তালেবান নেতৃত্বাধীন ইমারাতে ইসলামিয়া সরকারের প্রচেষ্টায় আফগানিস্তান রেলপথে বর্তমানে ৭ দেশের সাথে যুক্ত।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) হুররিয়াতের এক প্রতিবেদনে একথা জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ইমারাত সরকারের প্রচেষ্টায় ৭ দেশে আফগান রেল সংযোগ সম্প্রসারিত হয়েছে।
উপ-প্রধানমন্ত্রীর (অর্থ) দপ্তর থেকে জানানো হয়, আফগানিস্তান বর্তমানে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ৭টি দেশের সাথে রেলপথে সংযুক্ত। যেসব রেলপথ আফগানিস্তানকে সরাসরি অন্য দেশের সাথে যুক্ত করেছে তা হলো –
১. হাইরাতান রেলপথের মাধ্যমে উজবেকিস্তানের সাথে।
২. আকিনা ও তোরঘুন্ডি রেলপথের মাধ্যমে তুর্কমেনিস্তানের সাথে।
৩. খাওয়াফ-হেরাত রেলপথের মাধ্যমে ইরানের সাথে।
এছাড়া চীন, রাশিয়া, তুরস্ক ও কাজাখস্তান এই ৪টি দেশের সাথেও পরোক্ষ রেল সংযোগ রয়েছে।
দপ্তর থেকে আরো জানানো হয়, আফগান রেলওয়ে পুনর্গঠন ও এর অবকাঠামোগত উন্নয়নের লক্ষ্যে ইমারাত সরকার একনিষ্ঠভাবে কাজ করে যাচ্ছে। প্রতিবেশী দেশগুলোতে রেল সংযোগ সম্প্রসারণের পাশাপাশি বৈশ্বিক পর্যায়ে রেল যোগাযোগ স্থাপনের উদ্যোগ নিচ্ছে, যার মধ্যে কিছু প্রকল্প ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে এবং কিছু প্রকল্প চলমান রয়েছে।
সংবাদমাধ্যমের তথ্যমতে, ২০২৩ সালের ১১ জুলাই আফগান-তুর্কি রেল সংযোগ চালু হয়। যার মাধ্যমে আফগানদের জন্য ইউরোপে সড়কপথে বাণিজ্যের দুয়ার খুলে যায়। এই রেল সংযোগ হেরাথের রোজনিক স্টেশন থেকে ইরান হয়ে সরাসরি তুরস্ক পর্যন্ত বিস্তৃত।
আফগান-তুর্কি আন্তর্জাতিক রেললাইনের মাধ্যমে ইউরোপের দুয়ার খুলতে সক্ষম হয়েছে ইমারাতে ইসলামিয়া আফগানিস্তান।
এই রেল সংযোগের উদ্বোধন উপলক্ষে আফগান রেল মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিলো, রেলপথটি বাণিজ্যিক পণ্য আনা-নেওয়ার জন্য চালু করা হলেও ভবিষ্যতে এতে যাত্রীবাহী রেলও চলাচল করবে ইনশাআল্লাহ। এজন্য পরিকল্পনা ও পর্যালোচনা চলমান রয়েছে।
উল্লেখ্য, মূলত সড়ক পথে পুরো মুসলিম বিশ্বকে এক করার পরিকল্পনা হলো এরদোগানের ভিশন ‘তুর্কি শতাব্দীর’ অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ। যা ইতোপূর্বে সুলতান আব্দুল হামিদ সানীর ভিশনেরও অংশ ছিলো।
তুরস্ক এই লক্ষ্যে ২০২৩ সালের ২২ মার্চ আরবদের সাথে পুনরায় স্থলপথে সংযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে একটি চুক্তিও সাক্ষর করে।
চুক্তি সাক্ষর শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে দেশটির প্রেসিডেন্ট এরদোগান বলেছিলেন, বসরা থেকে তুর্কি সীমান্ত পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ ও স্থলপথে পরিবহন করিডর স্থাপনে তুর্কি সরকারের সাথে কাজ করতে সম্মত হয়েছেন ইরাকি প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শাইয়া আল-সুদানি। তুরস্ককে আবার আরব উপসাগরীয় অঞ্চলের সাথে সংযুক্ত করতে এই প্রকল্পটি কার্যকরী ভূমিকা পালন করবে বলে আমরা আশাবাদী।
আমাদের ভ্রাতৃপ্রতিম দেশগুলোও এই প্রকল্প বাস্তবায়নে আগ্রহী। কেননা প্রকল্পটি মানবিক সম্পর্ক জোরদার করার পাশাপাশি তুর্কি-আরব আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং বাণিজ্যের বিকাশ ঘটাতেও সাহায্য করবে বলে আমরা আশাবাদী।
এছাড়া আফগান রেলমন্ত্রী আফগান-তুর্কি রেল সংযোগ চালুর বিষয়ে বলেছিলেন, এই রেলপথের কল্যাণে এখন আমরা ইউরোপীয়দের পাশাপাশি আমাদের তুর্কি ভাইদের আরো নিকটে চলে গিয়েছি। আমরা তাদের সাথে আগের তুলনায় এখন আরো বেশি সম্পৃক্ত।