বুধবার, জুন ৪, ২০২৫

চামড়া ব্যবস্থাপনা; আলেম-ওলামাদের সঙ্গে বাণিজ্য উপদেষ্টার মতবিনিময়

spot_imgspot_img

কোরবানির পশুর চামড়ার সুষ্ঠু সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও বণ্টন নিশ্চিত করতে কওমী মাদরাসার আলেম-ওলামাদের দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।

রোববার (১ জুন) রাতে রাজধানীর জামিয়া মাদানিয়া বারিধারা মাদরাসা প্রাঙ্গণে কোরবানির পশুর চামড়া সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা বিষয়ে কওমী মাদরাসার আলেম-ওলামাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন।

সভায় বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, কোরবানির পশুর চামড়া একটি গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় সম্পদ। এটি সঠিকভাবে সংগ্রহ করে ট্যানারি শিল্পে সরবরাহ করলে দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক অবদান রাখা সম্ভব। এজন্য ধর্মীয় নেতা, স্থানীয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।

তিনি বলেন, আলেম-ওলামারা সমাজে প্রভাব রাখেন, তাই তাদের সহযোগিতায় জনসচেতনতা বাড়ানো গেলে চামড়া নষ্ট হওয়া রোধ করা যাবে।

বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, কোরবানির পর আমরা অনেকেই গোস্ত নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। চামড়ার খোঁজ রাখি না। এটা হয়তো নোংরা জায়গায় পড়ে থাকে। পচনশীল বস্তু হওয়ায় দ্রুতই চামড়া নষ্ট হতে থাকে। নষ্ট চামড়ার কোনো দাম নেই। এ কারণে যারা কোরবানি করবেন এবং চামড়া সংগ্রহ করবেন সবাইকে এ ব্যাপারে সতর্ক হতে হবে।

তিনি বলেন, চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী বাংলাদেশ সফর করছেন। সঙ্গে অনেক ব্যবসায়ী প্রতিনিধি এসেছেন। তাদের সঙ্গে আমরা কাঁচা চামড়া বা ব্লু ওয়েট নিয়ে কথা বলেছি। হয়তো আরও অনেকেই আসবেন। আপনারা জানেন ইতোমধ্যে আমরা চামড়া রপ্তানি নিষিদ্ধকরণের আদেশ তিন মাসের জন্য স্থগিত করেছি। যাতে কাঁচা চামড়া রপ্তানি সম্ভব হয়।

তিনি বলেন, আমি চাই না এদেশ থেকে কাঁচা চামড়া বাইরে রপ্তানি হোক কিন্তু সঠিক দাম না পেলে আমাদের সেদিকে যেতে হবে। পৃথিবীর মোট চামড়ার সাড়ে তিন শতাংশ চামড়া বাংলাদেশে হয়। এটা আল্লাহতায়ালার অনেক বড় বরকত। কিন্তু আমরা এই বরকতকে নষ্ট করে ফেলেছি। আন্তর্জাতিক বাজারে আমাদের চামড়ার অবনমনের জন্য অনেকেই দায়ী বলে উল্লেখ করেন তিনি।

কোরবানির চামড়া সংরক্ষণের চেষ্টা আগে কখনোই করা হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, এবারই প্রথম সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এতে কিছু সমস্যা হবে। এতে প্রথম দিনে গন্ধ হবে, সুন্দর করে পরিস্কার করে লবণ দিতে পারলে গন্ধ কমে যাবে। লবণ দিয়ে তিন মাস চামড়া সংরক্ষণ করা যাবে। দাম না পেলে চামড়া বেচবো না এই সিদ্ধান্তে অটল থাকতে হবে। চামড়ার সঠিক দাম নিশ্চিত করার জন্য চামড়াগুলোকে সঠিক প্রক্রিয়ায় পরিচ্ছন্ন করতে হবে।

বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, চামড়ায় লবণ দেওয়ার জন্য আমরা লবণ চাষিদের কাছ থেকে সাড়ে সাত লাখ মণ লবণ কিনেছি। এই লবণ মাদরাসা ও এতিমখানায় বিনামূল্যে বিতরণ করা হবে চামড়া সংরক্ষণের জন্য। এতে কিছুটা হলেও লবণ চাষিরা উপকৃত হয়েছে।

উপদেষ্টা বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধের পর দেশের যে অর্থনৈতিক অনুমান ছিল তার মধ্যে চামড়া অন্যতম। এছাড়া পাট ও চা এটাই মোটাদাগে অনুমান ছিল। আমাদের প্রত্যেকটা শিল্প নষ্ট হয়েছে। এমন পর্যায়ে গিয়েছে যে যখন ২৫ হাজার টাকার গরুর দাম ছিল তখন চামড়ার দাম ছিল ২ হাজার টাকা। এখন ঐ গরুর দাম ১ লাখ টাকা কিন্তু চামড়ার দাম ২০০ টাকা, এটা একদম অস্বাভাবিক অবস্থা।

সর্বশেষ

spot_img
spot_img
spot_img