পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশে আফগান শরণার্থীদের জন্য থাকা ১০টি শিবির সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে এখন পর্যন্ত প্রায় ৮৫ হাজার আফগান নাগরিককে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ।
এ নিয়ে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে আফগানিস্তানের টোলো নিউজ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোয়েটা শহরে অবৈধভাবে বসবাসরত আফগান নাগরিকদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। শুধু গতকালই সেখানে ৩,৮৮৮ জন শরণার্থীকে আটক করা হয়েছে।
জিও নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘কোয়েটায় আফগান শরণার্থীদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে এবং অবৈধভাবে থাকা হাজারো শরণার্থীকে আটক করা হয়েছে।’
আতিকুল্লাহ মনসুর নামে একজন শরণার্থীবলেন, ‘আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের সাম্প্রতিক উত্তেজনার পর থেকে অভিবাসীদের গ্রেফতার ও জোরপূর্বক ফেরত পাঠানো আগের তুলনায় অনেক বেড়ে গেছে।’
মোহাম্মদ রেজা সাজিশ নামে আরেক শরণার্থী বলেন, ‘প্রতিদিনই ফেরত পাঠানো হচ্ছে। আমরা এখন ঘরের বাইরে যেতে ভয় পাই।’
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহাম্দো আসিফ এবং খাইবার পাখতুনখোয়ার মুখ্যমন্ত্রী সোহাইল আফ্রিদি আবারও জানিয়েছেন, আফগান শরণার্থীদের সম্মানের সঙ্গে দেশে ফেরত পাঠানো হবে।
খাজা আসিফ বলেন, ‘যেভাবে আমরা তাদের সম্মানের সঙ্গে আতিথ্য দিয়েছি, সেভাবেই এখন তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে।’
মুখ্যমন্ত্রী সোহাইল আফ্রিদি বলেন, ‘সীমান্তে আগে যেসব অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণ হতো, তা আর হওয়া উচিত নয়। যারা শরণার্থীদের জন্য সমস্যা তৈরি করছে, তাদের থামাতে হবে এবং সীমান্তে আরও প্রস্থানপথ খোলা দরকার।’
অভিবাসী অধিকারকর্মী মোহাম্মদ খান তালিবি মুহমান্দজাই বলেন, ‘আফগান শরণার্থী ইস্যুতে রাজনৈতিক স্বার্থ জড়ানো উচিত নয়। পাকিস্তান সরকার যেভাবে নতুন সংকট তৈরি করছে এবং সীমান্তে জোরপূর্বক ফেরত পাঠাচ্ছে, তা বন্ধ হওয়া প্রয়োজন। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকেও তাদের দায়িত্ব পালন করতে হবে।’
এর আগে আফগানিস্তানের শরণার্থী ও প্রত্যাবাসন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, আফগান শরণার্থীদের জোরপূর্বক প্রত্যাবাসন ও বিষয়টিকে রাজনৈতিক রূপ দেওয়া আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকার নীতির পরিপন্থি।