সোমবার | ১৫ ডিসেম্বর | ২০২৫

মার্কিন শুল্কে বিপাকে ভারত

আমেরিকার ৫০ শতাংশ বাড়তি শুল্কের প্রভাব মোকাবিলায় ইউরোপে নতুন বাজার খুঁজছেন ভারতের টেক্সটাইল খাতের রপ্তানিকারকরা। ইউরোপে নতুন ক্রেতা খোঁজার পাশাপাশি বিদ্যমান মার্কিন ক্রেতাদের ছাড়ও দিচ্ছেন তারা।

মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) ভারতের টেক্সটাইল শিল্পখাতের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

গত আগস্টে আমেরিকার বাজারে ভারতীয় পণ্যের আমদানির ওপর দ্বিগুণ শুল্ক আরোপ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই শুল্ক ভারতের যেকোনও বাণিজ্য অংশীদারের মধ্যে সর্বোচ্চ। এতে পোশাক ও গয়না থেকে শুরু করে চিংড়ি পর্যন্ত ভারতের বিভিন্ন পণ্যের রপ্তানির ওপর প্রভাব পড়ে।

দেশটির বাণিজ্যিক রাজধানী খ্যাত মুম্বাইয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পোশাক রপ্তানিকারক বলেছেন, তার প্রতিষ্ঠান ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বাজারে বহুমুখী রপ্তানির ওপর জোর দিচ্ছে। ইইউর সঙ্গে দ্রুত বাণিজ্যচুক্তি হলে ভারতের রপ্তানি বৃদ্ধি পাবে বলে প্রত্যাশা করেছেন তিনি।

ভারত ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মাঝে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য আলোচনা বর্তমানে গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে রয়েছে। চলতি বছরের শেষ নাগাদ একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের লক্ষ্যে নিবিড়ভাবে কাজ করছে উভয়পক্ষ।

বর্তমানে ভারতের সর্ববৃহৎ বাণিজ্যিক অংশীদার ইউরোপীয় ইউনিয়ন। গত বছরের মার্চ পর্যন্ত অর্থবছরে দুই পক্ষের বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ১৩৭.৫ বিলিয়ন ডলার। দুই পক্ষের এই বাণিজ্য গত এক দশকে প্রায় ৯০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

ভারতীয় টেক্সটাইল রপ্তানিকারকদের মতে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের কঠোর রাসায়নিক মানদণ্ড, পণ্যের লেবেলিং ও নৈতিক উৎস নিশ্চিতকরণের নিয়ম মেনে চলার বিষয়ে জোর দিচ্ছেন ভারতীয় রপ্তানিকারকরা।

ভারতের পোশাক প্রস্তুতকারক মালিকদের সংগঠন ক্লোদিং ম্যানুফেকচারার্স এসোসিয়েশনের প্রধান উপদেষ্টা রাহুল মেহতা বলেছেন, রপ্তানিকারকরা এসব মানদণ্ড পূরণের লক্ষ্যে উৎপাদন স্থাপনার আধুনিকায়ন করছেন।

তিনি বলেন, রপ্তানিকারকরা যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরতা কমাতেও আগ্রহী। ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত অর্থবছরে যুক্তরাষ্ট্র ছিল ভারতের টেক্সটাইল ও পোশাকের সবচেয়ে বড় বাজার। এই খাতে ভারতের মোট ৩৮ বিলিয়ন ডলার রপ্তানির প্রায় ২৯ শতাংশ গেছে যুক্তরাষ্ট্রে।

মুম্বাইভিত্তিক ক্রিয়েটিভ গ্রুপের চেয়ারম্যান বিজয় কুমার আগারওয়াল বলেন, কিছু রপ্তানিকারক ইতোমধ্যে মার্কিন ক্রেতাদের ধরে রাখার জন্য বিশেষ ছাড়ের ঘোষণা দিয়েছেন। তার প্রতিষ্ঠানের মোট রপ্তানির ৮৯ শতাংশই যুক্তরাষ্ট্রে যায় বলে জানিয়েছেন বিজয় কুমার।

তিনি বলেন, যদি আমেরিকার বাড়তি শুল্ক কার্যকর থাকে, তাহলে তার কোম্পানির ১৫ হাজার কর্মীর মাঝে অন্তত ৬ থেকে ৭ হাজার জনকে ছাঁটাই করতে হবে। এছাড়া ছয় মাস পর উৎপাদন কারখানা ওমান কিংবা প্রতিবেশী বাংলাদেশে স্থানান্তরের কথা বিবেচনা করবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।

সূত্র: রয়টার্স।

spot_img
spot_img

সর্বশেষ

spot_img

এই বিভাগের

spot_img