ডিজিটাল ফাইন্যান্সে এগিয়ে থাকতে ক্রিপ্টো কাউন্সিল গঠন করলো পাকিস্তান।
শুক্রবার (১৪ মার্চ) এই কাউন্সিল গঠিত হয়।
পাক অর্থমন্ত্রী মুহাম্মদ আওরাঙ্গজেবকে কাউন্সিল প্রধান ও তার ক্রিপ্টো বিষয়ক প্রধান উপদেষ্টা বেলাল বিন সাকিবকে সিইও নির্ধারণ করে কাউন্সিল গঠন করে শাহবাজ শরীফের সরকার।
স্টেট ব্যাংক গভর্নর, এসইসিপি চেয়ারম্যান, ফেডারেল সচিব (আইন) ও ফেডারেল সচিব (আইটি) কে সদস্য নির্ধারণ করে কাউন্সিলের প্রাথমিক বোর্ডও গঠন করা হয়।
সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, ব্লকচেইন প্রযুক্তি এবং ডিজিটাল সম্পদের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করছে পাকিস্তান। এই খাতে আধুনিক প্রযুক্তির নিরাপদ পরিবেশ প্রদানের চেষ্টা চালাচ্ছে সরকার।
এছাড়াও বলা হয়, দেশ আজ ডিজিটাল ফাইন্যান্সের এক নতুন যুগে প্রবেশ করছে। গঠিত কাউন্সিল দেশে ক্রিপ্টো গ্রহণের কার্যকর নীতি নির্ধারণে, একে নিরাপদ আর্থিক ব্যবস্থা হিসেবে গড়ে তুলতে, এর আধুনিকীকরণে ও দেশের ক্রিপ্টো ইকোসিস্টেমকে উন্নত করতের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।
পাক অর্থমন্ত্রী ও কাউন্সিল প্রধান আওরাঙ্গজেব বলেন, বিশ্ব দ্রুত ডিজিটাল ফাইন্যান্সের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। ডিজিটাল ফাইন্যান্সের শীর্ষস্থানীয় দেশ হতে হতে চায় পাকিস্তান। কাউন্সিল প্রতিষ্ঠা দেশের ফাইন্যান্সকে আধুনিকীকরণ, একে নিয়ন্ত্রকের ভূমিকায় নিয়ে যাওয়ার ও নিয়ন্ত্রণ কাঠামো তৈরির দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
উল্লেখ্য, ক্রিপ্টোকারেন্সি (Cryptocurrency) হলো ডিজিটাল বা ভার্চুয়াল মুদ্রা, যা ক্রিপ্টোগ্রাফির মাধ্যমে নিরাপদ করা হয়। এটি কোনো সরকার বা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণে থাকে না, বরং ব্লকচেইন প্রযুক্তির (Blockchain Technology) উপর ভিত্তি করে পরিচালিত হয়।
ক্রিপ্টোকারেন্সির প্রধান বৈশিষ্ট্য:
১. বিকেন্দ্রীভূত (Decentralized)। অর্থাৎ কোনো নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণে থাকে না।
২. নিরাপদ ও গোপনীয়: লেনদেন এনক্রিপ্টেড থাকে, তাই নিরাপত্তা বেশি।
৩. ব্লকচেইন প্রযুক্তি: প্রতিটি লেনদেন ব্লকের মধ্যে সংরক্ষিত হয়, যা হ্যাকিং কঠিন করে তোলে।
৪. সীমাহীন লেনদেন: বিশ্বের যেকোনো জায়গা থেকে সহজেই লেনদেন করা যায়।
৫. মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ: কিছু ক্রিপ্টোকারেন্সির (যেমন বিটকয়েন) নির্দিষ্ট পরিমাণ সরবরাহ আছে, তাই এটি অতিরিক্ত মুদ্রাস্ফীতির শিকার হয় না।
জনপ্রিয় কিছু ডিজিটাল বা ক্রিপ্টোকারেন্সি:
১. Bitcoin (BTC) – পৃথিবীর প্রথম ও সবচেয়ে জনপ্রিয় ডিজিটাল কারেন্সি।
২. Ethereum (ETH) – স্মার্ট কন্ট্রাক্টের জন্য জনপ্রিয়।
৩. Binance Coin (BNB) – Binance এক্সচেঞ্জের নিজস্ব কয়েন।
৪. Ripple (XRP) – দ্রুত লেনদেনের জন্য পরিচিত।
৫. Dogecoin (DOGE) – মজার উদ্দেশ্যে তৈরি হলেও এই ডিজিটাল কারেন্সি বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
ক্রিপ্টোকারেন্সি কিভাবে কাজ করে?
ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্লকচেইন নামক একটি বিতরণকৃত লেজার (Distributed Ledger) এর মাধ্যমে পরিচালিত হয়। প্রতিটি লেনদেন মাইনিং (Mining) প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যাচাই হয় এবং ব্লকচেইনে সংযুক্ত হয়।
ঝুঁকি ও সতর্কতা:
১. মূল্য অস্থিরতা: দাম খুব দ্রুত ওঠানামা করে।
২. নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনিশ্চয়তা: অনেক দেশে এটি এখনো বৈধ নয়।
৩. জালিয়াতি ও হ্যাকিং: নিরাপত্তা না থাকলে ক্রিপ্টোকারেন্সি হারানোর ঝুঁকি থাকে।
সূত্র: এআরওয়াই নিউজ