বৃহস্পতিবার | ১১ ডিসেম্বর | ২০২৫

ইরাকে ৪ দিনের মাথায় সন্ত্রাসী তালিকা থেকে হুথি-হিজবুল্লাহর নাম অপসারণ

তালিকাভুক্তির ৫দিনের মাথায় সন্ত্রাসী তালিকা থেকে ইয়েমেনের হুথি ও লেবাননের হিজবুল্লাহর নাম অপসারণ করেছে ইরাক।

বুধবার (১০ ডিসেম্বর) মিডল ইস্ট মনিটরের এক প্রতিবেদনে একথা জানানো হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরান সমর্থিত ইয়েমেনের ও লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হুথি ও হিজবুল্লাহর নাম অপসারণ করেছে ইরাক। সরে এসেছে তদসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও দলের সম্পদ জব্দ করার সিদ্ধান্ত থেকে।

দেশটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, প্রশাসনিক ত্রুটির কারণে গত সপ্তাহে হুথি-হিজবুল্লাহর নাম তালিকাভুক্ত হয়েছিলো। মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে গেজেট প্রকাশের মাধ্যমে পূর্বের সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়েছে।

ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মুহাম্মদ শাইয়া আস-সুদানি এই ত্রুটির ঘটনা কীভাবে ঘটেছে তা নিয়ে জরুরি তদন্তের এবং যারা দায়ী তাদের জবাবদিহির আওতায় আনার নির্দেশ দিয়েছেন।

অপরদিকে যে কমিটির নথি ও তালিকার প্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিলো সেই সন্ত্রাসী অর্থ জব্দ কমিটি জানায়, তাদের হাতে আসা নথি ও তালিকাটি পর্যালোচনার নিয়মিত প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হওয়ার আগেই প্রকাশিত হয়েছিলো। এই ভুলের কারণে এমন সিদ্ধান্ত এসেছে।

প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর জানায়, প্রাথমিক তালিকায় ব্যবহৃত ভাষা সঠিক ছিলো না। সেটি ইরাকের সরকারি অবস্থান প্রতিফলিত করে না।

সংবাদমাধ্যমের তথ্যমতে, ইরাকের সন্ত্রাসী অর্থ জব্দ কমিটি মন্ত্রিপরিষদের সাধারণ সচিবালয়ের অধীনে পরিচালিত হয় এবং জাতিসংঘের অধ্যায়-৭ অনুসারে নিষেধাজ্ঞার তালিকাভুক্ত ব্যক্তি বা সংগঠনের সম্পদ জব্দের দায়িত্ব পালন করে।

এছাড়াও কমিটিটি ইরাক কর্তৃপক্ষ বা বিদেশি সরকার কর্তৃক জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব অনুসারে সন্ত্রাসী তালিকাভুক্তদের ক্ষেত্রেও একই দায়িত্ব পালন করে।

মূলত গত ৪ ডিসেম্বর ইয়েমেন ও লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হুথি ও হিজবুল্লাহকে সন্ত্রাসী তালিকাভুক্ত করে গেজেট প্রকাশ করে ব্রিটেন ও আমেরিকার আগ্রাসনে লণ্ডভণ্ড হয়ে যাওয়া ইরাক।

গেজেটে বলা হয়েছিলো, ইরাক সরকারের একটি কমিটি বিশ্বের ১০০টির বেশি সংগঠন ও ব্যক্তিকে সন্ত্রাসবাদের তালিকাভুক্ত করেছে। তন্মধ্যে কিছু প্রতিষ্ঠানকে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব অনুসারে নিষেধাজ্ঞার আওতায়ও রাখা হয়েছে।

এতে আরো বলা হয়েছিলো, উক্ত কমিটি হুথি ও হিজবুল্লাহর সাথে যুক্ত সংস্থা এবং ব্যক্তিদের তহবিল জব্দ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

‘তহবিল জব্দ কমিটির’ জারি করা এক সরকারী সিদ্ধান্ত অনুসারে এবারের সন্ত্রাসবাদ তালিকা হালনাগাদ করা হয়েছে বলেও এতে উল্লেখ করা হয়, যা সন্ত্রাসবাদ দমন, অর্থায়ন রোধ এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থা ও ব্যক্তিদের চিহ্নিত করার সাথে সম্পর্কিত।

সংবাদমাধ্যমগুলোতে জানানো হয়েছিলো যে, ইরাক সরকারের এই সিদ্ধান্ত আমেরিকার ডেপুটি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইকেল রেগেসের একটি আহবানের পর আসে, যেখানে তিনি ইরাকের পররাষ্ট্র প্রতিনিধিদের ইরানি মিলিশিয়া গোষ্ঠীগুলোকে দুর্বল করার এবং ইরাকী-আমেরিকানদের হুমকি থেকে দূরে রাখার আহবান জানিয়েছিলেন।

এই সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় ইরাকি হিজবুল্লাহ ব্রিগেডের অধিকার বিষয়ক গ্রুপের প্রধান হুসাইন মুনিস তীব্র সমালোচনা পূর্বক ইরাক সরকারকে ভীতু, পরাধীন এবং মর্যাদাহীনতার গুণে গুণান্বিত করেছিলেন।

উল্লেখ্য, দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর সন্ত্রাসী অর্থ জব্দ কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করে থাকেন। কমিটির সদস্য হিসেবে দেশটির স্বরাষ্ট্র, পররাষ্ট্র, বিচার, বাণিজ্য, যোগাযোগ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি ছাড়াও দুর্নীতি দমন কমিশন ও সন্ত্রাসবিরোধী সংস্থার সদস্যরাও রয়েছেন।

spot_img

সর্বশেষ

spot_img

এই বিভাগের

spot_img