চলমান করোনা মহামারিতে বিশ্বজুড়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে। তবে আগের দিনের তুলনায় কিছুটা কমেছে নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৯০০-র বেশি মানুষ। একই সময়ে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে প্রায় সাড়ে ৭ লাখ মানুষ।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে জাপানে। অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রাণহানির তালিকায় এরপরই রয়েছে জাপান, ব্রাজিল, ইতালি, চিলি ও দক্ষিণ কোরিয়া। এতে বিশ্বব্যাপী করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৫৯ কোটি ৯৪ লাখের ঘর। অন্যদিকে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৬৪ লাখ ৬৮ হাজার।
শনিবার (২০ আগস্ট) সকালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারস থেকে এই তথ্য পাওয়া যায়।
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন এক হাজার ৯০৩ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে দেড়শো জন। এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৬৪ লাখ ৬৮ হাজার ৬৯৭ জনে।
একই সময়ের মধ্যে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৭ লাখ ৩৭ হাজার ১৫৮ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা কমেছে প্রায় দুইশো। এতে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত ভাইরাসে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৯ কোটি ৯৪ লাখ ৯৬ হাজার ২২৭ জনে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে করোনায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে জাপানে। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখ ৬১ হাজার ২৫২ জন এবং মারা গেছেন ২৭৯ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে পূর্ব এশিয়ার এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৬৪ লাখ ২৩ হাজার ৫৩ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ৩৬ হাজার ২৩৪ জন মারা গেছেন।
উত্তর বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া নিম্নচাপটি আরও শক্তি সঞ্চয় করে গভীর নিম্নচাপে রূপ নিয়েছে। এর প্রভাবে উত্তাল রয়েছে সাগর। আশঙ্কা করা হচ্ছে ঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের। যে কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরসমূহকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
শনিবার (২০ আগস্ট) বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর এক পূর্বাভাসে এ তথ্য জানিয়েছে।
পূর্বাভাসে বলা হয়, উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উত্তরপূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি পশ্চিমবঙ্গ-উত্তর উড়িষ্যা উপকূল অতিক্রম করেছে। গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৮ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের সর্ব্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার, যা দমকা/ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর প্রভাবে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ঘণ্টায় ৪০-৫০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ী দমকা/ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। তাই চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরসমূহকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
গভীর নিম্নচাপ ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল দুই থেকে চার ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে। তাই উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
