পরিপূর্ণ রূপে বিপ্লব ও জিহাদ বিহীন ইহুদি বান্ধব পাঠ্যক্রম প্রণয়ন করায় সৌদি বন্দনায় মেতেছে ইহুদিবাদী সন্ত্রাসীদের অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইল।
সোমবার (১৭ জুলাই) সৌদির চলতি শিক্ষাবর্ষে বিপ্লব ও জিহাদ বিহীন ইহুদি বান্ধব পাঠ্যক্রম প্রণয়ন অবৈধ রাষ্ট্রটির জন্য আনন্দের উপলক্ষ দাঁড়ায়।
ইহুদিবাদী অবৈধ রাষ্ট্রটির বিশিষ্ট সাংবাদিক ইতামার আইশনার এই ঘটনাকে একটি মাইলফলক উল্লেখ করে বলেন, নি:সন্দেহে হিজবুল্লাহ ও মুসলিম ব্রাদারহুডের সমালোচনা ও তাদের মতো বিপ্লবী চিন্তাচেতনা বিরুদ্ধ শিক্ষার সংযুক্তি সৌদি শিক্ষাব্যবস্থায় অনন্য অগ্রগতির উদাহরণ ও মাইলফলক হয়ে থাকবে। শান্তি ও সহনশীলতা প্রচারে এটি গুরুত্বপূর্ণ সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
সৌদি শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রকাশিত বিগত ৫ বছরের ৩০১টি বইয়ের নাম উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগে এই বইগুলোতে ইহুদিবাদের প্রতি বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করে এমন সব বিষয় অন্তর্ভুক্ত ছিলো। কিন্তু চলতি শিক্ষাবর্ষে সেসব বিষয়ের প্রায় সবই পাঠ্যক্রম থেকে সরিয়ে ফেলা হয়েছে।
তিনি ইহুদিবাদ বিরোধী বিষয়বস্তুর ব্যাপারে বলেন, ইহুদিবাদী বিরোধী বিষয়বস্তু মূলত ফিলিস্তিনে অবৈধ ইহুদি বসতি স্থাপনের ফসল। ফিলিস্তিনে স্থাপিত ইহুদি বসতিগুলো অবশ্যই অবৈধ এবং আন্তর্জাতিক আইনের বিরুদ্ধাচারণ। কিন্তু এর প্রেক্ষিতে অন্যান্য ইহুদি যারা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে তাদের ঘায়েল করা অমানবিক।
যাই হোক, বর্তমানে প্রথম ইন্তিফাদার ইতিবাচক ফলাফল বিষয়ক ইতিহাস পাঠ এখন আর তাদের পাঠ্যসূচিতে নেই। ইসরাইল ও ইহুদিদেরকে যেভাবে প্রতারক হিসেবে উপস্থাপন করা তাও সরিয়ে নেওয়া হয়েছে তাদের সব বই থেকে। আরব রাষ্ট্রটি আমাদের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে চাইছে। এটি তারই একটি অংশ।
উল্লেখ্য; ২০২০ সালের ১৯ ডিসেম্বর শনিবার পাঠ্যক্রম পরিবর্তনে ইহুদিবাদীদের অনুরোধ মেনে নেয়। এতে প্রধান ভূমিকা পালন করে বিশ্বব্যাপী জায়নিস্টদের পক্ষে লবিং করে বেড়ানো একটি জায়নিস্ট লবিং গ্রুপ।
ইহুদিবাদী গণমাধ্যমগুলোতে তখন এবিষয়ে প্রচার করা হয়েছিলো যে, সৌদি সরকার এমন সব পাঠ্য তাদের পাঠ্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত করেছে যে, কচিকাঁচা ও নতুন প্রজন্মের সৌদি পাঠকেরা সে পাঠ্যের ফলে আর কখনো ইহুদি বিদ্বেষী হবে না।
ইহুদি বিরোধী পাঠ্য, জিহাদ ও জিহাদ সম্পর্কিত আলোচনার কারণে সৌদিরা ইহুদি বিদ্বেষী হয়ে যাচ্ছিল উল্লেখ করে ইহুদি গণমাধ্যমগুলো বলছেছিলো, সৌদির পাঠ্যক্রমে ইহুদি বিদ্বেষ ও উগ্রতায় উদ্বুদ্ধকারী জিহাদ, জিহাদ সম্পর্কিত আলোচনা এবং ইহুদি বিরোধী আর কোনো বিষয়ই বাকি রাখা হয়নি। জিহাদ ও জিহাদ সম্পর্কিত সবকিছুই তুলে দেওয়া হচ্ছে। পাঠ্যক্রম থেকে সম্পূর্ণ রূপে জিহাদকে বাদ দেওয়ায় সৌদিদের অন্তরে আর কখনোই জিহাদ ও শাহাদাতের তামান্না জাগবে না।
এছাড়া ইহুদিরা যে, মাদক, অর্থ ও নারীদের ব্যবহার করে বিশ্ব পরিচালনার প্রধান উৎসগুলোয় নিজেদের হাত জমানোর পায়তারা করছে এই কঠিন সত্য ধারণাকেও তারা চিরতরে মুছে দিতে সক্ষম হবে বলে দাবি করা হয়েছিলো।
জিহাদ, ইসলাম ও ইসলামের আধিপত্য বিষয়ক বিষয়বস্তুর পরিবর্তে পাঠ্যসূচিতে মুক্তচিন্তা বা ধর্মনিরপেক্ষতা, উদারনীতি এবং উজ্জ্বল ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তাভাবনা মূলক বিষয়বস্তু অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেছিলো ইহুদি গণমাধ্যমগুলো।
ইহুদিদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে উজ্জ্বল ভবিষ্যত ও উন্নয়নকে নিজেদের একমাত্র ধ্যানজ্ঞান করতে, নারীদের আরো বেশি স্বাধীনতা দিতে এবং সকল ধর্মের সহাবস্থান নিশ্চিত করতে সেই সময় সৌদি সরকার পুনর্গঠনমূলক কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে বলেও দাবী করে ইহুদিবাদী গণমাধ্যমগুলো।
সূত্র: মিডল ইস্ট মনিটর