বৃহস্পতিবার | ২৬ জুন | ২০২৫

ট্রান্সজেন্ডার সংশ্লিষ্ট পাঠ্য বাদ ও বহিষ্কৃত শিক্ষক পুনর্বহালের দাবীতে চট্টগ্রামে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন

spot_imgspot_img

ট্রান্সজেন্ডার সংশ্লিষ্ট পাঠ্য বাদ ও বহিষ্কৃত শিক্ষক আসিফ মাহতাব উৎস ও ড. মুহাম্মদ সারওয়ার হোসাইনকে পুনর্বহালের দাবীতে মানববন্ধন করলো চট্টগ্রামের শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধনটি অনুষ্ঠিত হয়।

চট্টগ্রামের সর্বস্তরের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে অনুষ্ঠিত এই মানববন্ধনে জাতীয় পাঠ্যক্রম থেকে ট্রান্সজেন্ডার বিষয়ক পাঠ্য বাদ দেওয়ার দাবী জানানো হয়। একে বিশ্ব মানবতার জন্য হুমকি ও সমাজ ব্যবস্থা ধ্বংসের কারণ বলে উল্লেখ করা হয়।

কারণ দর্শানো ছাড়া ইন্ডিপেন্ডেন্ট ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আসিফ মাহতাব উৎস ও ড. মুহাম্মদ সারওয়ার হোসাইনকে বহিষ্কারের প্রতিবাদ জানানো হয়। তাদের স্বপদে পুনর্বহালের দাবী জানিয়ে বলা হয়, কোনো ধরণের কারণ দর্শানো ছাড়া কেনো স্যারদের অব্যাহতি দেওয়া হলো বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে এর জবাবদিহি করতে হবে। জাতির সামনে যৌক্তিক কারণ উল্লেখ পূর্বক লিখিত বক্তব্য দিতে হবে।

এছাড়া ট্রান্সজেন্ডার ও এলজিবিটিকিউর মতো সমাজ বিধ্বংসী মতবাদ যেনো সাংবিধানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত না হতে পারে এই দাবীতে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়।

যেসব প্রতিষ্ঠান দেশে ট্রান্সজেন্ডারবাদ ও সমকামিতার মতো সংবিধান ও মানবতা বিরোধী অপরাধ বাস্তবায়নে কাজ করছে সেসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অবিলম্বে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী জানানো হয়।

চট্টগ্রামের সর্বস্তরের সাধারণ শিক্ষার্থীদের এই মানববন্ধনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ছাত্র ও যুব বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা কামরুল ইসলাম কাসেমী।

ট্রান্সজেন্ডার ইস্যুতে মাওলানা কামরুল ইসলাম কাসেমী বলেন, ইসলামী মূল্যবোধ বিনষ্টে ও সমাজে অশ্লীলতা ছড়িয়ে দিতে সময়ে সময়ে এমন জঘন্য মতবাদ ও সমতার দাবী নিয়ে আমাদের সামনে হাজির হয় দেশীয় পাশ্চাত্য সমাজ। তাদের মূল লক্ষ্য হলো, আল্লাহ প্রদত্ত মানবজাতির ফিতরাত বা স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্যকে নষ্ট করা। সমাজ ব্যবস্থা ধ্বংস করা।

ট্রান্সজেন্ডার ও এলজিবিটিকিউ মতবাদ সংশ্লিষ্ট পাঠ্য বাদ ও একে সাংবিধানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হতে না দেওয়ার দাবীকে তিনি রাজনৈতিক কিংবা দলীয় নয় বরং মুসলিম-অমুসলিম সকল বাংলাদেশীর গণদাবী বলে উল্লেখ করেন। সংশ্লিষ্ট কর্মসূচি ও দাবীগুলোকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত না করতে সরকার ও প্রশাসনকে আহবান জানান।

এছাড়া চাকরিচ্যুত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের পুনর্বহাল সহ ছাত্রদের অন্যান্য দাবীর সাথেও একাত্মতা পোষণ করেন তিনি। দাবী আদায় না হলে বড় ধরণের কর্মসূচি দেওয়ার কথা জানান।

মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন, ছাত্র নেতা ডা. মাহমুদুল হাসান মাহি‚ কওমি ছাত্র ঐক্য পরিষদের সভাপতি মাওলানা জিয়াউর রহমান ফারুকী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেন শিক্ষার্থী ফারুক হাসান, বায়তুশ শরফের হয়ে মুহাম্মদ সা’দ, আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের হয়ে আনাস বিন আব্বাস, লালখান বাজার মাদরাসা খ্যাত জামিয়াতুল উলুম আল ইসলামিয়ার হয়ে ওবায়দুল্লাহ মারুফ, বিএন কলেজের হয়ে ইফতেখার হোসেন আবরার, সিটি কলেজের হয়ে ইমন মৃধা, হাটহাজারী মাদরাসা খ্যাত জামিয়া দারুল উলূম মুঈনুল ইসলামের হয়ে ওসামা বিন মাসুদ, মহসিন কলেজের হয়ে আবরারুল আজিম তায়িন, হাজেরা তাজু ডিগ্রি কলেজের হয়ে আব্দুল্লাহ নোমান ও চট্টগ্রাম কলেজের হয়ে আরাফাত হোসেন সহ বিভিন্ন মেডিকেল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও মাদরাসার শিক্ষার্থীরা।

মানববন্ধনে ছাত্র সমাজের পক্ষ থেকে ৪ দফা দাবী উপস্থাপনা করা হয়।
১. পাঠ্যপুস্তক হতে ট্রান্সজেন্ডার প্রমোটকারী শরিফ শরিফার গল্প অবিলম্বে বাদ দিতে হবে।
২. ব্র্যাক এবং আইইউবি কর্তৃপক্ষকে ট্রান্সজেন্ডারবাদ ও সমকামিতা নিয়ে স্পষ্ট বক্তব্য দিতে হবে। অন্যায়ভাবে বহিষ্কৃত শিক্ষকদেরকে পুনর্বহাল করতে হবে।
৩. যেসব প্রতিষ্ঠান এই দেশে ট্রান্সজেন্ডারবাদ এবং সমকামিতার মতো সংবিধান ও মানবতাবিরোধী অপরাধ বাস্তবায়নে কাজ করছে সেসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অবিলম্বে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে।
৪. সমকামী এবং ট্রান্সজেন্ডারদের রাষ্ট্রীয়ভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে।

সর্বশেষ

spot_img
spot_img
spot_img