আওয়ামী লীগ কোনও বিদেশি শক্তির শক্তিতে বলীয়ান নয় উল্লেখ করে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, আমরা বাংলাদেশের জনগণের শক্তিতে বলীয়ান। বিদেশের সব রাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক। ভারত আমাদের অকৃত্রিম বন্ধু। তাদের সঙ্গেও আমাদের সুসম্পর্ক আছে।
শুক্রবার (১৯ আগস্ট) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে “বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড; পঁচাত্তর পরবর্তী বাংলাদেশের রাজনীতি” শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী।
চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ এ আলোচনা সভার আয়োজন করেছে।
হাছান মাহমুদ বলেন, আমরা কারবালার প্রান্তরের মর্মান্তিক কাহিনি জানি। কারবালার প্রান্তরে ইমাম হোসাইনকে হত্যা করা হয়েছিল। কিন্তু কারবালার প্রান্তরে নারী ও শিশুদের হত্যা করা হয়নি, তাদের সবাইকে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। অথচ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নারী ও শিশুদের হত্যা করা হয়েছে। ১০ বছরের শিশু শেখ রাসেল, চার বছরের সুকান্ত বাবু, ১১ বছরের বেবি সেরনিয়াবাতকে হত্যা করা হয়েছে। অন্তঃসত্ত্বা বেগম আরজু মনিকে হত্যা করা হয়েছে। সেদিন প্রকৃতপক্ষে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘটিত হয়েছিল। ইতিহাসের পাতায় জিয়াউর রহমান একজন খুনি, বিশ্বাসঘাতক এবং সিরিয়াল কিলার হিসেবে স্থান পাবে। কারণ, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের খবর সকালবেলা যখন তার কাছে পৌঁছানো হয়, তখন তিনি বলেন, ‘সো হোয়াট ভাইস প্রেসিডেন্ট ইজ দেয়ার।’ একজন সেনাপতি নিজের জীবনকে বিপন্ন করে হলেও রাষ্ট্র এবং রাষ্ট্রপতিকে রক্ষা করার শপথ নেন। তখন তার দায়িত্ব ছিল ছুটে গিয়ে রাষ্ট্রপতিকে রক্ষা করা, তা করেননি তিনি।
তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের অন্যতম কুশীলব। শুধু তাই নয়, নিজের ক্ষমতাকে নিষ্কণ্টক করার জন্য হাজার হাজার সেনাবাহিনী অফিসারকে হত্যা করেছেন। কাউকে সামারি ট্রায়ালের মাধ্যমে, অনেককে ট্রায়াল ছাড়া। অনেক সেনাবাহিনীর অফিসারকে ঘুম থেকে তুলে বলা হয়েছে চলুন। কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন জিজ্ঞেস করলে বলা হতো, আপনাকে ফাঁসি দেওয়া হবে। কিন্তু কোনও বিচার হলো না, কেন ফাঁসি দেওয়া হবে এমন প্রশ্নের কোনও উত্তর মেলেনি আজও।
তিনি আরও বলেন, অনেকে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের পটভূমি রচনার সঙ্গে যুক্ত ছিল। বাসন্তি একটা পাগল মেয়ে, তার গায়ে জাল পরিয়ে সেই ছবি ছাপিয়ে মানুষ কাপড় পরতে পারছে না—এই সংবাদ পরিবেশন করা হয়। অথচ জালের দামের চেয়ে একটা শাড়ির দাম কম। এখনও ২০০ টাকায় শাড়ি পাওয়া যায়, এক হাজারের কমে জাল পাওয়া যায় না।
পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে পাঁচটি মাছধরা ট্রলার ডুবে গেছে। ঝড়ের কবলে পড়ে পড়ে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় অন্তত ১৬ জন জেলে নিখোঁজ রয়েছেন। এখনও তাদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি। এদিকে, সাগর উত্তাল থাকায় নিখোঁজদের উদ্ধারে নামতে পারছে না কোস্টগার্ড।
মহিপুর মৎস আড়ত মালিক সমিতির সভাপতি ও মহিপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ফজলু গাজী এসব তথ্য জানিয়েছেন।
ফজলু গাজী বলেন, শুক্রবার সকালে ঝড়ের কবলে পড়ে দুটি ও বিকেলে আরও তিনটি মাছধরা ট্রলার পায়রা বন্দরের শেষ বয়া থেকে বেশ কয়েক কিলোমিটার দূরে ডুবে গেছে।
ডুবে যাওয়া ট্রলারে ১৬ জন জেলে ছিলেন বলে জানান তিনি। তাঁরা সবাই নিখোঁজ রয়েছেন।
কোস্টাগার্ডের নিজামপুর স্টেশন কমান্ডার সেলিম মণ্ডল বলেন, আমরা ১৬ জন জেলে নিখোঁজের তথ্য শুনেছি। সাগরের আন্ধারমানিক পয়েন্টে আছি। সাগর উত্তাল থাকায় উদ্ধার অভিযানে নামতে পারছি না।
বিএনপি বিদেশিদের দিয়ে সরকার উৎখাত করার স্বপ্ন দেখছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ এমপি।
