সোমবার, এপ্রিল ২১, ২০২৫

নারী সংস্কার কমিশন বাতিলের দাবি বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের

অবিলম্বে নারী সংস্কার কমিশন ও তাদের প্রস্তাবনা বাতিল করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস।

রোববার (২০ এপ্রিল) এক বিবৃতিতে দলের আমীর মাওলানা মুহাম্মাদ মামুনুল হক ও মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ এ দাবি জানান।

বিবৃতিতে তারা বলেন, আমরা গভীর উদ্বেগ, দুঃখ ও ক্ষোভের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, সম্প্রতি নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন কর্তৃক যে ধৃষ্টতামূলক সুপারিশমালা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার নিকট পেশ করা হয়েছে, তাতে ইসলামী শরিয়াহভিত্তিক পারিবারিক বিধানকে চরমভাবে অবজ্ঞা ও অস্বীকার করা হয়েছে। তারা তথাকথিত অভিন্ন পারিবারিক আইনের মাধ্যমে সকল ধর্মের নারীদের বিয়ে, তালাক, উত্তরাধিকার ও ভরণপোষণে সমান অধিকার নিশ্চিত করার নামে ইসলামের সুপ্রতিষ্ঠিত বিধানাবলিকে বাতিল করে পশ্চিমা অনুকরণভিত্তিক একটি উলঙ্গ বল্গাহীন সমাজব্যবস্থা চাপিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা চালিয়েছে।

নেতারা বলেন, এই কমিশন এদেশের মানুষ, ধর্ম, সমাজ সম্পর্কে কোন ধারণাই রাখেনা। এই চিহ্নিত মহলটি বিকৃত রুচিবোধে বেড়ে উঠা ধর্ম-বিদ্বেষী নাস্তিক্যবাদের প্রতিনিধিত্ব করে। অন্ধকার গলির পথভ্রষ্টরা কখনও আলোর পথের যাত্রীর পথ প্রদশর্ক হতে পারেনা । প্রকৃত অর্থে ইসলাম-ই নারীকে মুক্তি-প্রগতি ও মর্যাদার পথে পরিচালিত করে।

বিবৃতিতে নেতারা আরও বলেন, ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি থেকে আমাদের অবস্থান স্পষ্ট- ইসলামে নারীর জন্য নির্ধারিত উত্তরাধিকার, বিবাহ ও তালাকের বিধান কোরআন ও সুন্নাহ দ্বারা নির্ধারিত, যা পরিবর্তনের কোনো সুযোগ নেই। কোরআনের স্পষ্ট নির্দেশনা অমান্য করে সমানাধিকারের নামে শরিয়াহকে পরিবর্তন করার উদ্যোগ কেবল ইসলামবিরোধী নয়, বরং মুসলিম সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত।

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নেতারা বলেন, বৈবাহিক সম্পর্কের মধ্যে স্বামী-স্ত্রীর যৌন সম্পর্ককে ‘ধর্ষণ’ আখ্যায়িত করার প্রস্তাব ইসলামী বিয়ের মূল দর্শনকেই অস্বীকার করে। ইসলাম বিবাহকে একটি পবিত্র চুক্তি হিসেবে গণ্য করে, যেখানে উভয়ের অধিকার ও কর্তব্য নির্ধারিত। এই ধরনের প্রস্তাব পারিবারিক বন্ধনকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেবে। ইসলাম পতিতাবৃত্তিকে স্পষ্টভাবে হারাম ঘোষণা করেছে। যৌনপেশাকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া বা শ্রম অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব সরাসরি কোরআন ও সুন্নাহর পরিপন্থী এবং সমাজে ব্যভিচার, অনাচার ও নৈতিক অধঃপতনকে অবাধ করে দেবে। তথাকথিত নারী অধিকারের নামে ইসলামি মূল্যবোধ, সামাজিক কাঠামো ও পারিবারিক বন্ধনকে বিনষ্ট করা একটি সুদূরপ্রসারী ষড়যন্ত্র। আমরা এই ষড়যন্ত্রকে তীব্র ভাষায় প্রত্যাখ্যান করছি।

নেতারা সরকারকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, অভিন্ন পারিবারিক আইন তৈরির প্রক্রিয়া অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফাইড ফেসবুকে পেইজে এই কমিশনের প্রস্তাবিত রিপোর্টকে প্রমোট করে প্রচারিত ঘোষণা প্রত্যাহারের করে নিতে হবে।

spot_imgspot_img

সর্বশেষ

spot_img
spot_img
spot_img
spot_img