ইহুদিবাদী সন্ত্রাসীদের অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইলের ইলিয়াত বন্দরে অবরোধ কার্যকরে সফলতার পর এবার হাইফা বন্দরও অবরোধের ঘোষণা দিয়েছে ইয়েমেনের হুথিরা।
মঙ্গলবার (২০ মে) মিডল ইস্ট মনিটরের খবরে একথা জানানো হয়।
খবরে বলা হয়, ইয়েমেনের হুথিদের সশস্ত্র সংগঠন আনসারাল্লাহর মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারি গতকাল এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন যে, গোষ্ঠীটি ইসরাইলের হাইফা বন্দরে নৌ অবরোধ কার্যকর করতে শুরু করেছে, যা তাদের নেতৃত্বের নির্দেশনা অনুযায়ী গৃহীত হয়েছে।
বিবৃতিতে ইয়াহিয়া সারি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, “যেসব কোম্পানির জাহাজ বর্তমানে এই বন্দরে নোঙর করে আছে বা এর অভিমুখে এগিয়ে যাচ্ছে তাদের প্রতি সতর্কবার্তা, এই বিবৃতির সময় থেকে হাইফাকে আমাদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা হবে। আমাদের সতর্কবার্তা বা যেকোনো ঘোষণা কোম্পানিগুলোকে গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করতে হবে।”
তিনি জানান, হাইফা অবরোধের সিদ্ধান্তটি ইলিয়াত বন্দরে সফলভাবে অবরোধ কার্যকরের পর গৃহীত হয়েছে, যেটি বর্তমানে বন্ধ হয়ে গেছে।
হুথিদের এই সামরিক মুখপাত্র বলেন, “আমরা আমাদের নিপীড়িত ফিলিস্তিনি জনগণ এবং তাদের সাহসী প্রতিরোধের প্রতি সমর্থনে প্রয়োজনীয় যেকোনো পদক্ষেপ নিতে পিছপা হব না।”
তিনি জোর দিয়ে বলেন, “জায়োনিস্ট ইসরাইলের বিরুদ্ধে সহায়তা অভিযান, বিমান এবং নৌ অবরোধ সহ সবধরণের সামরিক পদক্ষেপ কেবল তখনই স্থগিত করা হবে, যখন গাজ্জায় আগ্রাসন বন্ধ হবে এবং অবরোধ তুলে নেওয়া হবে।”
তিনি আরো বলেন, “সামরিক পদক্ষেপগুলো গাজ্জায় ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরাইল পরিচালিত ক্রমবর্ধমান হামলার বিরুদ্ধে সরাসরি প্রতিক্রিয়া। জায়োনিস্ট শত্রুরা আমাদের ভাই ও জনগণের বিরুদ্ধে গাজ্জায় তাদের নৃশংস আগ্রাসন আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। প্রতিদিন গণহত্যা চালিয়ে শত শত ফিলিস্তিনিদের হত্যা করছে, যা পৃথিবী আগে কখনো দেখেনি।”
তিনি পরিষ্কার করে বলেন, হুথিদের অবরোধ গাজ্জায় চলমান অবরোধ, অনাহার ও ইসরাইলের সামরিক অভিযান বন্ধে অস্বীকৃতির বিরুদ্ধে একটি জবাব।
সংবাদমাধ্যমের তথ্যমতে, ইসরাইলী দখলদার বাহিনী ১৮ মার্চ ভোরে গাজা উপত্যকায় পুনরায় হামলা শুরু করে, যা ছিল যুক্তরাষ্ট্র, মিশর ও কাতারের মধ্যস্থতায় প্রায় ৬০ দিন স্থায়ী একটি যুদ্ধবিরতির লঙ্ঘন।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরাইল তাদের গণহত্যামূলক অভিযানের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৫৩,৩০০-রও বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, বাস্তব সংখ্যাটা আরও অনেক বেশি হতে পারে, কারণ বহু ফিলিস্তিনি ধ্বংসস্তূপের নিচে নিখোঁজ রয়েছেন এবং তাঁদের মৃত বলেই ধারণা করা হচ্ছে।