তিনি বলেছেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানের পরাজয় হলেও বাংলাদেশে তাদের এজেন্টরা এখনো বেঁচে আছে। তারা নানা মিথ্যাচার করে, অভিযোগ করে বিদেশিদের দিয়ে সরকার উৎখাত করার স্বপ্ন দেখছে।
আজ শুক্রবার (১৯ আগস্ট) বিকাল ৪টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই ফ্লোরে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় : বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবার’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। শোকসভার আয়োজন করে ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন।
হানিফ বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার স্বপ্ন, আদর্শকে হত্যা করা হয়েছে। রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের জন্য তাকে হত্যা করা হয়নি। একাত্তরের পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে পাকিস্তান ও তাদের দোসর পশ্চিমা মহাশক্তিধর রাষ্ট্র এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছিল। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে ক্ষান্ত হয়নি। স্বাধীনতার পক্ষের শক্তিকে হত্যা করতে চায়। বঙ্গবন্ধুর পরিবারের প্রতি এখনো তাদের বিদ্বেষ আছে। তাই তারা এখনো ষড়যন্ত্র করছে।
বাংলাদেশে রাজনীতিতে দুটি ধারা সৃষ্টি হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, একটি হলো বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি। আরেকটি হলো বিএনপি-জামায়াতের নেতৃত্বে স্বাধীনতাবিরোধী প্লাটফর্ম। এই ধারা পাকিস্তানের নির্দেশে চলে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু এবং বাংলাদেশ এক ও অভিন্ন। বঙ্গবন্ধুর ইতিহাস বলতে গেলে বাংলাদেশ আসে আর বাংলাদেশের ইতিস বলতে গেলে বঙ্গবন্ধুর জীবনী চলে আসে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা কি কোনো গোলটেবিল বৈঠকে এসেছে? কোনো মেজর হুইসেলে এসেছে? জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা এসেছে।
নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান বলেছেন, যারা রাস্তা দখলের হুমকি দেয় তাদের বলতে চাই রাজপথ শেখ হাসিনার দখলেই থাকবে। আমাদের শরীরের রক্ত টগবগ করে। তাদের দায়িত্ব শেষ। তারা যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করে দিয়েছে। এখন যদি বলে একাত্তরের হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেকবার আপনারা কী আঙুল চুষবেন। আমরা কী নারায়ণগঞ্জে বসে দেখব শুধু। আবারও বলব। গোলাম আজমকে বলেছি, পঙ্গু হয়েছি। আমাকে মারার চেষ্টা হচ্ছে। ষড়যন্ত্র ভেতরে বাইরে থেকে সবদিক থেকেই হচ্ছে।
শুক্রবার (১৯ আগস্ট) বিকেলে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার ডিআইটি মাঠে শোক দিবসের জনসভায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন শামীম ওসমান।
শামীম ওসমান বলেন, এই সংকটে তারা আঘাত করবে। ক্ষমতায় আসা তাদের মূল টার্গেট না। বাংলাদেশকে তারা ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়। ওই যে চতুর্দিক কথাটা, এর মানে ঘরে বাইরে সব জায়গায় আছে। আজ যদি শেখ হাসিনার কিছু হয়। শেখ হাসিনা শুধু আওয়ামী লীগের সম্পদ না, তিনি আগামী দিনের বাচ্চাদের ভবিষ্যত। তাকে আঘাত করলে এ দেশ এমন জায়গায় যাবে যেখান থেকে আমরা আদৌ উঠে আসতে পারব কীনা জানি না।
তিনি বলেন, রাস্তায় স্লোগান হয়। এমন বাজে ভাষা। এরা কোন মায়ের পেটে জন্ম নিয়েছে জানি না। আমরাও তো খালেদা জিয়ার সমালোচনা করি। তারা এই মহিলাকে বাজে ভাষায় গালিগালাজ করছে। ঢাকায় তারা চ্যালেঞ্জ করছে রাজপথ দখলে নিবে। এ নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগের জন্ম। আমার নেত্রীকে গালি দিবা আমরা কী চুপ করে বসে থাকতে পারি। আমাদের শক্তির উৎস হল জনগণ। আমরা জনগণকে নিয়ে চলতে চাই।
