হোটেলে পরিশোধিত বিল ও টাকা ফেরতের দাবীর ব্যাপারে সত্যের উপর আছেন বুঝাতে ঈমানী শ্রেষ্ঠত্ব তুলে ধরায় এক মুসলিম গ্রাহককে গ্রেফতার করেছে ভারতের উগ্র হিন্দুত্ববাদী পুলিশ প্রশাসন।
শনিবার (২৮ জুন) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মুসলিম মিরর।
প্রতিবেদনে বলা হয়, হায়দারাবাদের নারায়ণগুড়ার এক স্থানীয় খাবারের হোটেলে বিল পরিশোধের পরিমাণ ও টাকা ফেরত পাওয়ার দাবীর ব্যাপারে সত্যের উপর আছেন বুঝাতে ঈমানী শ্রেষ্ঠত্ব তুলে ধরায় এক মুসলিম গ্রাহককে গ্রেফতার করেছে উগ্র হিন্দুত্ববাদী পুলিশ প্রশাসন।
নারায়ণগুড়ার স্টেশন হাউস অফিসার (এসএইচও) ইউ চন্দ্র শেখর সংবাদমাধ্যমকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ওই ব্যক্তিকে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (বিএনএস) এর ধারা ৩০২ (ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করা), ১৯৬ (সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করা) এবং ৩৫১ (অপরাধমূলক ভয় দেখানো) এর অধীনে দায়েরকৃত মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে ১৪ দিনের বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠানো হয়েছে। সম্ভাব্য সাম্প্রদায়িক অস্থিরতা এড়াতে পুলিশ ওই ব্যক্তির পরিচয় গোপন রেখেছে।
এই ঘটনার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। যা উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। ভিডিও ফুটেজ ও প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনায় উঠে আসে যে, গত শুক্রবার, ২৭ জুন রাতে নারায়ণগুড়ার একটি হোটেলে পরিশোধিত বিলের পরিমাণ ও টাকা ফেরত পাওয়ার ব্যাপারে হোটেল কর্তৃপক্ষ ও এক মুসলিম গ্রাহকের মাঝে দ্বন্দ্ব লেগে যায়। মুসলিম গ্রাহকটি ৪৫০ টাকা পরিশোধের পর ১৪০ টাকা ফেরত পাবেন বলে দাবী করলে দ্বন্দ্বের সূত্রপাত ঘটে।
এসময় তিনি দোকান মালিকের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে আশপাশের লোকদের বলতে থাকেন, আমি ৪৫০ টাকা দিয়েছি এবং ১৪০ টাকা ফেরত পাবো। কিন্তু তারা এব্যাপারে আমার সাথে রাগারাগি করছে।
তিনি নিজ দাবীর ব্যাপারে সত্য ও হোটেলের মালিক পক্ষ মিথ্যার উপর আছেন বুঝাতে গিয়ে বলেন, আমি একজন মুসলিম। আমি সর্বদা আমার বিশ্বাসে অবিচল থাকি। কিন্তু এরা তো পাথরের পূজা করে।
এরূপ বলায় তাৎক্ষণিকভাবে হোটেলে থাকা হিন্দু লোকজন ক্ষেপে যায়। ওই মুসলিম গ্রাহকের দিকে তেড়ে আসে। তাকে ধাক্কা দিয়ে বসে। এতে করে উত্তেজনা আরো বেড়ে যায়। পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দেয়। এক পর্যায়ে তাকে গ্রেফতার করে।
গোশামহলের উগ্র হিন্দুত্ববাদী বিজেপি বিধায়ক টি রাজা সিং এই ঘটনার ভিডিও অনলাইনে শেয়ার করে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য পুলিশের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, যারা হিন্দু দেবতাদের অপমান করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ ও আইনের আওতায় আনা উচিত, যাতে অন্যরা নিরুৎসাহিত হয়।