ভারতে বৃদ্ধ কৃষককে পিটিয়ে জয় শ্রী রাম বলতে বাধ্য করেছে উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা।
মঙ্গলবার (১৩ মে) মুসলিম মিররের খবরে একথা জানানো হয়।
খবরে বলা হয়, সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশের দেওবন্দ শহরের অমরপুর গড়ি গ্রামে ৮০ বছর বয়সী মুসলিম কৃষক মুহাম্মদ ইসরাইলকে নির্মমভাবে পিটিয়ে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দিতে বাধ্য করা হয়। এই ঘটনায় অভিযুক্ত উগ্র হিন্দুত্ববাদী দুর্বৃত্তদের পরবর্তীতে গ্রেফতার করে স্থানীয় পুলিশ।
পুলিশের প্রতিবেদন অনুসারে, মুসলিম বৃদ্ধ কৃষক ইসরাইল যখন নিজের জমিতে সেচ দিচ্ছিলেন, তখন দুই যুবক আকাশ এবং অভি তার কাছে আসে। তারা তার নাম জিজ্ঞাসা করে। ধর্মীয় পরিচয় জানার পর তাকে হিন্দু ধর্মীয় স্লোগান দিতে জোর করে। ইসরাইল তা করতে অস্বীকার করলে তারা তাকে লাঠি দিয়ে মারধর শুরু করে। মারধরের তীব্রতা বাড়াতে এক পর্যায়ে কোদাল দিয়েও তারা তাকে আঘাত করতে শুরু করে। এতে বৃদ্ধ মুসলিম কৃষক ইসরাইল গুরুতরভাবে আহত হন। রক্তাক্ত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তার চিৎকার শুনে আশপাশের মানুষ ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে এবং চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়।
পুলিশের বক্তব্য অনুসারে, সেদিনই হামলায় অভিযুক্ত দুই যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়। দায়িত্বশীল পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, ভুক্তভোগী ও হামলাকারীদের মধ্যে কোনো ব্যক্তিগত শত্রুতা ছিল না। ধর্মীয় বিদ্বেষ থেকেই তৎক্ষণাৎ এই ন্যাক্কারজনক ঘটনা সংঘটিত হয়।
অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে একাধিক ভারতীয় দণ্ডবিধির ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে:
• ধারা 115(2) (ইচ্ছাকৃতভাবে আঘাত করা)।
• ধারা 352 (উদ্দেশ্যমূলক অপমান ও শান্তিভঙ্গের প্ররোচনা)।
• ধারা 351(1) (ফৌজদারি ভীতি প্রদর্শন)।
• ধারা 196(1) (ধর্ম, বর্ণ ইত্যাদির ভিত্তিতে বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে শত্রুতা ছড়ানো)।
• ধারা 299 (ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার উদ্দেশ্যে ইচ্ছাকৃত ও বিদ্বেষপূর্ণ কার্যকলাপ)।
ঘটনাটি স্থানীয় জনগণের মাঝে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে। ওই অঞ্চলে সংখ্যালঘু মুসলিমদের বিরুদ্ধে ঘৃণা ও বিদ্বেষজনিত অপরাধ বাড়ছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।
মুহাম্মদ ইসরাইল বর্তমানে তার আঘাত থেকে সুস্থ হয়ে উঠছেন।