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী বলেছেন, আমরা আজ গণমানুষের অধিকার আদায়ে রাজপথে এসেছি। মানুষের দুর্ভোগ ও দুর্দশার বাস্তবতা স্বীকার না করে ‘বেহেশতে আছি’ বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য তামাশা ছাড়া আর কিছু নয়।
তিনি বলেন, দেশের বর্তমান সংকট ও সমস্যাকে হালকা করে দেখার কোন সুযোগ নেই। সরকারকে জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। অসহনীয় যানজট কমাতে হবে। বিদ্যুৎ পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক করতে হবে। চা-শ্রমিকদের ন্যায়সঙ্গত দাবী মেনে নিতে হবে। অতীতের মত প্রহসনের নির্বাচন করার চিন্তা বাদ দিয়ে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের জনদাবী মেনে নিতে হবে।
আজ (১৯ আগস্ট) শুক্রবার বাদ জুমা বায়তুল মোকাররম উত্তর গেইটে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল পূর্ব সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, অব্যাহত লোডশেডিংয়ের প্রতিবাদে এবং কারাবন্দী আলেমদের মুক্তির দাবীতে এই বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন দলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মাওলানা ওবায়দুল্লাহ ফারুক।
সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন, দলের সহ-সভাপতি মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী, যুগ্মমহাসচিব মাওলানা মতিউর রহমান গাজিপুরী, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতী নাসীরুদ্দীন খান, প্রচার সম্পাদক মাওলানা জয়নুল আবেদীন, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা ফেরদাউসুর রহমান, যুব বিষয়ক সম্পাদক মুফতী বশীরুল হাসান খাদিমানী, পাঠাগার সম্পাদক মাওলানা হেদায়েতুল ইসলাম প্রমূখ।
উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস কাসেমী, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা মাহবুবুল আলম, ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশের সভাপতি মাওলানা ইখলাসুর রহমান রিয়াদ, সাব্বির আহমদ, রিদওয়ান মাজহারী, কাউসার আহমদ, সাদ বিন জাকির, নূর হোসাইন সবুজ ও ইয়াকুব কামাল প্রৃমূখ।
সমাবেশ শেষে জমিয়তের একটি মিছিল বায়তুল মোকাররম উত্তর গেইট থেকে নাইটিঙ্গেল মোড় পর্যন্ত গিয়ে মুনাজাতের মাধ্যমে শেষ হয়।
‘ভারতের কাছে আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখার অনুরোধ করেছি’, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না।
তিনি বলেছেন, তার এই বক্তব্য অসাংবিধানিক এবং রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল। এই সরকার দেশের গণতন্ত্রকে হত্যার সাথে সাথে বহির্বিশ্বে দেশের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করেছে।
আজ শুক্রবার (১৯ আগস্ট) এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন তিনি।
মান্না বলেন, কিছুদিন আগে অবৈধ সরকারের এই অথর্ব পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমেরিকায় গিয়ে অনুরোধ করেছে তারা যেন বিএনপিকে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ব্যবস্থা করে। আর এখন প্রকাশ্যে জানাল যে হাসিনা সরকারকে ক্ষমতায় রাখতে ভারতের কাছে অনুরোধ করেছে। তার মানে কি এই সরকারের কোনো বন্ধু নেই, তারা দেশকে বিশ্ব রাজনীতিতে বন্ধুহীন রাষ্ট্রে পরিণত করেছে? একটা বিষয় স্পষ্ট যে সরকারের পায়ের তলায় মাটি নেই। ক্ষমতায় টিকে থাকতে তারা বিদেশি শক্তির হস্তক্ষেপের জন্য অনুরোধ করছে। এভাবে যদি তারা কেউ আমেরিকা, কেউ চায়না, কেউ ভারত কিংবা রাশিয়ার শরণাপন্ন হতে থাকে, তাহলে দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব নিশ্চিতভাবেই হুমকির মুখে পড়বে।
