Home Blog Page 4605

ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে স্বল্প পরিসরে

0

পবিত্র মাহে রমজানের বিশ চলে গেছে। বাকি রয়েছে দশ দিন। এর পরই বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ২৪ থেকে ২৫ মের মধ্যে বাংলাদেশসহ পুরো বিশ্বে ঈদ উদযাপিত হবে।

তবে প্রতিবছরের ন্যায় এবার আর বড় পরিসরে কোথাও ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে না। মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করে ও সকল স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদের নামাজ পড়তে হবে। আর তা নিশ্চিত করতে মাঠে থাকবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।

আজ বৃহস্পতিবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়, বর্তমানে দেশব্যাপী বিদ্যমান বিভিন্ন বিধি-বিধান ঈদুল ফিতরের নামাজের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য থাকবে। বিশেষ করে, উন্মুক্ত স্থানে বড় পরিসরে জমায়েত পরিহার করতে হবে।

শিগগিরই এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করবে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়।

হাইআতুল উলইয়ার প্রতি ঈদের পর মাদরাসা খুলে দেয়ার দাবী জানিয়ে ৭২ শীর্ষ আলেমের বিবৃতি

0

শীর্ষস্থানীয় ৭২ জন ওলামা-মশায়েখ এক যৌথ বিবৃতিতে কওমী অঙ্গনের সর্বোচ্চ ফোরাম আল-হাইআতুল উলইয়া বোর্ড কর্তৃপক্ষের প্রতি আসন্ন ঈদুল ফিতরের পর কওমি মাদরাসাসমূহ খুলে দিতে জোর দাবি জানিয়েছেন।

১১ মে সোমবার মাওলানা ফজলুল করীম কাসেমী স্বাক্ষরিত ৭২ জন আলেমের এক বিবৃতি গণমাধ্যমে প্রেরণ করা হয়।

বিবৃতিতে উলামায়ে কেরাম আরো বলেন, করোনা মহামারির কারণে দেশব্যাপী লকডাউন পরিস্থিতি চলায় দেশের প্রায় বিশ হাজার কাওমী মাদরাসার পঁচিশ লাখেরও বেশি শিক্ষার্থী গত শিক্ষাবর্ষের বার্ষিক পরীক্ষা, বেফাক ও আল-হাইআতুল উলইয়ার সেন্টার পরীক্ষা দিতে পারেনি। নিয়ম অনুযায়ী ঈদুল ফিতরের পর থেকে কাওমী মাদরাসাসমূহের নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হতে যাচ্ছে। এ সময়টা কওমি মাদ্রাসাসমূহের জন্য অত্যন্ত গুরুত্ববহ।

উলামায়ে কেরাম আরো বলেন, লকডাউন পরিস্থিতি জারির প্রায় দেড় মাস পর সরকার যখন জনগণের কল্যাণে সবকিছুই শর্তসাপেক্ষে উন্মুক্ত করে দিতে শুরু করেছেন, সেহেতু দেশের শান্তিপ্রিয় সুশৃঙ্খল এবং সবচেয়ে বেশি নিয়ম মেনে চলতে অভ্যস্ত ও আনুগত্যশীল কাওমী শিক্ষার্থীদের আরো একটি শিক্ষাবর্ষে কুরআন ও হাদীসের শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত থাকুক এটা কাম্য হতে পারে না। সুতরাং যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদের ছুটির পর কুরআন-হাদীস চর্চার কেন্দ্রস্থল কাওমী মাদরাসাসমূহ খুলে দিতে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে কওমী অঙ্গনের সর্বোচ্চ ফোরাম আল-হাইআতুল উলইয়া বোর্ড কর্তৃপক্ষের প্রতি আমরা জোর দাবী জানাচ্ছি।

