আফগান আইন ভঙ্গের দায়ে আটক থাকা রেনল্ডস দম্পতিকে ব্রিটেনের কাছে হস্তান্তর করেছে আফগান ইমারাতে ইসলামিয়া সরকার।
শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) আদালতের শুনানির পর দেশটির কারাগার থেকে মুক্তি পান ব্রিটেনের এই বয়স্ক দম্পতি।
মুক্তির পর তাদেরকে দেশটিতে নিযুক্ত ব্রিটেনের বিশেষ প্রতিনিধি রিচার্ড লিন্ডসের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এতে মধ্যস্থতার ভূমিকা পালন করে উপসাগরীয় আরব রাষ্ট্র কাতার।
আফগান পররাষ্ট্র মুখপাত্র আব্দুল কাহহার বলখি এই প্রসঙ্গে বলেন, দীর্ঘদিন যাবত আফগানিস্তানে বসবাস করে আসা ব্রিটেনের রেনল্ডস দম্পতিকে আফগান আইন লঙ্ঘনের দায়ে গত ফেব্রুয়ারিতে গ্রেপ্তার করা হয়। আদালতের শুনানি শেষে তারা মুক্তি পেলে দেশে ফিরে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তাই কাতারের মধ্যস্থতায় তাদের ব্রিটেনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
যুক্তরাজ্যের কর্মকর্তারা এই ব্রিটিশ দম্পতির দ্রুত মুক্তিতে স্বস্তি প্রকাশ করেন এবং মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতারকে ধন্যবাদ জানান।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কায়ার স্টারমার বলেন,
আমি আফগানিস্তানে আটক হওয়া পিটার (৮০) এবং বারবারা রেনল্ডসের মুক্তিকে স্বাগত জানাচ্ছি। আমি জানি এই দীর্ঘ প্রতীক্ষিত সংবাদটি তাদের পরিবারের জন্য বিশাল স্বস্তি নিয়ে আসবে। এতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখায় আমি কাতারের প্রতিও শ্রদ্ধা জানাতে চাই।
শুক্রবার বিকেলে এক বিবৃতিতে কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায় যে, রেনল্ডস দম্পতি ইতিমধ্যে কাতারের রাজধানী দোহায় পৌঁছেছেন এবং লন্ডনের উদ্দেশ্যে রওনা হচ্ছেন।
এছাড়া ফলপ্রসূ সহযোগিতার জন্য আফগান ইমারাতে ইসলামিয়া সরকারের প্রতিও মধ্যস্থতাকারী দেশটি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে।
এর আগে গত জুলাইয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিশেষজ্ঞগণ ইমারাত সরকারের প্রতি এই দম্পতিকে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন। তাদের বয়স জনিত শারিরীক ও মানসিক অবস্থা বিবেচনায় সতর্ক করে বলেছিলেন যে, কারাগারে তারা অপূরণীয় ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন।
এছাড়া শুক্রবার দোহার উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার আগে ব্রিটিশ সম্প্রচারক স্কাই নিউজ এই দম্পতির একটি ছবি প্রকাশ করে, যেখানে তাদেরকে কাবুল বিমানবন্দরে যুক্তরাজ্যের বিশেষ প্রতিনিধি রিচার্ড লিন্ডসের সাথে হাস্যোজ্জ্বল অবস্থায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
আফগান ইমারাত সরকারের তথ্য অনুযায়ী, এই দম্পতি ১৯৭০ সালে কাবুলে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হোন। প্রায় দুই দশক যাবত দেশটির কেন্দ্রীয় প্রদেশ বামিয়ানে বসবাস ও শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলেন। এক পর্যায়ে আফগান নাগরিকত্ব গ্রহণ করে দেশটির নাগরিকও হয়ে উঠেন।
২০২১ সালে তালেবান যখন আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধার করে, তখন ব্রিটিশ কর্মকর্তারা তাদের দেশে ফিরে আসার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু তারা ব্রিটিশ কর্মকর্তাদের পরামর্শের বিপরীতে ইমারাতে ইসলামিয়া আফগানিস্তানেই থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
সূত্র: আল জাজিরা