গণতন্ত্র মঞ্চের এই শীর্ষ নেতা বলেন, স্বৈরাচার সরকার ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে অন্য দেশের সাথে দেন-দরবার করলেও জনগণের কাছে আসে না। তারা যে জনগণের রায়ের তোয়াক্কা করে না, এই বক্তব্যে আবারও তা স্পষ্ট করল। সাহস থাকলে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ক্ষমতায় থাকতে জনগণের সামনে আসেন। কারো হাতে পায়ে ধরে আর টিকতে পারবেন না। কোনো দেশেই আপনাদের ঠাঁই হবে না।
ডাকসুর সাবেক এই ভিপি বলেন, এ দেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। আওয়ামী লীগ সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়িয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায়। এই দেশে সংখ্যালঘু বলে কিছু নেই। আমাদের সবার পরিচয় এক। আমরা বাংলাদেশি। মুসলিম, হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ, গারো, সাওতাল, চাকমা, মারমাসহ সকল গোত্র, ধর্ম, বর্ণের মানুষ মিলেই আমাদের বাংলাদেশ।
সরকারকে হুঁশিয়ার করে মান্না বলেন, কোনো উসকানি দিয়ে এই সম্প্রীতি বিনষ্ট করার চেষ্টা করবেন না। ধর্ম, বর্ণ, গোত্র নির্বিশেষে দেশের সকল জনগণ ঐক্যবদ্ধভাবে আপনাদের প্রতিহত করবে।
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের নেতৃবৃন্দ বলেছেন, দেশের মানুষ আজ চরম দুঃসময় পার করছে। মানুষের জানমালের কোন নিরাপত্তা নেই। চা-শ্রমিকেরা ৩০০টাকা মজুরীর জন্য আজ আন্দোলন করছে। বিদ্যুৎ সংকটে পর্যুদস্ত জনজীবন। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম আকাশচুম্বী, তার উপর আবার হুট করে নজিরবিহীন পরিমাণে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি! অথচ বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য প্রতিনিয়ত নিম্নমুখী। অনেক আলেম এক বছরেরও অধিক কাল পর্যন্ত কারাবন্দী। এই অবস্থা দেশের জন্য অশনি সংকেত। সরকার চরমভাবে ব্যর্থ। পরিস্থিতি বিবেচনায় আজ গণমানুষের অধিকার নিয়ে কথা বলার জন্য আমরা দলের পক্ষ থেকে রাজপথে কর্মসূচী দিতে বাধ্য হয়েছি। সরকারের কাছে আমাদের স্পষ্ট দাবী, মানুষের জীবন-জীবিকা নিয়ে তামাশা করা বন্ধ করুন! কারাবন্দী আলেমদের দ্রুত মুক্তি দিন! জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত জনগণ সহ্য করতে পারছেন না, অতএব এ অমানবিক সিদ্ধান্ত অবিলম্বে প্রত্যাহার করুন! প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষদের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে আনুন! নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের জনদাবী মেনে নিন!
আজ (১৯ আগস্ট) শুক্রবার বাদ জুমা বায়তুল মোকাররম উত্তর গেইটে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল পূর্ব সমাবেশে জমিয়ত নেতারা এসব কথা বলেন। জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, অব্যাহত লোডশেডিংয়ের প্রতিবাদে এবং কারাবন্দী আলেমদের মুক্তির দাবীতে এই বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন দলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মাওলানা ওবায়দুল্লাহ ফারুক।
সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, সরকার মানুষের সাথে দায়িত্বশীল আচরণ করছে না। সর্বক্ষেত্রে অযোগ্যতা ও ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। এভাবে একটা দেশ চলতে পারে না।
সরকারকে অত্যাচার-নির্যাতন বন্ধ করার আহবান জানিয়ে মাওলানা ওবায়দুল্লাহ ফারুক বলেন, অভিভাবকের আসনে বসে সংবেদনশীল আচরণ না করার পরিণতি ভয়াবহ।
মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী তাঁর বক্তব্যে বলেন, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত গ্রহণের পূর্বে সরকারের কর্তা ব্যক্তিরা কেন বিশ্ববাজারের বর্তমান মূল্য বিবেচনায় আনলেন না-এই প্রশ্নের কোন সদুত্তর আজ দেশের মানুষ পাচ্ছেন না। ভোজ্য তেলের দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত জনগণ মানেনি। এ থেকে সরকারের বুঝা উচিৎ-মানুষ কতটা সংক্ষুব্ধ।