বিবৃতিদাতা উলামায়ে কেরাম ও পীর-মাশায়েখগণ হলেন, আল্লামা মুফতী আব্দুস সালাম চাটগামী, মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী, আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী, মুফতী মুহাম্মদ ওয়াক্কাস, মাওলানা নুরুল ইসলাম (আদীব সাহেব), আল্লামা হাফেজ আতাউল্লাহ হাফেজ্জী, মাওলানা শায়েখ জিয়া উদ্দিন, মাওলানা আব্দুল হামীদ (মধুপুর পীর), মাওলানা মুনিরুজ্জামান সিরাজী, মাওলানা আব্দুর রহমান হাফেজ্জী, মাওলানা আরশাদ রহমানী (বসুন্ধরা), মাওলানা নুরুল হক (বট্টগ্রাম হুজুর), অধ্যক্ষ মিযানুর রহমান চৌধুরী (শায়েখে দেওনা), মাওলানা উবায়দুল্লহ ফারুক, মাওলানা মাহমুদুল আলম (সিরাজগঞ্জ), মাওলানা আব্দুল হক হক্কানী (জামিল মাদরাসা), মুফতী মোবারকুল্লাহ (বি-বাড়ীয়া), মাওলানা নূরুল ইসলাম (খিলগাঁও), মাওলানা আব্দুর রব ইউসূফী, মাওলানা জুনায়েদ আল-হাবীব, মাওলানা আবুল কালাম (জামিয়া মুহাম্মাদিয়া), মাওলানা বাহাউদ্দীন যাকারিয়া (আরজাবাদ), মুফতী শফিকুল ইসলাম (সাইনবোর্ড), মাওলানা ফজলুল করীম কাসেমী, মাওলানা আশরাফ আলী নিজামপুরী (হাটহাজারী), মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী,

হাফেয মাওলানা নাজমুল হাসান কাসেমী (বারিধারা), মাওলানা খুরশেদ আলম কাসেমী (খতীব, আল্লা করীম), মাওলানা আব্দুল আউয়াল (নারায়ণগঞ্জ), মুফতি মুনির হোসাইন হোসাইন কাসেমী, মুফতি জাকির হোসাইন কাসেমী, মাওলানা সানাউল্লাহ মাহমূদী (বরিশাল) মুফতি বশির উল্লাহ, মাওলানা ফেরদাউসুর রহমান, মাওলানা আব্দুল বছির (সুনামগঞ্জ), মাওলানা শাহীনুর পাশা চৌধুরী, মাওলানা জামিল আহমদ আনসারী (মৌলভীবাজার), মাওলানা বশির উদ্দিন (নরসিংদী), মাওলানা আব্দুর রহিম, মুফতি রফিকুল ইসলাম, মাওলানা বশির আহমদ (সৈয়দপুর,মুন্সিগঞ্জ), মাওলানা খলিলুর রহমান, মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ সাদী (ময়মনসিংহ), মাওলানা মাহবুব উল্লাহ, মাওলানা নুরুল আবসার মাসুম, মাওলানা আবুল কাশেম (জামালপুর), মুফতি শামসুদ্দিন, মাওলানা মুহাম্মদুল্লাহ খান, মুফতি আবু তাহের (নেত্রকোনা), মুফতি মুহাম্মদুল্লাহ জামী (কিশোরগঞ্জ)

মাওলানা আতাউর রহমান কাসেমী, মাওলানা লোকমান মাযহারী (কুমিল্লা), মুফতি শামসুল ইসলাম জিলানী, মাওলানা শাহজালাল, মাওলানা আব্দুল আজিজ (টাঙ্গাইল), মাওলানা ইয়াসিন, মাওলানা হেলাল উদ্দিন (ফরিদপুর), মুফতি কামরুজ্জামান, হাফেজ মাওলানা দেলোয়ার, মাওলানা সাখাওয়াত হোছাইন (খুলনা), মুফতি শহিদুল ইসলাম, মুফতি নজরুল ইসলাম (সিরাজগঞ্জ), মাওলানা আব্দুর রউফ, মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস মিরপুর-১৪, মাওলানা নূর মোহাম্মদ (মিরপুর), মাওলানা আলী আকবর (সাভার), মাওলানা আব্দুল খালেক শরিয়তপুরী, মাওলানা সুলাইমান নোমানী, মাওলানা আজিমুদ্দিন, মুফতি মুজিবুর রহমান প্রমুখ।

মাওলানা আবদুল লতিফনেজামীর মৃত্যুতে নেজামে ইসলাম পার্টির শোক প্রকাশ

0

দেশের প্রবীণ ইসলামী রাজনীতিবিদ মাওলানা আবদুল লতিফ নেজামীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির আমীর মাওলানা সরওয়ার কামাল আজিজী ও মহাসচিব মাওলানা মুসা বিন ইজহার।

