১৯৮৬ সনে দক্ষিণ লেবাননে নিখোঁজ হয়ে যাওয়া ইসরাইলী বিমান বাহিনীর ক্যাপ্টেন ‘রন আরদের’ পরিণতির দিকে ইঙ্গিত করে বিদায়ী বার্তা হিসেবে সকল বন্দীর ছবি প্রকাশ করেছে ফিলিস্তিন স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন কাসসাম ব্রিগেড।
শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে একথা জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজ্জা সিটিতে ধ্বংসযজ্ঞ, দখলদারিত্ব ও গণহত্যা অভিযান অব্যাহত রাখায় ফেয়ারওয়েল বা বিদায়ী হিসেবে বর্তমানে আটক জীবিত-মৃত সকল ইসরাইলী বন্দীর ছবি প্রকাশ করেছে হামাসের সশস্ত্র শাখা কাসসাম ব্রিগেড।
ফেয়ারওয়েল বা বিদায়ী ছবিটিতে আটক জীবিত-মৃত ৪৮ ইসরাইলী বন্দীর পরিণতি ১৯৮৬ সনের নিখোঁজ ইসরাইলী ক্যাপ্টেন ‘রন আরদের’ ন্যায় হওয়ার প্রতি ইঙ্গিত দেওয়া হয়। যিনি দক্ষিণ লেবাননে সন্ত্রাসী হামলা চালাতে গিয়ে লেবানিজ যোদ্ধা কর্তৃক বিশেষ বোমা বিস্ফোরণ ঘটানোর ফলে বিমান সহ বিধ্বস্ত হয়েছিলেন এবং আমাল মুভমেন্টের হাতে ধরা পড়েছিলেন। মুভমেন্টের সদস্যরা তাকে কয়েকদিন আটক রাখার পর হিজবুল্লাহর হাতে তুলে দিয়েছিলো। তার ভাগ্যে পরবর্তীতে কী ঘটেছিলো, সেই সম্পর্কে আর কিছুই জানা যায় না।
ইসরাইল দাবী করেছিলো যে, ফ্যান্টম-৪ যুদ্ধবিমানের ক্যাপ্টেন রন আরদ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে মারা গিয়েছিলেন। কিন্তু আমাল মুভমেন্ট ও হিজবুল্লাহর হাতে থাকা প্রমাণ এর বিপরীত বার্তা দিয়েছিলো। ইসরাইল তাকে বাঁচানোর উদ্যোগ না নিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে মৃত ঘোষণা করেছিলো এবং অনিশ্চিত পরিণতির দিকে ঠেলে দিয়েছিলো। রন আরদের ভাগ্যে কি ঘটেছিলো, বিষয়টি তাই বিশ্বের কাছে আজও অজ্ঞাতই রয়ে গিয়েছে।
কাসসামের প্রকাশিত বন্দীদের ছবিটিতে এটিও লেখা ছিলো যে, নেতানিয়াহুর অস্বীকৃতি ও জামির (ইসরাইলী সেনাপ্রধান) এর প্রতি মাথানত করে গাজ্জা সিটিতে সামরিক অভিযান শুরু করায় একটি বিদায়ী ছবি।
এর দ্বারা সংগঠনটি এদিকেও ইঙ্গিত দেয় যে, বন্দী মুক্তি ও যুদ্ধবিরতির কোনো শর্তেই রাজি হচ্ছে না অবৈধ রাষ্ট্রটির পিশাচ প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। জনগণের তুমুল বিরোধিতা থাকা সত্ত্বেও বন্দীদের প্রতি ভ্রুক্ষেপ না করে তিনি যেকোনো মূল্যে গাজ্জা সিটিতে ধ্বংসযজ্ঞ, দখলদারিত্ব ও গণহত্যা চালিয়ে যেতে আগ্রহী। আর ইসরাইলী সেনাপ্রধান ইয়াল জামির মাথানত করে তারই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন শুরু করেছেন। নিজেরাই যেখানে অনিশ্চয়তায় সেখানে ইসরাইলী বন্দীদের পরিণতি কি হবে, তাই তা হামাস ও কাসসাম কারো জানা নেই। এজন্য বিদায়ী হিসেবে জীবিত-মৃত সকল বন্দীদের সর্বশেষ ছবি প্রকাশ করছে ফিলিস্তিন স্বাধীনতাকামী সংগঠনটি।
সংগঠনটি ইতিমধ্যেই জানিয়েছে যে, গাজ্জা সিটিতে ইসরাইলের বোমা হামলায় কয়েকজন বন্দী মারা গিয়েছে। ইসরাইল হামলা অব্যাহত রাখলে অন্যান্য বন্দীদেরও মৃত্যু ঘটবে। কারণ, গাজ্জা সিটি জুড়ে বন্দীদের রাখা হয়েছে।