চার বছর আগে ইমারাতে ইসলামিয়া আফগানিস্তানের শাসনভার গ্রহণ করে। শুরুতে বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলো কাবুলের সঙ্গে রাজনৈতিক সম্পর্ক স্থগিত করে এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোও কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। তবে নিজেদের ভারসাম্যপূর্ণ নীতির মাধ্যমে ইমারাতে ইসলামিয়া আবারও অঞ্চল ও বিশ্বের দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্গঠন ও সম্প্রসারণ করেছে। এর ধারাবাহিকতায় জাতিসংঘের ইউনামা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থা আফগানিস্তানে কার্যক্রম শুরু করেছে।
শাসনভার পুনঃপ্রাপ্তির পর গত চার বছরে প্রতিবেশী, আঞ্চলিক এবং বিশ্বের একাধিক দেশের সঙ্গে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক সম্প্রসারিত হয়েছে। রাশিয়া ইমারাতে ইসলামিয়াকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে এবং পাঁচটি দেশ আনুষ্ঠানিকভাবে আফগানিস্তানের নতুন রাষ্ট্রদূতদের গ্রহণ করেছে। ফলে বিশ্বের সক্রিয় আফগান দূতাবাস ও কূটনৈতিক মিশনের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪১-এ।
এই সময়ে আফগানিস্তানের পরিস্থিতি নিয়ে দোহা প্রক্রিয়া এবং জাতিসংঘের আয়োজনে বড় আন্তর্জাতিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা মানবিক সহায়তার পাশাপাশি ইমারাতে ইসলামিয়ার সঙ্গে গঠনমূলক সম্পর্ক ও ইতিবাচক অবস্থানের ওপর জোর দিয়েছেন।
গত চার বছরে ইমারাতে ইসলামিয়ার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদারের উদ্দেশ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাত, তুরস্ক, ইরান, পাকিস্তান, কাতার, ওমান, রাশিয়া, তুর্কমেনিস্তান ও চীন সফর করেছেন। পাশাপাশি তারা একাধিক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেছেন ও বক্তব্য রেখেছেন।
কাবুল আঞ্চলিক সহযোগিতা উদ্যোগ সম্মেলনের আয়োজন করেছে। এতে কাতার, রাশিয়া, উজবেকিস্তান, তাতারস্তান, পাকিস্তান, ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি দেশের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল অংশ নেয়। এসব বৈঠকের উদ্দেশ্য ছিল দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার এবং বিদ্যমান সমস্যার সমাধান খোঁজা।
কাবুলে সক্রিয় বিদেশি দূতাবাস ও মিশনের সংখ্যা এখন ২৩। একই সঙ্গে জার্মানিতে কূটনীতিক পাঠানো এবং পাঁচটি দেশের পক্ষ থেকে আফগান রাষ্ট্রদূতদের আনুষ্ঠানিক গ্রহণের ফলে বিশ্বজুড়ে আফগান দূতাবাস ও মিশনের সংখ্যা বেড়ে ৪১-এ দাঁড়িয়েছে।
এছাড়া মার্কিন সরকার ইমারাতে ইসলামিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী খলিফা সিরাজউদ্দিন হাক্কানি, আবদুলআজিজ হাক্কানি ও ইয়াহইয়া হাক্কানির ওপর ঘোষিত পুরস্কার প্রত্যাহার করেছে। রাশিয়া, কিরগিজস্তান ও কাজাখস্তান ইমারাতে ইসলামিয়ার নাম নিষিদ্ধ গোষ্ঠীর তালিকা থেকে সরিয়েছে। বিশেষ করে রাশিয়া আফগানিস্তানের ইমারাতে ইসলামিয়াকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দিয়েছে।
ইমারাতে ইসলামিয়া বলেছে, তারা আমেরিকা ও পশ্চিমা দেশগুলোসহ বিশ্বের সব দেশের সঙ্গে পারস্পরিক শ্রদ্ধার ভিত্তিতে সম্পর্ক স্থাপন করতে চায় এবং দেশগুলোকে স্বীকৃতির ক্ষেত্রে রাশিয়ার পথ অনুসরণের আহ্বান জানিয়েছে।