সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ইন্তেকাল করেছেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিঊন। মঙ্গলবার ভোরে ৬টায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি তিনি ইন্তেকাল করেন।
দেশের রাজনীতিতে গণতন্ত্র, জাতীয় মর্যাদা ও অধিকার রক্ষার সংগ্রামে আপসহীন অবস্থানের জন্য পরিচিত এই নেত্রীর বিদায়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন। গত তেইশ নভেম্বর তাঁকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
দীর্ঘ সময় প্রবাসে থাকার পর পঁচিশ ডিসেম্বর দেশে ফিরে সেদিনই অসুস্থ মাকে দেখতে হাসপাতালে যান তাঁর বড় ছেলে তারেক রহমান। এরপর নিয়মিত মায়ের খোঁজ নিতে হাসপাতালে যাতায়াত করেন তিনি। ইন্তেকালের আগে রাতের দিকে পরিবারের সদস্যরা হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন।
বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী। তাঁর জন্ম পনেরো আগস্ট, দিনাজপুরে। জন্মনাম খালেদা খানম পুতুল। পিতার নাম ইস্কান্দর মজুমদার এবং মাতার নাম তৈয়বা মজুমদার। শৈশব ও শিক্ষাজীবনের বড় অংশ দিনাজপুরেই কাটে।
তিনি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীরউত্তমের সহধর্মিণী। জিয়াউর রহমানের শাহাদাতের পর জাতীয়তাবাদী রাজনীতির কঠিন সময়ে তিনি জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সংগঠিত হন। তিনি ১৯৮১ সালে রাজনীতিতে সক্রিয় হন এবং ১৯৮৪ সালে বিএনপির চেয়ারপারসন নির্বাচিত হন। সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন, বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিক বিকাশ, ভোটাধিকারের প্রশ্নে দৃঢ় অবস্থান এবং জাতীয় সার্বভৌমত্ব রক্ষার রাজনৈতিক ধারায় তাঁর ভূমিকা ছিল উল্লেখযোগ্য।
বেগম খালেদা জিয়া মোট তিনবার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তিনি ১৯৯১ থেকে উনিশশ ১৯৯৬ পর্যন্ত, ১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে স্বল্প মেয়াদে এবং ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে তিনি বহু সংকট মোকাবিলা করেছেন, দলকে ঐক্যবদ্ধ রেখেছেন এবং নির্বাচনী রাজনীতিতে বিরোধী ধারার নেতৃত্বে ছিলেন।
তাঁর দুই ছেলে। বড় ছেলে তারেক রহমান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। কনিষ্ঠ ছেলে আরাফাত রহমান কোকো আগেই ইন্তেকাল করেছেন। পরিবারের সদস্যদের মধ্যে আরও রয়েছেন নাতনি জাইমা রহমান ও নাতনি জাহিয়া রহমানসহ স্বজনরা।