এক যৌথ শোকবার্তায় দলের আমীর ও মহাসচিব বলেন, মাওলানা আবদুল লতিফ নেজামী ছিলেন দেশের বর্ষিয়ান রাজনীতিবিদদের অন্যতম একজন। তিনি ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি একটা সময় মুফতী আমিনী রহঃ, শাইখুল হাদীস আল্লামা আজিজুল হক রহঃ ও মুফতী ইজহারুল ইসলাম চৌধুরী প্রমুখদের মত অভিজ্ঞদের সাথেও রাজনীতি করেছেন। সহজ, সরল ও সাদাসিধা জীবন যাপনে ছিলেন অভ্যস্ত আমরা তার বিদেহী আত্নার মাগফিরাত কামনার পাশাপাশি শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।

মহান বদর যুদ্ধ প্রমাণ করে রমজান মুসলমানদের বিজয়ের মাস

0

মূল: ড. আলী মুহাম্মাদ সাল্লাবি
অনুবাদ: নাহিয়ান হাসান


মহান বদর যুদ্ধে মুসলমানদের বিজয়ের ধারাটি ছিল রমজান মাসে বিজয় পরিক্রমার প্রারম্ভিকতা। রমজান বিজয়, সাহায্য, কল্যাণ এবং ক্ষমতায়নের মাসও বটে। কেননা এই মাসে ঈমানী মূল্যবোধ ও উচ্চমানের নৈতিকতার যা কিছুই রয়েছে তা মুসলমানদের সাথে এমন ধৈর্যের সন্নিবেশ ঘটায় যা নিরবিচ্ছিন্ন। তা এমন সংকল্পের সমাহার ঘটায় যা শেষ হওয়ার নয় এবং এমন পদক্ষেপ নিতে উদ্ভুদ্ধ করে যার কোনো সীমারেখা নেই। আর যদি আপনি রমজান মাসে ঘটে যাওয়া মুসলিম ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাবলীর কথা স্মরণ করেন তবে প্রথমেই প্রত্যেক মুসলমানের অন্তরে যে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাটির কথা স্মরণে আসে তা হল, মহান বদরের যুদ্ধ। যে যুদ্ধে মুসলমানেরা হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নেতৃত্বে কাফেরদের সেনাবাহিনী ও কুরাইশদের বাতিল নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে বিজয় লাভ করেছিল।

যুদ্ধের ইতিহাস ও তা সংঘটিত হওয়ার স্থান:

মহান বদরের যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল দ্বিতীয় হিজরির ১৭ই রমজান সোমবার সকালে ঐতিহাসিক ‘বদর প্রান্তরে’। বাণিজ্যিক কাফেলাগুলোর জন্য সে জায়গাটি ছিল শাম অভিমুখে সফর করার এবং পবিত্র মক্কা নগরীতে ফিরে আসার একধরনের স্টেশন বা মূলকেন্দ্র। এর ভৌগোলিক অবস্থান মক্কা ও মদিনার মাঝামাঝি সাফরা উপত্যকার নিম্নাঞ্চলে হওয়ায় আরবের প্রসিদ্ধ বাজারগুলোর একটি বাজার হতে একে সাহায্য করেছে।

যুদ্ধের কারণ:

মুসলমানেরা মুশরিকদের পূর্বেই বদরের প্রান্তরে পৌঁছে গিয়েছিল এবং হাব্বাব ইবনে মুনজির রাদিয়াল্লাহু আনহু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বদর প্রান্তরের পানির স্থানকে নিজেদের পশ্চাতে রাখার পরামর্শ দিয়েছিলেন। আর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার পরামর্শ কবুল পূর্বক তার মতানুসারে ব্যবস্থা গ্রহণ করলেন।

মাদানি যুগে জিহাদের অনুমতি লাভের পর মুসলমানদের কাছে কুরাইশদের একটি বড় কাফেলার গতিবিধির খবর পৌঁছে যে কাফেলাটি প্রচুর পরিমাণে খাদ্যসামগ্রী ও ধন-সম্পদ বোঝায় করে আবু সুফিয়ান এবং সাখার ইবনে হারবের নেতৃত্বে শাম থেকে মক্কায় ফিরে আসছিল। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সাহাবীদেরকে বের হওয়ার নির্দেশ দিলেন এবং সাহাবায়ে কেরামগণ আওয়ালীর বাসিন্দাদের জন্য অপেক্ষা করা ছাড়াই তখন যারা প্রস্তুত ছিল তাদের সাথে নিয়ে দ্রুত বেরিয়ে গিয়েছিলেন যাতে তারা সেই কুরাইশী কাফেলাকে হারিয়ে না ফেলেন। একারণেই মুসলমানেরা বদরের যুদ্ধে পরিপূর্ণ সামরিক শক্তি নিয়ে বের হতে পারে নি। তারা কাফেলাকে ধরতে বের হয়েছিলেন। কুরাইশের সেনাবাহিনীর মুখোমুখি হওয়ার খেয়াল তাদের ছিলো না।

