রবিবার | ২৯ জুন | ২০২৫

হে সংস্কার তোমাকে পাওয়ার জন্য আর কতকাল আলাপ-আলোচনা করিবে : সালাহউদ্দিন আহমেদ

spot_imgspot_img

সবাইকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাব মেনে নিতে হবে, এমনটা হলে ঐকমত্য কীভাবে হবে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে আমরা এখন সংস্কারের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। সংস্কারের এখন এমন অবস্থা হয়েছে আমি মাননীয় সংস্কৃতি উপদেষ্টাকে বলছিলাম একটা কবিতাই লিখে ফেলেন, ‘হে সংস্কার তোমাকে পাওয়ার জন্য আর কতকাল আলাপ-আলোচনা করিবে, খানাপিনা খাইবে সংস্কার করার জন্য।’

শনিবার (২৮ জুন) সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে বাংলাদেশ রিসার্চ অ্যানালাইসিস নেটওয়ার্কের (ব্রেইন) আয়োজনে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীর উত্তম স্মারক প্রকাশনা উপলক্ষ্যে এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।

অনুষ্ঠানের শুরুতে জিয়াউর রহমানের ওপরে একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। পরে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ওপর সংকলিত স্মারক গ্রন্থ এবং জিয়াকে নিয়ে তৈরি ইন্টারনেট আর্কাইভ ও স্মারক গ্রন্থের উদ্বোধন করেন সালাহউদ্দিন আহমেদ।

বিএনপির এ নেতা বলেন, জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের নিয়ত কী? সবাইকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাব মেনে নিতে হবে, এই যদি নিয়ত হয় তাহলে কী ঐকমত্য হবে? আমরা আলোচনা করছি, কাছাকাছি আসছি জাতির জন্য যেটা মঙ্গল হবে সেটা আমরা ধারণ করব। এভাবেই আমরা এ সংস্কারের মধ্য দিয়ে এগিয়ে যাব এবং এ সংস্কার তো আজকেই শেষ হবে না। সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া।

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, এই সংস্কার এমনভাবে তারা (জাতীয় ঐকমত্য কমিশন) করতে চাইছেন যে, সংবিধানে আমরা এমন সংস্কার ঢুকাব কেউ যেন আর এই সংস্কার বিলুপ্ত না করতে পারে। সেটা তো বাইবেল নয়, ধর্মগ্রন্থ নয়।

তিনি আরও বলেন, আমরা এমন সংস্কার করব যেই সংস্কার ১০/২০ বছর পরে আপনাদের হাত ধরে, নতুন প্রজন্মের হাত ধরে নতুন চাহিদার ভিত্তিতে আবার সেটা পরিবর্তন হতে হবে, হবে… সেটাই হচ্ছে সংস্কার।

সংবিধান কোনো ধর্মগ্রন্থ নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সংবিধানের ৭… আমি বললে তো এখন ধারার কথা বলতে চাই না… সেভেন এএমডি বিলুপ্ত করেছিল… যে সংবিধানের প্রিয়াম্বেল, প্রথম ভাগ, দ্বিতীয় ভাগ, তৃতীয় ভাগ শুধু ১৪১ ছাড়া এবং তফসিলের পঞ্চম, ষষ্ঠ, সপ্তম এগুলো পরিবর্তন করা যাবে না… যেন এটা একটা ধর্মগ্রন্থ।

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, কিন্তু ভবিষ্যৎ পার্লামেন্টারিয়ানদের অধিকার… বর্তমান পার্লামেন্ট বা বিদ্যমান পার্লামেন্ট কখনো বন্ধ করতে পারে সেটা পার্লামেন্টের আইন… সারা পৃথিবীব্যাপী। আওয়ামী লীগ তো নিজেই একটা আইন। সুতরাং তারা যাহাই বলিবে তাহাই সত্য, ওটা ওইয়ের মতো যে, তুমি যা লিখিবে তাহাই সত্য… অতএব তোমার জন্ম হওয়ার আগে… আমি এ ধরনের কথা বলব না, বললে সমালোচনা হবে। আমি বলেছিলাম যে, তুমি লিখে যাও, তুমি যাহা লিখিবে তাহাই সত্য। এটাই ছিল আওয়ামী লীগের থিওরি।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, এ থিওরি টিকে না, কখনোই টিকে না। এখন আমরা সংবিধান সংস্কারের কথা বলছি, বিভিন্ন আইন সংস্কারের কথা বলছি, আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ। এ সংস্কারের মূল প্রবক্তা তো বিএনপি। আমরা এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার দেড় বছর আগে সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছি। আমাদের ৩১ দফা বাংলাদেশের মানুষের কাছে, রাজনৈতিক মহলে একটা রাজনৈতিক মহাকাব্যে পরিণত হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এখন এই সংস্কার আমরা যেন এভাবেই করি, আমরা প্রত্যেকেই যেন সংস্কার বাস্তবায়ন করে আরও এক জিন্দেগি বাঁচতে পারি সেই সংস্কার চাই। আমরা ৩১ দফাতে এমন সব উইন্ডোজ ওপেন করে রেখেছি যেখানে জাতির জন্য, জনগণের জন্য যা কিছুই কল্যাণকর হবে সেই সমস্ত সংস্কার আমরা ধারণ করব। আমরা রিজিট নই। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের হাত ধরে প্রথম রাষ্ট্রীয় সংস্কার হয়েছে।

এসময় প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সৎ কর্মময় জীবনের কথা তুলে ধরে তার আদর্শ অনুসরণ করার জন্য নতুন প্রজন্মের প্রতি আহ্বান জানান সালাহউদ্দিন আহমেদ।

সর্বশেষ

spot_img
spot_img
spot_img