তিনি বলেন, স্কুল কলেজ থেকে ধর্মশিক্ষা বাদ দেওয়ার কোন দুরভিসন্ধি এ দেশে কার্যকর করতে দেওয়া হবে না।
জমিয়তের মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী বলেন, আমরা আজ গণমানুষের অধিকার আদায়ে রাজপথে এসেছি। মানুষের দুর্ভোগ ও দুর্দশার বাস্তবতা স্বীকার না করে ‘বেহেশতে আছি’ বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য তামাশা ছাড়া আর কিছু নয়।
তিনি বলেন, দেশের বর্তমান সংকট ও সমস্যাকে হালকা করে দেখার কোন সুযোগ নেই। সরকারকে জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। অসহনীয় যানজট কমাতে হবে। বিদ্যুৎ পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক করতে হবে। চা-শ্রমিকদের ন্যায়সঙ্গত দাবী মেনে নিতে হবে। অতীতের মত প্রহসনের নির্বাচন করার চিন্তা বাদ দিয়ে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের জনদাবী মেনে নিতে হবে।
সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন, দলের যুগ্মমহাসচিব মাওলানা মতিউর রহমান গাজিপুরী, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতী নাসীরুদ্দীন খান, প্রচার সম্পাদক মাওলানা জয়নুল আবেদীন, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা ফেরদাউসুর রহমান, যুব বিষয়ক সম্পাদক মুফতী বশীরুল হাসান খাদিমানী, পাঠাগার সম্পাদক মাওলানা হেদায়েতুল ইসলাম প্রমূখ।
উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস কাসেমী, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা মাহবুবুল আলম, ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশের সভাপতি মাওলানা ইখলাসুর রহমান রিয়াদ, সাব্বির আহমদ, রিদওয়ান মাজহারী, কাউসার আহমদ, সাদ বিন জাকির, নূর হোসাইন সবুজ ও ইয়াকুব কামাল প্রৃমূখ।
সমাবেশ শেষে জমিয়তের একটি মিছিল বায়তুল মোকাররম উত্তর গেইট থেকে নাইটিঙ্গেল মোড় পর্যন্ত গিয়ে মুনাজাতের মাধ্যমে শেষ হয়।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর আমীর মুফতি রেজাউল করীম বলেছেন, জ্বালানি তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে জনজীবন দুর্বিষহ করে তুলেছে।
তিনি বলেন, সারাবিশ্বে জ্বালানি তেলের দাম কমলেও সরকার রেকর্ড পরিমাণ ও অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি করে জনগণের উপর অমানবিক বোঝা চাপিয়ে দিয়েছে। অযোগ্য ও ব্যর্থ সরকারকে জনগণ আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না। জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। চাল ডাল তেলের দাম কমাতে হবে।
আজ (১৯ আগস্ট) ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ লক্ষ্মীপুর জেলা শাখার কর্মী তারবিয়াতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে চরমোনাই পীর এসব কথা বলেন।
চরমোনাই পীর বলেন, চা শ্রমিকগণ তাদের ন্যায্য দাবিতে আন্দোলন করলেও তাদের দাবিকে আমলে নিচ্ছে না। এভাবেই চা শ্রমিকরা নিস্প্রেষণের শিকার হচ্ছে। ১২০ টাকা মজুরি কোন শ্রমিকের হতে পারে না। অবিলম্বে চা শ্রমিকদের যৌক্তিক দাবি মেনে নিতে হবে।
দলের ভারপ্রাপ্ত জেলা সভাপতি মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন-এর সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মাওলানা মহিউদ্দিন-এর সঞ্চালনায় লক্ষ্মীপুর শহরের আল কাবীর অডিটোরিয়ামে বিশেষ অতিথি ছিলেন দলের যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা খলিলুর রহমান।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ লক্ষ্মীপুর জেলা শাখার জয়েন্ট সেক্রেটারি মাওলানা আ হ ম নোমান সিরাজী, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা ইমরান হোসাইন, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের জেলা সভাপতি হাফেজ লোকমান হোসাইন, ইসলামী আন্দোলনের জেলা দপ্তর সম্পাদক মাওলানা নুরুল আলম প্রমুখ।