মুসলমানদের মধ্যে তিন শত তের জন লোকের একটি দল বের হয়েছিল। তাদের মধ্যে প্রায় ২৪০ দুই শত চল্লিশ জন ছিলেন মদিনার আনসারী সাহাবী। তাদের সাথে শুধুমাত্র ২জন ঘোড়সওয়ারী ছিলেন আর ছিল ৭০ সত্তরটি উট যেগুলোতে তারা পর্যায়ক্রমিক পালা অনুসারে আরোহন করছিলেন। কাফেলা জব্দ করতে মুসলমানদের বের হওয়ার খবর ‘আবু সুফিয়ান’ জেনে গিয়েছিলেন ফলে তিনি পথ পরিবর্তন করে উপকূলবর্তী রাস্তা অবলম্বন করে সাহায্যের জন্য মক্কার কুরাইশদের একত্রিত করতে একজন দূত পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। কুরাইশরা তখনই তাদের কাফেলাকে রক্ষা করার জন্য বেরিয়ে পরতে প্রস্তুত হয়ে গিয়েছিল এবং তারা তাদের সমস্ত শক্তি একত্রিত করে ফেলেছিল। তাদের মধ্যে খুব কমসংখ্যক লোকই এতে দ্বিমত পোষণ করেছিল। কুরাইশরা মুসলমানদের এই দুঃসাহসিকতাকে নিজেদের অবস্থানকে হীন করা, প্রভাবপ্রতিপত্তিকে অপমানিত করা ও অর্থনৈতিক স্বার্থে আঘাত হিসেবে বিবেচনা করেছিল। ফলে তাদের যোদ্ধার সংখ্যা প্রায় ১০০০ এক হাজারে পৌঁছেছিল। এবং তাদের সাথে ছিল ২০০ দুই শত ঘোড়সওয়ার যারা অগ্রভাগে থেকে তাদেরকে নেতৃত্ব দিচ্ছিল।

যুদ্ধ শুরুর আগের ঘটনা:

কাফেলা বেঁচে যাওয়ার পর যুদ্ধে যাতে দুপক্ষের মাঝে যাতে বিদ্রোহের সূত্রপাত না হয় তা নিয়ে পরামর্শ করার সময় মুশরিকদের দলে ‘মুসলমানদের সাথে যুদ্ধ না করে ফিরে যেতে যারা ইচ্ছুক’ ও আবু জাহেলের মতো যারা মরণপণ লড়াইয়ে প্রস্তুত তাদের মাঝে মতানৈক্য দেখা দেয়। কিন্তু পরিশেষে আবু জাহেলের মতামতকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছিল। কুরাইশদের কাফেলা ছেড়ে পালানো উদ্দেশ্য ছিল না বরং উপকূলবর্তী পথ অবলম্বন করে সাহায্য প্রাপ্ত হয়ে মুসলমানদেরকে সাজা দেওয়া এবং বাণিজ্যিক পথটি নিরাপদ করে পুরো আরববাসীদেরকে কুরাইশদের শক্তিসামর্থ্য ও আত্মমর্যাদা সম্পর্কে বার্তা দেওয়াই ছিল তাদের প্রধান উদ্দেশ্য। যখন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট সংবাদ এলো যে সেই বৃহৎ কাফেলাটি জব্দ হওয়া থেকে বেঁচে গিয়েছে এবং তার(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের) সাথে যুদ্ধের জোর প্রস্তুতি নিচ্ছে তখন তিনি তার সকল সাহাবিদের সাথে একটি বৈঠক করেন এবং খাস আনসারী সাহাবায়ে কেরামের সামনে বক্তব্য রাখেন। অতপর মুহাজিরদের মধ্যে আবু বকর সিদ্দিক, ওমর ইবনুল খাত্তাব ও মিকদাদ ইবনে আমর (রিদওয়ানুল্লাহি আলাহিম) কথা বলেন। তারা অত্যন্ত চমৎকার কথা বলেছিলেন। সাদ ইবনে মুআজ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মানসা বুঝতে পেরেছিলেন এবং তিনিও অত্যন্ত চমৎকার কথা বলেছিলেন। অতপর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাদ ইবনে মুআজ (রাঃ) এর কথায় অত্যন্ত আনন্দিত হয়েছিলেন।

