পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ জানিয়েছেন, গত ৭ মে পাকিস্তান ৬টি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে। এর মধ্যে ৪টি ছিল ফরাসি তৈরি ‘রাফাল’ এবং ১টি রাশিয়ান ‘মিগ-২৯’।
বুধবার (২৮ মে) আজারবাইজানের স্বাধীনতা দিবসেরঅনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।
ভারতে দিকে ইংগিত করে শাহবাজ শরীফ বলেন, পাকিস্তান এমন একটি রাষ্ট্রের মোকাবিলা করছে যার জনসংখ্যা বেশি, অর্থনীতি শক্তিশালী এবং যেটি কয়েক দশক ধরে অস্ত্রশস্ত্রে বিলিয়ন ডলার ব্যয় করছে।
পাক প্রধানমন্ত্রী ২২ এপ্রিল ভারতনিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরের বেহলগামে সংঘটিত এক সন্ত্রাসী হামলার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ওই হামলায় ২৬ জন নিহত হয়েছিলেন এবং ভারত পরে এ ঘটনার জন্য পাকিস্তানকে ভিত্তিহীনভাবে দায়ী করে।
তিনি জানান, পাকিস্তান তৎক্ষণাৎ একটি স্বচ্ছ ও আন্তর্জাতিক তদন্ত কমিটি গঠনের প্রস্তাব দিয়েছিল, কিন্তু ভারতের জবাব ছিল সামরিক আগ্রাসন। ভারতের হামলায় ৩৩ জন বেসামরিক নাগরিক শহীদ হন, যাদের মধ্যে নারী, শিশু ও প্রবীণরা ছিলেন। আহত হন আরও ৫৫ জন।
শাহবাজ বলেন, “সেই পরিস্থিতিতে আমাদের সামনে আর কোনো পথ খোলা ছিল না। আমাদের মাতৃভূমি রক্ষায় প্রতিরোধ জানানো ছিল অনিবার্য।”
তিনি আরও জানান, ৭ মে ভারত পাকিস্তান এবং ইসলামাবাদ-নিয়ন্ত্রিত আজাদ কাশ্মীর অঞ্চলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। এর ফলে দুই দেশের মধ্যে সরাসরি সামরিক মুখোমুখি অবস্থান তৈরি হয়। পরে, ১০ মে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় দুই পক্ষ একটি যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছায়।
বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ তুরস্ক ও আজারবাইজানের সঙ্গে পাকিস্তানের গভীর সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে বলেন, “আমরা আগে বলতাম, পাকিস্তান ও তুরস্ক হলো দুই আত্মা, এক হৃদয়। এখন এটি চিরতরে পরিবর্তিত হয়ে দাঁড়িয়েছে, তিন আত্মা, এক হৃদয়।”
তিনি বলেন, আজারবাইজানের স্বাধীনতা দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পারা তাঁর জন্য গৌরব ও আনন্দের বিষয়। এই উপলক্ষে তিনি আজারবাইজানের জনগণকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।
প্রধানমন্ত্রী লাচিন শহরে অনুষ্ঠান আয়োজক কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, কারাবাখ অঞ্চলকে আর্মেনিয়ার দখল থেকে মুক্ত করার প্রতীকে পরিণত হয়েছে এই শহরটি। এ বিজয়ের জন্য তিনি আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ এবং সশস্ত্র বাহিনীকে অভিনন্দন জানান।
তিনি বলেন, ২০২০ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর আজারবাইজান দখলকৃত ভূমি পুনরুদ্ধারে সামরিক অভিযান শুরু করে। ৪৪ দিনব্যাপী ওই যুদ্ধের পর দুই দেশ যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছায় এবং বাকু তার দখল হারানো প্রদেশগুলোর নিয়ন্ত্রণ পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে।
পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রী তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগানের অব্যাহত সমর্থনের কথাও স্মরণ করেন। একইসাথে তিনি বলেন, আজারবাইজানের পাশে পাকিস্তান সবসময় কূটনৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে অবিচল থেকেছে।
সূত্র : আনাদোলু আরবি