রবিবার | ২৩ নভেম্বর | ২০২৫

ফ্যাসিস্ট হাসিনার দ্রুত মৃত্যুদণ্ড কার্যকর চায় কুমিল্লার ১১ শহীদ পরিবার

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত শেখ হাসিনার দ্রুত মৃত্যুদণ্ড কার্যকর চায় কুমিল্লার দেবীদ্বারের ১১ শহীদ পরিবার। তাকে দ্রুত দেশে ফিরিয়ে এনে রায় কার্যকরের দাবি জানিয়েছেন জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের পরিবার।

শহীদদের পরিবারের সদস্যরা বলেন, রায় ঘোষণার মধ্য দিয়ে ন্যায়বিচারের দরজা খুলেছে। তবে এ রায় দ্রুত কার্যকর হলে বাংলাদেশে দৃষ্টান্ত সৃষ্টি হবে। এর ফলে নতুন করে আর কোনো স্বৈরশাসক উত্থান হওয়ার সাহস পাবে না।

গত বছর ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলনে কুমিল্লার দেবীদ্বার পৌর সদরে আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন শহীদ আবদুর রাজ্জাক রুবেল। তিনি উপজেলার স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন এবং পৌর এলাকার বারেরা গ্রামের মরহুম রফিকুল ইসলামের ছেলে।

শহীদ আবদুর রাজ্জাক রুবেলের স্ত্রী হ্যাপী আক্তার বলেন, স্বৈরাচার হাসিনার ফাঁসির রায় কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত জুলাই শহীদ পরিবারের কেউ খুশি হতে পারছে না। হাসিনা যেখানেই লুকিয়ে থাকুক, তাকে দ্রুত দেশে এনে রায় কার্যকর করতে হবে। এছাড়া কুমিল্লার আদালত থেকে একের পর এক রুবেল ও সাব্বির হত্যা মামলার আসামিরা জামিন নিয়ে দেশ-বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি।

উপজেলার সূর্যপুর গ্রামের শহীদ সোহাগ মিয়া রাজধানীর গোপীবাগ এলাকায় মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে গত বছরের ২০ জুলাই নিহত হয়। তার মা নাছিমা বেগম বলেন, হাসিনার রায়ে আমরা খুশি, তবে রায় দ্রুত কার্যকর দেখতে চাই।

তিনি বলেন, আমার স্বামীর মৃত্যুর পর ছেলে সোহাগ সংসারের হাল ধরে কিন্তু হাসিনার পুলিশ আমার ছেলেকে গুলি করে মারল। হাসিনার রায় কার্যকর হলে আমার সন্তানের আত্মা শান্তি পাবে।

১৯ জুলাই রাজধানীর আবদুল্লাহপুর এলাকায় পুলিশের গুলিতে উপজেলার এলাহাবাদ গ্রামের সফিকুল ইসলাম সরকারের ছেলে ফয়সাল সরকারে মাথার খুলি উড়ে যায়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা গেলেও লাশ খুঁজে পায়নি স্বজনরা।

শহীদ ফয়সালের বাবা সফিকুল ইসলাম সরকার বলেন, হাসিনা আমার সন্তানকে শুধু হত্যা করেনি, তার লাশটিও গুম করেছে। কোথায় দাফন হয়েছে আজও আমরা জানতে পারিনি। হাসিনার ফাঁসি কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত আমরা শান্তি পাচ্ছি না।

নারায়ণগঞ্জের সাইবোর্ড এলাকায় পুলিশের গুলিতে নিহত দেবিদ্বার রাজামেহার গ্রামের দশ বছরের শহীদ হোসাইন মিয়ার বাবা মানিক মিয়া বলেন, হাসিনার পেটোয়া বাহিনীর হাত থেকে শিশুরাও নিরাপদ ছিল না। আমার একমাত্র ছেলে হোসাইনকে তারা বাঁচতে দিল না।

উপজেলার রসুলপুর গ্রামের শহীদ নাজমুল হাসান, বড়শালঘর গ্রামের শহীদ সাগর মিয়া, ইউছুফপুর ইউনিয়নের মহেষপুর গ্রামের শহীদ জহিরুল ইসলাম রাসেল, সুবিল ইউনিয়নের ওয়াহেদপুর গ্রামের শহীদ রবিন মিয়া, জাফরগঞ্জ ইউনিয়নের খয়রাবাদ গ্রামের শহীদ রায়হান রাব্বি, এলাহাবাদ গ্রামের শহীদ সাইফুল ইসলাম তন্ময় ও পৌর এলাকার ভিংলাবাড়ি গ্রামের শহীদ সাব্বিরের স্বজনরাও শেখ হাসিনার ফাঁসির রায়ে খুশি এবং দ্রুত রায় কার্যকর করার দাবি জানিয়েছেন।

spot_img

সর্বশেষ

spot_img

এই বিভাগের

spot_img