যুদ্ধকালীন ঘটনা ও যুদ্ধের সূচনা:

মুসলমানেরা মুশরিকদের পূর্বেই বদরের প্রান্তরে পৌঁছে গিয়েছিলেন এবং সাহাবী হাব্বাব ইবনে মুনজির(রাঃ) রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বদর প্রান্তরের পানির স্থানকে নিজেদের পশ্চাতে রাখার পরামর্শ দিয়েছিলেন। তখন রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার পরামর্শ কবুল করে নিয়ে জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণ করলেন। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যুদ্ধের সকালে বদর প্রান্তরের যোদ্ধাদের নাম স্পষ্ট করে দিতেন। তিনি বলতেন, ইনশাআল্লাহ আগামীকাল যুদ্ধের দিনটি অমুক যোদ্ধার এবং ইনশাআল্লাহ অমুক দিনটি অমুক যোদ্ধার এবং তিনি তার সৈন্যদলকে কয়েক কাতারে সারিবদ্ধ করতেন। এবং সাদ ইবনে মুআজ (রাঃ) এর পরামর্শে তিনি সারিবদ্ধ সেনাদলের কেন্দ্রবিন্দু (আরিশে) অবস্থান করে যুদ্ধ পরিচালনা করতেন। তখন তিনি আপন রবের নিকট এতো বেশি দোয়া করতেন যে তার চাদর মোবারক খুলে পরে যেতো। তারপর আবু বকর সিদ্দিক(রাঃ) এসে বলতেন, হে আল্লাহর রাসুল! আপনার রবের কাছে আপনি যথেষ্ট প্রার্থনা করেছেন। নিশ্চয় তিঁনি আপনাকে দেওয়া তাঁর প্রতিশ্রুত বিনিময় দিবেন। অতপর মহাপরাক্রমশালী আল্লাহ তায়ালা এই আয়াত নাজিল করেন,
(إِذْ تَسْتَغِيثُونَ رَبَّكُمْ فَٱسْتَجَابَ لَكُمْ أَنِّي مُمِدُّكُمْ بِأَلْفٍ مِّنَ ٱلْمَلاۤئِكَةِ مُرْدِفِينَ)আনফাল:৯

তারপর নবী(সাঃ)
{سَيُهْزَمُ ٱلْجَمْعُ وَيُوَلُّونَ ٱلدُّبُر}[ক্বমার:৪৫]

এই আয়াতটি বলতে বলতে তাবু থেকে বের হয়ে যান।

এবং তিনি মুশরিকদের মুখ লক্ষ্য করে কঙ্কর নিক্ষেপ করেন। এ ব্যাপারে আল্লাহ পাক কোরআনে কারীমে উল্লেখ করেন,
{وَمَا رَمَيْتَ إِذْ رَمَيْتَ وَلَـٰكِنَّ ٱللَّهَ رَمَىٰ} [আনফাল:১৭]

উতবা ইবনে রবীয়াহ সামনে অগ্রসর হওয়ার মাধ্যমে যুদ্ধের সূচনা হয়। তার দেখাদেখি তার ছেলে ওয়ালিদ এবং আপন ভাই শাইবাও সামনে অগ্রসর হয় এবং দুজনেই তাদের সাথে লড়াই করার জন্য বিপক্ষের সাহসীদের চ্যালেঞ্জ জানাতে থাকে। আনসারীদের কিছু নওজোয়ান সামনে অগ্রসর হলে তারা তাদের সাথে লড়াই করতে অস্বীকৃতি জানায় এবং তাদের চাচাদের গোত্রের বংশধরদের সাথে লড়াইয়ে প্রত্যাশী বলে জানায়। অতপর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আলী ইবনে আবু তালেব, হামজা ইবনে আব্দুল মুত্তালিব এবং উবাইদা ইবনুল হারেস (রিদওয়ানুল্লাহি আলাইহিম) কে লড়াইয়ের আদেশ দেন। তখন হযরত হামজা(রাঃ) উতবাকে এবং হযরত আলী(রাঃ) শাইবাকে হত্যা করে ফেলেন। হযরত উবাইদা(রাঃ) ও ওয়ালিদের মাঝে প্রচন্ড লড়াই হয় তারা দুজনের লড়াই ফলাফল শূন্য থেকে যায়। তারপর হযরত আলী ও হামজা (রাঃ) ওয়ালিদের দিকে এগিয়ে যায় এবং তাকে হত্যা করে এবং তারা হযরত উবাইদা(রাঃ)কে বহন করে নিয়ে আসে। এই লড়াইয়ের ফলাফল কুরাশদেরকে খুব বিচলিত করে ফেলে এবং শুরু হয় মুহুর্মুহু আক্রমণ। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবাদের আদেশ দিয়েছিলেন তারা যেনো মুশরিকদেরকে তীর নিক্ষেপ করে যদি তারা তীরের নাগালে মুসলমানদের কাছাকাছি চলে আসে।

