবিধানিক কিছু বিষয়ে অনুচ্ছেদ ১০৩ অনুসারে আপিল বিভাগে যাবে। জুলাই সনদ তো সেলফ অডিয়েন্সও নয়, আইনও নয় এবং রায়ও নয়। এখানে ব্যাখ্যার জন্য আপিল বিভাগ কে পাঠাবে? কিসের ভিত্তিতে যাবে? সেই প্রশ্নগুলো আগে নির্ধারণ করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা একটা সমঝোতার দলিলে স্বাক্ষর করলাম, সেখানে ব্যাখ্যা দেয়ার জন্য আপিল বিভাগের কোনো এখতিয়ার আছে কিনা, এই এখতিয়ারটা কী—এটা খুঁজে বের করতে হবে।’
জুলাই সনদের বৈধতা নিয়ে আদালতে প্রশ্ন তোলা যাবে না, এ প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘কোনো আদালতে প্রশ্ন তোলা যাবে না, এই এখতিয়ার কি আমাদের সংবিধান কাউকে দিয়েছে? আমার মনে হয় এটা সঠিকভাবে উচ্চারিত হয়নি। এটা অন্য কোনোভাবে হয়তো লেখা যেত। আদালতে কেউ প্রশ্ন তুলতেই পারে। অনুচ্ছেদ ৩১ অনুসারে আইনের আশ্রয় নেওয়া যে কোনো নাগরিকের অধিকার। আদালতে প্রশ্ন তোলা যাবে না এ বিষয়টা এভাবে উল্লেখ করা ঠিক হবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদেরকে জুলাই জাতীয় সনদে স্বাক্ষর করতে হবে। জাতীয় ঐক্যমতের ভিত্তিতে গৃহীত সকল প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে হবে। সংস্কারের মাধ্যমে রাষ্ট্রটাকে একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। জাতির প্রত্যাশা, আমাদের অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করতে হবে। সুতরাং আমরা সবাই বসে এর একটি আইনগত বৈধতা ও সাংবিধানিক প্রক্রিয়া বের করতে পারব বলে বিশ্বাস করি।’









