গাজ্জা নিয়ে ট্রাম্পের পরিকল্পনাকে ফিলিস্তিনের মুক্তির নয় বরং ইসরাইলের বিস্তৃতির রূপরেখা বলে বিবৃতি দিয়েছে মাওলানা ফজলুর রহমানের নেতৃত্বাধীন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম পাকিস্তান।
সম্প্রতি ইসলামাবাদে এই বিষয়ে রাজনৈতিক সংগঠনটির পক্ষ থেকে একটি সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
এতে মাওলানা ফজলুর রহমান বলেন, গাজ্জা নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও দখলদার ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ঘোষিত পরিকল্পনা ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার বা জেরুসালেমকে মুক্ত করার কোনো পরিকল্পনা নয়, বরং জায়োনিস্ট অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইলকে বিস্তৃত করার একটি রূপরেখা।
তিনি আরো বলেন, আমেরিকা তাদের বক্তব্য থেকে হামাসকে সম্পূর্ণভাবে বাদ দিয়েছে, অথচ হামাসই যে কোনো সমীকরণের মূল পক্ষ। হামাসকে একটি প্রকৃত পক্ষ হিসেবে স্বীকৃতি না দিলে ফিলিস্তিন সংকটের সমাধান হবে না। হামাস হলো ফিলিস্তিনি জনগণের বৈধ ও নির্বাচিত প্রতিনিধি। তাদের উপেক্ষা করা মানে ফিলিস্তিনিদের উপর জোরপূর্বক সমাধান চাপিয়ে দেওয়া।
তিনি আমেরিকার কড়া সমালোচনা করে বলেন, যে অপরাধীকে সমর্থন করে সেও তার অপরাধের অংশীদার। অথচ আমেরিকা প্রকাশ্যে নেতানিয়াহুকে সমর্থন করছে, যদিও আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত তাকে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
নেতানিয়াহুর সাথে যৌথভাবে ঘোষিত ট্রাম্পের এই কথিত শান্তি পরিকল্পনায় পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ ও সেনা প্রধান ফিল্ড মার্শাল আসেম মুনির সমর্থন জানানোয়, তাদেরও কঠোর সমালোচনা করেন। তাদের সমর্থনকে পাকিস্তানের ভিত্তিমূলের বিপরীত বলে মন্তব্য করেন। তাদেরকে ফিলিস্তিন ইস্যুতে নিজেদের পূর্বের ও সাম্প্রতিক বক্তব্য মিলিয়ে দেখার ও এতে তৈরি হওয়া বৈপরীত্য প্রত্যক্ষ করার আহবান জানান।
জোর দিয়ে বলেন, ফিলিস্তিনের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার একমাত্র ফিলিস্তিনিদের। কোনো সমাধান তাদের উপর জোর করে চাপিয়ে দেওয়া যাবে না।
এর স্বপক্ষে তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ইসরাইল ফিলিস্তিনের অস্তিত্ব স্বীকার করে না, আর ফিলিস্তিনও ইসরাইলের অস্তিত্ব স্বীকার করে না। তাহলে কীভাবে ফিলিস্তিনিদের উপর কথিত দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান চাপিয়ে দেওয়া যায়?
তিনি ট্রাম্প ও নেতানিয়াহুর যৌথ সংবাদ সম্মেলনকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের জন্য একপ্রকার অপমান বলেও অভিহিত করেন, কারণ আদালত ইতিপূর্বেই নেতানিয়াহুকে যুদ্ধাপরাধী ঘোষণা করেছে।