তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগান দেশের প্রথম ভাসমান প্রাকৃতিক গ্যাস উৎপাদন প্ল্যাটফর্ম (এফপিইউ) ‘ওসমান গাজী’কে কারাদেনিজের সাকারিয়া গ্যাসক্ষেত্রে পাঠিয়েছেন।
প্রেসিডেন্ট এরদোগান ইস্তাম্বুলের দোলমাবাহচে প্রেসিডেন্সিয়াল অফিস থেকে এক আনুষ্ঠানিক অনুষ্ঠানে হাত নেড়ে প্ল্যাটফর্মটিকে বিদায় জানান। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জ্বালানি ও প্রাকৃতিক সম্পদমন্ত্রী আলপারস্লান বাইরাকতার, প্রেসিডেন্সির যোগাযোগ পরিচালক ফখরুদ্দীন আলতুন এবং গালাতাসারায় ক্লাবের সভাপতি দুরসুন ওজবেক। অনুষ্ঠানে মেহতার ব্যান্ড পারফরম্যান্সও অনুষ্ঠিত হয়।
বিদায় অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট এরদোগান প্ল্যাটফর্মের দায়িত্বপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। পরে তিনি একটি নৌকায় চড়ে প্ল্যাটফর্মটির কাছে গিয়ে রেডিওর মাধ্যমে কথোপকথন চালান।
ক্যাপ্টেন বলেন,
“প্রেসিডেন্ট মহোদয়, আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনি আমাদের সম্মানিত করলেন। আল্লাহ আপনার মঙ্গল করুন।”
এরদোগান উত্তর দেন,
“তবে আপনারা খুব ধীরে যাচ্ছেন, একটু গতি বাড়ান।”
জবাবে ক্যাপ্টেন বলেন,
“আমরা সঙ্গে সঙ্গে গতি বাড়াচ্ছি, পূর্ণ গতিতে যাচ্ছি।”
এরদোগান বলেন,
“আপনাদের যাত্রা শুভ হোক। আমরা সাকারিয়ায় প্রচুর প্রাকৃতিক গ্যাসের অপেক্ষায় আছি।”
ক্যাপ্টেন বলেন,
“ইনশাআল্লাহ প্রেসিডেন্ট মহোদয়, তা হবেই। সবকিছুর জন্য ধন্যবাদ।”
এরদোগান বলেন,
“ইনশাআল্লাহ।”
পরে ক্যাপ্টেন আরও বলেন,
“এটা যেন আমাদের দেশ ও জাতির জন্য কল্যাণকর হয় প্রেসিডেন্ট মহোদয়।”
উত্তরে প্রেসিডেন্ট এরদোগান বলেন,
“আমিন। ধন্যবাদ, ভালো থাকুন।”
তুরস্কের প্রথম ভাসমান প্রাকৃতিক গ্যাস উৎপাদন প্ল্যাটফর্ম ‘ওসমান গাজী’ ইস্তাম্বুল প্রণালী অতিক্রম করে। উপকূলীয় নিরাপত্তা অধিদপ্তরের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, প্ল্যাটফর্মটি ইস্তাম্বুল জাহাজ ট্রাফিক সেন্টারের তত্ত্বাবধানে, দিকনির্দেশক ক্যাপ্টেন, ‘নেনে হাতুন’ জরুরি প্রতিক্রিয়া জাহাজ, সাতটি টাগবোট এবং দ্রুত উদ্ধারকারী নৌকার সহায়তায় নিরাপদে যাত্রা সম্পন্ন করে।
ইস্তাম্বুল বিজয়ের বার্ষিকীতে এই যাত্রা সম্পন্ন হয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী, এটি ১ জুন ফিলিয়োস বন্দরে পৌঁছাবে।
ফখরুদ্দীন আলতুনের ঘোষণা: দ্বিগুণ হবে গ্যাস উৎপাদন
প্রেসিডেন্সির যোগাযোগ পরিচালক ফখরুদ্দীন আলতুন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানান, “২০২৬ সালের মাঝামাঝি থেকে কার্যক্রম শুরু করলে, কারাদেনিজে বিদ্যমান প্রাকৃতিক গ্যাস উৎপাদন দ্বিগুণ হয়ে দৈনিক ২০ মিলিয়ন ঘনমিটারে পৌঁছাবে। ফলে প্রায় ৮০ লাখ পরিবারের গ্যাস চাহিদা এখান থেকেই পূরণ হবে।”
তিনি আরও লেখেন, “আজ, ইস্তাম্বুল বিজয়ের ৫৭২তম বার্ষিকীতে, প্রেসিডেন্ট এরদোগানের উপস্থিতিতে আমরা ‘ওসমান গাজী’কে কারাদেনিজে বিদায় জানালাম। এটি আমাদের জ্বালানিতে স্বনির্ভরতা অর্জনের পথে বড় এক ধাপ।”
ফখরুদ্দীন আলতুন বলেন, প্ল্যাটফর্মটি ইস্তাম্বুল প্রণালী পার হতে সময় নিয়েছে প্রায় ১১ ঘণ্টা। এটি ১ জুন ফিলিয়োস বন্দরে পৌঁছাবে এবং ২০ বছরের জন্য সাকারিয়া গ্যাসক্ষেত্রে কাজ করবে। সেখানে প্রক্রিয়াকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস ১৬১ কিলোমিটার দীর্ঘ পাইপলাইনের মাধ্যমে স্থলে এনে জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হবে।
তিনি বলেন, “প্রেসিডেন্ট এরদোগান যেভাবে নির্দেশ দিয়েছেন, তুরস্ক জ্বালানিতে পূর্ণ স্বাধীনতা অর্জন না করা পর্যন্ত আমরা থেমে থাকব না, বাধা উপেক্ষা করেই এগিয়ে যাব।”
সূত্র : আনাদোলু এজেন্সি