ইরান হুঁশিয়ারি দিয়েছে, যদি ইসরাইল তাদের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর হামলা চালায়, তাহলে ইরানও ইসরাইলের গোপন পারমাণবিক কেন্দ্র, অর্থনৈতিক কাঠামো এবং সামরিক স্থাপনাগুলোতে পাল্টা হামলা চালাবে।
সোমবার ইরানের সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ এক বিবৃতিতে জানায়, দেশটির গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর হাতে ইসরাইলের গোপন পারমাণবিক প্রকল্প ও স্থাপনা–সংক্রান্ত হাজার হাজার নথি এসেছে। এসব নথিতে ইসরাইলের উচ্চপর্যায়ের পারমাণবিক প্রকল্পের কারিগরি তথ্য, অবস্থান এবং কার্যক্রমের বিস্তারিত বিবরণ রয়েছে।
পরিষদ বলছে, এই তথ্য উদ্ধারে তারা “একটি ঐতিহাসিক গোয়েন্দা সাফল্য” অর্জন করেছে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “এই গোপন নথিগুলো তেহরানকে সক্ষম করেছে, যাতে ইসরাইলের যেকোনো আক্রমণের বিরুদ্ধে দ্রুত এবং উপযুক্তভাবে জবাব দেওয়া যায়।”
পরিষদের বিবৃতিতে আবারও স্পষ্ট করে বলা হয়, “যদি ইরান আক্রান্ত হয়, তবে ইসরাইলের গোপন পারমাণবিক কেন্দ্র, অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান এবং সামরিক অবকাঠামো সরাসরি ইরানের প্রতিশোধের লক্ষ্যবস্তু হবে।”
এই ঘোষণার কয়েকদিন আগে, ৭ জুন, ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রকাশিত এক রিপোর্টে জানানো হয়, ইরানি নিরাপত্তা বাহিনী দীর্ঘ সময় ধরে একটি অভিযান চালিয়ে ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থা থেকে হাজার হাজার গোপন দলিল সংগ্রহ করেছে। এসব দলিলে পারমাণবিক কেন্দ্রগুলোর কাঠামো ও পরিচালনার বিস্তারিত নকশা রয়েছে। রিপোর্টে আরও জানানো হয়, এই নথিগুলো এখনো যাচাই ও বিশ্লেষণের প্রক্রিয়ায় রয়েছে।
এ বিষয়ে ইরানের গোয়েন্দামন্ত্রী ইসমাইল খাতিব বলেন, “এই নথিগুলো শুধু ইসরাইলের পারমাণবিক কর্মসূচি নয়, বরং যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় দেশ এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক শক্তির সঙ্গে তাদের সম্পর্কের স্পর্শকাতর তথ্যও ধারণ করে।”
একই প্রসঙ্গে, ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বগায়ি তেহরানে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “নথিগুলোর মধ্যে কিছুতে প্রমাণ রয়েছে যে, ইউরোপের কয়েকটি দেশ সরাসরি ইসরাইলের পারমাণবিক কর্মসূচিতে সহায়তা দিয়েছে।”
ঘটনার গুরুত্ব বোঝাতে আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থার মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসি বলেন, “আমাদের হাতে এমন স্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে, যা দেখায়, সংস্থার কিছু গোপন নথি ইরান সংগ্রহ করেছে।”
সূত্র : আল জাজিরা