রবিবার | ১৯ অক্টোবর | ২০২৫

৮ মামলায় জামিন পেলেন ইমরান খান, মুক্তি পাচ্ছেন কি?

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পিটিআই চেয়ারম্যান ইমরান খানকে ২০২৩ সালের ৯ মে সহিংসতার সঙ্গে জড়িত আটটি মামলায় জামিন দিয়েছেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) প্রধান বিচারপতি ইয়াহিয়া আফরিদির নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ এই জামিনের আদেশ দেন।

২০২৩ সালের ৯ মে ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করার পর পাকিস্তানজুড়ে ব্যাপক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। সেনা স্থাপনা, সরকারি ভবনসহ বহু স্থানে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনার পর ইমরান খান ও পিটিআই নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের হয়। আটটি মামলার জামিন নিয়েই বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে শুনানি হয়।

শুনানিতে ইমরান খানের আইনজীবী সালমান সাফদার যুক্তি দেন যে মামলাগুলোতে এখনো চার্জশিট দাখিল হয়নি। এ সময় প্রধান বিচারপতি ইয়াহিয়া আফরিদি মন্তব্য করেন, “এটুকুই যথেষ্ট, আমরা জামিন মঞ্জুর করছি।”
এর আগে ২০২৪ সালের নভেম্বরে লাহোরের সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনাল এবং ২০২৫ সালের ২৪ জুন লাহোর হাইকোর্ট জামিন আবেদন নাকচ করেছিল। সেই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করাতেই বৃহস্পতিবার খানের পক্ষে অনুকূল রায় আসে।

সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বলা হয়েছে, অন্য কোনো মামলায় প্রয়োজন না থাকলে ইমরান খানের মুক্তি কার্যকর হবে। কিন্তু বাস্তবে তিনি তাৎক্ষণিকভাবে মুক্তি পাচ্ছেন না। কারণ তিনি এখনো আল-কাদির ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত অবস্থায় কারাগারে রয়েছেন।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে ইসলামাবাদের দায়রা আদালত এই মামলায় ইমরান খানকে ১৪ বছরের কারাদণ্ড দেয়। একই মামলায় তার স্ত্রী বুশরা বিবিও ৭ বছরের দণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন। মামলাটির আপিল ইসলামাবাদ হাইকোর্টে বিচারাধীন রয়েছে।

ইমরান খানের জামিনকে পিটিআই নেতাকর্মীরা “বড় বিজয়” আখ্যা দিয়েছে। তাদের দাবি, সরকারের সাজানো মামলায় জনগণের নেতা ইমরান খানকে আটকে রাখা যাবে না।

অন্যদিকে তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার বলেছেন, “জামিন মানেই খালাস নয়; বিচার চলবে।”

এর আগে ইমরান খানের মুক্তির দাবিতে দেশজুড়ে আন্দোলন গড়ে তোলা হয়। এ সময় পুলিশ অন্তত দুই শতাধিক কর্মী–সমর্থককে গ্রেপ্তার করে।

আইনজীবীরা এখন ‘আল-কাদির’ মামলার সাজা স্থগিত বা জামিনের জন্য আপিলে দ্রুত শুনানির চেষ্টা করবেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ৯ মে-র মামলাগুলোতে জামিনের ফলে ইমরান খানের সামনে মুক্তির একটি সম্ভাবনা তৈরি হলেও বাস্তবিকভাবে তার রাজনৈতিক ময়দানে ফেরা নির্ভর করছে মূলত আল-কাদির ট্রাস্ট মামলার রায়ের ওপর।

সূত্র : ডন ও আল জাজিরা

spot_img
spot_img

এই বিভাগের

spot_img