শনিবার, মে ১০, ২০২৫

পতিতাদের ‘শ্রমিক’ হিসেবে স্বীকৃতি চায় নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন

spot_imgspot_img

নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের পক্ষ থেকে পতিতাদের ‘শ্রমিক’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। বিষয়টি অত্যন্ত বিতর্কিত হলেও কমিশন মনে করে, এটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদেই বাস্তবায়নযোগ্য। পাশাপাশি গৃহকর্মীদেরও শ্রমিক মর্যাদায় আনতে কমিশনের জোরালো আহ্বান রয়েছে।

শনিবার (১৯ এপ্রিল) বিকেলে নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে ৪৩৩টি সুপারিশ জমা দেয়। এর মধ্যে অন্যতম আলোচিত প্রস্তাব হলো, গৃহকর্মী ও পতিতাদের শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া। কমিশনের ভাষ্য অনুযায়ী, সমাজে অবহেলিত এসব শ্রেণির মানুষকে আনুষ্ঠানিক শ্রম ব্যবস্থার আওতায় আনলে তাদের জীবনে সুরক্ষা ও মর্যাদা নিশ্চিত হবে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, সব খাতে নারী কর্মীদের জন্য ২৪ সপ্তাহ বা ৬ মাস পূর্ণ বেতনের প্রসূতি ও দত্তকজনিত ছুটি নিশ্চিত করতে হবে। গর্ভধারণ থেকে প্রসব-পরবর্তী সময়ে চাকরি হারানোর ঝুঁকি বন্ধে কমিশন চাকরিচ্যুতি নিষিদ্ধ করার পরামর্শ দিয়েছে। একইসাথে পুরুষ কর্মীদের জন্য পিতৃত্বজনিত ছুটির কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।

শ্রম আইনে “প্রসূতি কল্যাণ” শব্দটি বদলে “প্রসূতি অধিকার” লেখার প্রস্তাব দিয়েছে কমিশন। এর মাধ্যমে নারীদের প্রজনন অধিকারকে আইনি কাঠামোয় আরও জোরালোভাবে প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

প্রতিবেদনে নারী শ্রমিকদের নিরাপদ অভিবাসনের গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে। কমিশন সুপারিশ করেছে, আন্তর্জাতিক শ্রম ও অভিবাসন আইনের সুবিধা পেতে হলে নারীদের জন্য সুনির্দিষ্ট নীতিমালা ও সুরক্ষা ব্যবস্থার দরকার রয়েছে।

“নারীর স্বাধীনতা” এবং তাদের বাস্তব মুক্তির জন্য আরও ফলপ্রসূ ও কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি বলে মন্তব্য করেছে কমিশন। সমাজ ও রাজনীতির প্রতিটি স্তরে নারীদের সক্রিয় ও শক্তিশালী ভূমিকা নিশ্চিত করাই এর মূল লক্ষ্য।

নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের মতে, এসব সুপারিশ বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশে নারীর অধিকার, মর্যাদা ও কর্মসংস্থানের দিক থেকে এক নতুন দিগন্তের সূচনা হবে। বিশেষত পতিতাদের শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি দিলে সমাজে এক গভীর আলোচনার দরজা খুলবে, যা প্রান্তিক নারীদের সম্মানজনক জীবনের পথে এগিয়ে নিতে সহায়ক হতে পারে।

সর্বশেষ

spot_img
spot_img
spot_img