বায়তুল মোকাররম এলাকায় ধরা পড়া এক মোবাইল চোরকে বাউল সাজিয়ে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানোর অভিযোগ করেছে সংগঠনটি। এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে হেফাজত।
হেফাজতের বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে পল্টন এলাকায় এক পকেটমারকে হাতেনাতে ধরে উত্তেজিত জনতা গণধোলাই দেয়। হেফাজত এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বাস্তবে ঘটনাটি মোবাইল চোর ধরা পড়ার ঘটনা, বাউল সন্দেহে কাউকে মারধর করার বিষয় নয়।
দৈনিক ইত্তেফাক তাদের ফেসবুক পেজে একটি অস্পষ্ট ভিডিও দিয়ে শিরোনাম করে, “বাউল সন্দেহে এক যুবককে হেফাজতের নেতাকর্মীদের গণপিটুনি”। পরে শিরোনাম পরিবর্তন করলেও প্রাথমিকভাবে এই পোস্টকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হেফাজতের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ছড়িয়ে পড়ে।
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলেন, বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে পল্টনে একজন পকেটমারকে জনতা হাতেনাতে ধরে উত্তম মধ্যম দিয়েছে বলে খোঁজখবর নিয়ে তারা জেনেছেন। অথচ ইত্তেফাক যাচাই ছাড়া একটি অস্পষ্ট ভিডিও দিয়ে ঘটনাটিকে বাউল সন্দেহে এক যুবককে হেফাজত নেতাকর্মীদের পিটুনি হিসেবে উপস্থাপন করেছে।
বিবৃতিতে তিনি উল্লেখ করেন, একই ভিডিওতে স্পষ্ট দেখা যায়, হেফাজতের দুজন হলুদ ভেস্ট পরা নিরাপত্তাকর্মী এগিয়ে গিয়ে ওই মোবাইল চোরকে বরং উত্তেজিত জনতার পিটুনি থেকে রক্ষা করার চেষ্টা করছেন। তিনি জানান, ঘটনা আরও ভালোভাবে যাচাই করার সুযোগ থাকা সত্ত্বেও ইত্তেফাকের প্রতিবেদক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে হেফাজতের নামে মিথ্যাচার করেছেন।
তিনি আরও বলেন, ইত্তেফাকের এই অপপ্রচার ও মিথ্যাচারের কারণে জনমনে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে, অথচ এ ঘটনার সঙ্গে হেফাজতের কোনো সংগঠনিক সম্পর্ক নেই। তাছাড়া আর কোনো বিশ্বাসযোগ্য গণমাধ্যমেও এ বিষয়ে সংবাদ তাদের নজরে আসেনি।
বিবৃতিতে মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেন, অপপ্রচারের দায়ে ইত্তেফাককে অবিলম্বে ক্ষমা চেয়ে সংশোধনী দিতে হবে। তিনি সতর্ক করে বলেন, ইত্তেফাক যদি প্রকাশ্যে ক্ষমা না চায় এবং সংবাদটি প্রত্যাহার না করে, তাহলে ওলামায়ে কেরামের সঙ্গে পরামর্শক্রমে মানহানি বিষয়ক আইনি পদক্ষেপ নিতে হেফাজত বাধ্য হবে।
তিনি আরও বলেন, মোবাইল চোর বা পকেটমার ধরা পড়লে উপস্থিত জনতার হাতে উত্তম মধ্যমের শিকার হওয়া আমাদের দেশে একটি পরিচিত সামাজিক বাস্তবতা, কিন্তু এটাকে বাউল ইস্যু ও হেফাজত বিরোধী প্রচারণার সঙ্গে জুড়ে দেওয়া স্পষ্ট বিদ্বেষের পরিচয়।
বিবৃতিতে আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেন, ভণ্ড বাউল আবুল সরকার আল্লাহ এবং দ্বীন ইসলামের বিরুদ্ধে কটূক্তি করলেও হেফাজত কখনোই দেশে সাংঘর্ষিক পরিস্থিতি চায়নি। তিনি আবারও স্পষ্ট করে বলেন, বাউল সন্দেহে কিংবা বাউল পরিচয়ে কারও ওপর হামলা করে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
তিনি সর্বস্তরের ধর্মপ্রাণ জনতার প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, আবুল সরকারের দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবিতে সবাই যেন ঐক্যবদ্ধ থাকে এবং আইন আদালতের ওপর আস্থা রাখে। আইন আদালত যদি ন্যায্য বিচার দিতে ব্যর্থ হয়, তাহলে ওলামায়ে কেরামের সম্মিলিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।









