অতীত চুক্তি বহাল রেখে রাশিয়ার সাথে সম্পর্ক পুনঃনির্ধারণ করতে চান সিরিয়ার বিপ্লব পরবর্তী নতুন প্রেসিডেন্ট আহমদ শার’আ।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে এক বৈঠকে তিনি এই ইচ্ছার কথা জানান।
ক্রেমলিনের বৈঠকে তিনি পুতিনকে বলেন, আমরা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের প্রকৃতিকে নতুনভাবে পুনরুদ্ধার ও পুনর্নির্ধারণ করার চেষ্টা করছি, যেনো সার্বভৌম সিরিয়া, এর আঞ্চলিক ঐক্য, অখণ্ডতা ও স্বাধীনতা এবং এর নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বজায় থাকে।
দামেস্ক মস্কোর সাথে সম্পাদিত অতীতের সকল চুক্তি মেনে চলবে মর্মে আশ্বস্ত করে বলেন, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এবং একক স্বার্থ আমাদের রাশিয়ার সাথে আবদ্ধ করে। তাই আমরা মস্কোর সাথে সম্পাদিত সবধরণের চুক্তিকে সম্মান করি।
আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্স এবং এএফপিতে দেশটির সরকারি কর্মকর্তাদের বরাতে জানানো হয় যে, আবু মুহাম্মদ জুলানি বা আহমদ শার’আ পুতিনের সাথে আজকের বৈঠকে বাশার আল আসাদকে হস্তান্তরের অনুরোধ করবেন। তবে বৈঠকের শুরুতে আল শার’আর সংক্ষিপ্ত টেলিভিশন ভাষণে সংবেদনশীল কূটনৈতিক বিষয়ের কোনও উল্লেখ ছিলো না।
অপরদিকে বিশ্বের অন্যতম ক্ষমতাধর প্রেসিডেন্ট আল-শার’আকে স্বাগত জানিয়ে দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান কয়েক দশকের বিশেষ সম্পর্কের প্রশংসা করেন এবং দাবী করেন যে, মস্কো সর্বদা সিরিয়ার জনগণের স্বার্থ দ্বারা পরিচালিত হয়। তার সরকার এই সম্পর্ককে সম্প্রসারণ করতে চায়।
তিনি বাশার আল আসাদ পরবর্তী সিরিয়ার সাম্প্রতিক সংসদীয় নির্বাচনেরও প্রশংসা করেন এবং বলেন যে, এই প্রক্রিয়াটি সমস্ত রাজনৈতিক শক্তির মধ্যে সম্পর্ককে শক্তিশালী করবে।
এছাড়াও বলেন, আমি বিশ্বাস করি এটি আপনার জন্য একটি দুর্দান্ত সাফল্য। কারণ, এটি সমাজকে একীকরণের দিকে পরিচালিত করবে। যদিও সিরিয়া বর্তমানে কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, তবুও এটি সমস্ত রাজনৈতিক শক্তির মধ্যে সম্পর্ক এবং সহযোগিতাকে জোরদার করবে।
সংবাদমাধ্যমের তথ্যমতে, সিরিয়ার বর্তমান প্রেসিডেন্ট আহমদ শার’আর এটিই প্রথম রাশিয়া সফর।
সিরিয়ার ১৩ বছরের গৃহযুদ্ধে তিনি ও তার নেতৃত্বে একতাবদ্ধ হওয়া স্বাধীনতাকামীরা মস্কোর হস্তক্ষেপের বিপরীত দিকে থাকা সত্ত্বেও দামেস্কের নতুন সরকার মস্কোর সাথে সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি বাস্তববাদী দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করেছেন, যেমনটি তারা অন্যান্য বিদেশী শক্তির সাথেও করছেন ।
দামেস্কের জন্য, যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিকে পুনর্গঠন এবং সরকারের আন্তর্জাতিক বৈধতা বৃদ্ধির জন্য রাশিয়ার সাথে সম্পর্ক বজায় রাখাও গুরুত্বপূর্ণ।
মার্কিন টিভি নেটওয়ার্ক সিবিএসকে দেওয়া সাম্প্রতিক এক সাক্ষাতকারে আল শার’আ বলেছিলেন, সিরিয়ার সাথে রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ ও দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক রয়েছে, যা রাষ্ট্রের মৌলিক কাঠামো, খাদ্য ও জ্বালানির সাথে সম্পৃক্ত। এজন্য সিরিয়া আংশিকভাবে রাশিয়ান সরবরাহের উপর নির্ভর করে থাকে। পাশাপাশি কিছু পুরানো কৌশলগত স্বার্থও রয়েছে।
এছাড়া রাশিয়া সিরিয়ার উপকূলে বিমান ও নৌ ঘাঁটিতে নিজেদের উপস্থিতি এখনো বজায় রেখেছে। ক্রেমলিন এই ঘাঁটিগুলো ধরে রাখার জন্য একটি চুক্তির জন্য আলোচনার আশাও প্রকাশ করেছে। মস্কো সিরিয়ায় তেলের চালান পাঠিয়েছে বলেও জানা গেছে।
সূত্র: আল জাজিরা