আদিয়ালা কারাগার থেকে পাঠানো এক বার্তায় পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান অভিযোগ করেছেন, সেনা প্রধান জেনারেল আসিম মুনির দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ইচ্ছাকৃতভাবে আফগানিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, বর্তমান নীতির কারণে সীমান্তের দুইপারে সংঘাত বাড়ছে এবং এতে সাধারণ মানুষই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
ইমরান খান বলেন, “আফগান ও কাবায়েলী জনগণের বিরুদ্ধে ৯ মে-র মতো একটি সাজানো নাটক (ফলস ফ্ল্যাগ) তৈরি করা হচ্ছে। যেদিন থেকে আসিম মুনির দায়িত্ব পেয়েছেন, সেদিন থেকে আফগানিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক ইচ্ছাকৃতভাবে খারাপ করা হচ্ছে এবং তাদেরকে পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধ শুরু করতে উসকানো হচ্ছে, যাতে বর্তমান আফগান সরকারের বিরোধী লবিকে খুশি করা যায় এবং পশ্চিমাদের সামনে নিজেদের একজন ‘উদ্ধারকর্তা’ হিসেবে তুলে ধরা যায়।”
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) আদিয়ালা কারাগার থেকে পাঠানো এক বার্তায় ইমরান খান এসব কথা বলেন।
ইমরান খান আরও বলেন, “প্রথমে আফগান সরকারকে ভয়াবহ হুমকি দেওয়া হলো। এরপর ধর্মীয়, নৈতিক ও শরণার্থীদের আন্তর্জাতিক অধিকার লঙ্ঘন করে তিন প্রজন্ম ধরে পাকিস্তানে থাকা আফগান ভাইদের দেশ থেকে বের করে দেওয়া হলো। তারপর আফগানিস্তানের ভূখণ্ডে হামলা চালানো হলো। আর এখন ‘সন্ত্রাসীরা এসেছে’ এই অজুহাতে কাবায়েলী এলাকায় সামরিক অভিযান শুরু করা হয়েছে। এসব নীতির কারণে পুলিশ, সেনাসদস্য ও নিরীহ মানুষসহ আমাদেরই মানুষ শহীদ হচ্ছে। এভাবে কখনো শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয় না, টেকসই শান্তি সবসময় আলোচনার মাধ্যমেই আসে।”
তিনি জোর দিয়ে বলেন, “আফগানিস্তান ও কাবায়েলী এলাকায় শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য তিন পক্ষকে সঙ্গে নেওয়া জরুরি, কাবায়েলী এলাকার জনগণ, আফগান সরকার এবং আফগান জনগণ। এই তিন পক্ষ ছাড়া কোনো সফল অভিযান বা স্থায়ী সমাধান সম্ভব নয়।”
খাইবার পাখতুনখোয়ার সামরিক পদক্ষেপ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এগুলো কেবল তেহরিকে ইনসাফ সরকারকে দুর্বল করার জন্য। সামরিক অভিযান সন্ত্রাসবাদ আরও বাড়াবে। যখন পুলিশ সেই সন্ত্রাস দমনে ব্যস্ত থাকবে, তখন শাসন ও আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়বে। একই ধরনের নীতি এএনপি সরকারের আমলেও নেওয়া হয়েছিল।”
তিনি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশে আহ্বান জানিয়ে বলেন, “খাইবার পাখতুনখোয়ার সব এমপিএ, এমএনএ ও সিনেটররা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বসে দ্রুত সমস্যার সমাধান করুন। বিশেষ করে বন্যাদুর্গত এলাকায় শান্তি বজায় রাখতে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হোক।”
ইমরান খান বলেন, “আমাদের মিত্র মাহমুদ খান আচ্ছাকজাইয়ের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল আফগানিস্তানে গিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান খুঁজে বের করুক।”