বৃহস্পতিবার, মে ২২, ২০২৫

ভারতের উত্তরাখণ্ডের মাদরাসা পাঠ্যসূচিতে ‘অপারেশন সিঁদুর’ যুক্ত করার ঘোষণা

spot_imgspot_img

পাঠ্যসূচিতে অপারেশন সিঁদুর যুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছে ভারতের উত্তরাখণ্ড মাদরাসা বোর্ড।

বুধবার (২১ মে) মুসলিম মিররের খবরে একথা জানানো হয়।

খবরে বলা হয়, উত্তরাখণ্ড মাদ্রাসা বোর্ড সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে তারা রাজ্যজুড়ে নিজেদের পাঠ্যক্রমে ‘অপারেশন সিঁদুর’ অন্তর্ভুক্ত করবে, যার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা সাম্প্রতিক সামরিক অভিযানের বিষয়ে জানবে।

উত্তরাখণ্ড মাদ্রাসা এডুকেশন কাউন্সিলের সভাপতি মুফতি শামউন কাসেমী এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে বলেন, শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেশপ্রেম জাগ্রত করার লক্ষ্যে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। উত্তরাখাণ্ডে মোট ৪৫১টি মাদ্রাসা রয়েছে, যেখানে প্রায় ৫০,০০০ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে।

সংবাদমাধ্যমের তথ্যমতে, দিল্লিতে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের সাথে বোর্ড সভাপতি শামউন কাসেমীর এক বৈঠকের পর এই সিদ্ধান্ত আসে। শিক্ষাবিদ, বুদ্ধিজীবী ও সুফি পণ্ডিতদের একটি প্রতিনিধিদলও এসময় তার সাথে বৈঠকে উপস্থিত ছিলো।

বৈঠকে মাদরাসা বোর্ডের সভাপতি শামউন কাসেমী উগ্র হিন্দুত্ববাদী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের নেতৃত্বে পরিচালিত অপারেশন সিঁদুরের সফলতার জন্য শুভেচ্ছা জানান এবং পাকিস্তানে বিভিন্ন স্থানে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর নির্ভুল আঘাতের প্রশংসা করেন।

তিনি বলেন, “ভারতীয় সেনাবাহিনীর সাহসিকতা দেশজুড়ে মানুষের মন জয় করেছে। মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের এই জাতীয় গৌরব ও সাফল্য সম্পর্কে জানতে দেওয়া উচিত।”

তিনি আরো বলেন, “আমরা মাদ্রাসাগুলোতে এনসিইআরটি পাঠ্যক্রম চালু করেছি, যার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা মূলধারার শিক্ষার সাথে যুক্ত হয়েছে। এই সংস্কারের ফলে প্রতিষ্ঠানগুলোতে উচ্চমানের শিক্ষা এসেছে।”

“আমরা আমাদের শিশুদের অপারেশন সিঁদুরের সাফল্যের গল্প জানাতে চাই, যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বুঝতে পারে আমাদের সৈনিকরা কীভাবে সাহসিকতা ও বুদ্ধিমত্তার সাথে এই অভিযান সম্পন্ন করেছে। যেখানে কোনো বেসামরিক নাগরিকের প্রাণহানি হয়নি।”

“খুব শীঘ্রই পাঠ্যক্রম কমিটির একটি বৈঠক ডাকা হবে, যেনো সিলেবাসে অপারেশন সিঁদুরের একটি অধ্যায় অন্তর্ভুক্ত করা যায়।”

উত্তরাখণ্ড ওয়াকফ বোর্ডের সভাপতি শাদাব শামস মাদরাসা বোর্ডের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানান। তিনি বলেন, “এটি দেবভূমি উত্তরাখণ্ড। এটি সৈন্য ধাম (সৈন্যদের ভূমি) হিসেবেও পরিচিত। যদি আধুনিক মাদরাসায় পড়াশোনা করা শিশুরা এখানে ‘অপারেশন সিঁদুর’ সম্পর্কে না শেখে, তাহলে তারা আর কোথায় শিখবে?”

তিনি আরো বলেন, “উত্তরাখণ্ড এমন একটি রাজ্য যেখানে প্রায় প্রতিটি পরিবার তাদের একজনকে সৈনিক হিসেবে সশস্ত্র বাহিনীতে পাঠিয়েছে। এখানকার রাজ্যপাল একজন অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল, মুখ্যমন্ত্রী একজন সৈনিকের সন্তান, এবং এখানকার মানুষ অত্যন্ত দেশপ্রেমিক। এমন একটি রাজ্যের শিশুরা যদি ‘অপারেশন সিঁদুর’ সম্পর্কে না শেখে, তাহলে আর কে শিখবে?”

এছাড়াও বলেন, “ছাত্রদের ভারতীয় বাহিনীর বীরত্বপূর্ণ যুদ্ধ এবং সেনাদের আত্মত্যাগ সম্পর্কে শেখানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যাতে তাদের মধ্যে দেশপ্রেম ও বিশ্বাস গড়ে ওঠে। আমি মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি যিনি নিজেও একটি সামরিক পরিবারের সন্তান, তাকে অনুরোধ জানাই, যেনো তিনি অতিদ্রুত এনসিইআরটির পাঠ্যক্রমে এসব বিষয় অন্তর্ভুক্ত করে নেন। অনুরোধ করে বলছি, অপারেশন সিঁদুরের বিষয়বস্তু অন্তর্ভুক্ত করুন যেনো আধুনিক মাদ্রাসার শিশুরাও এই গল্পগুলো পড়তে পারে। তাদের বীরত্ব সম্পর্কে জানতে পারে এবং এবং এর মাঝে নিজেদের উপলব্ধি করতে পারে।”

সর্বশেষ

spot_img
spot_img
spot_img