মুসলিমরা আরব উপদ্বীপের অভ্যন্তরে ও বাইরে সামরিক দক্ষতা এবং যুদ্ধের নতুন পদ্ধতিতে ব্যাপক খ্যাতি অর্জন করেছিল। আবু জাহল বিন হিশাম এবং উমাইয়া বিন খালাফ নিহত হওয়া ছাড়াও কুরাইশদের ক্ষয়ক্ষতির পাল্লা অনেক ভারী ছিল।

অতপর উভয় দল ব্যাপকভাবে ঘোরতর যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে যায়। যুদ্ধের দিন আল্লাহ তায়ালা মুসলমানদেরকে ফেরেশতা মারফত সাহায্য করেছিলেন। কোরআনে কারীমে আল্লাহ পাক বলেন,
{إِذْ تَسْتَغِيثُونَ رَبَّكُمْ فَٱسْتَجَابَ لَكُمْ أَنِّي مُمِدُّكُمْ بِأَلْفٍ مِّنَ ٱلْمَلاۤئِكَةِ مُرْدِفِينَ * وَمَا جَعَلَهُ ٱللَّهُ إِلاَّ بُشْرَىٰ وَلِتَطْمَئِنَّ بِهِ قُلُوبُكُمْ وَمَا ٱلنَّصْرُ إِلاَّ مِنْ عِندِ ٱللَّهِ إِنَّ ٱللَّهَ عَزِيزٌ حَكِيمٌ} [আনফাল:৯-১০].

মুখোমুখি তুমুল লড়াইয়ে ৭০জন মুশরিককে হত্যা করে মুসলিম বাহিনী। এবং তাদেরকে হত্যা করেছেন ঐ সমস্ত আহলে বদর যোদ্ধা যাদের নাম রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যুদ্ধের পূর্বে ঘোষণা করে স্পষ্টভাবে বলে দিয়েছিলেন। তাদের মধ্য হতে কেউই রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নির্ধারণ করা লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হন নি। আর তারা যাদেরকে হত্যা করেছিলেন তাদের মধ্যে কিছু ছিল কুরাইশদের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ। আর তারা হল,,আবু জাহেল,,আমর ইবনে হিশাম। আবু জাহেলকে মোয়াজ ইবনে আমর ইবনুলজুমুহ এবং মুয়াজ ইবনে আফরা নামী দুজন অপ্রাপ্তবয়স্ক দুঃসাহসী সাহাবী হত্যা করেছিলেন তবে আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ(রাঃ) তাকে চূড়ান্তভাবে নিঃশেষ করে দেন। হযরত বেলাল ইবনে রাবাহ(রাঃ) আনসারীদের একটি দল ও অন্যান্যদেরকে সাথে নিয়ে উমাইয়া ইবনে খালফ ও তার পুত্রকে হত্যা করেছিলেন। অতপর রাসুল (সাঃ) মৃত মুশরিকদেরকে বদর প্রান্তরের কূপসমূহে অপসারণ করার নির্দেশ দিলে সাহাবায়ে কেরাম তাদের লাশগুলো সেখানে নিক্ষেপ করেন। কুরাইশদের বন্দী সংখ্যাও ছিল ৭০ সত্তর জন আর বাকি মুশরিকরা যুদ্ধের ময়দান ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিল। তারা যুদ্ধের ময়দান ছেড়ে পালানোর সময় প্রচুর গণিমতের মাল রেখে গিয়েছিল এমনকি তারা একটিবারের জন্যেও পিছন ফিরে তাকানোর সাহস পায়নি। পরবর্তীতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুসলিমদের শহীদদেরকে দাফন করেন। আর মুসলিমদের পক্ষে শহীদ হয়েছিলেন ১৪ চৌদ্দ জন সাহাবী।

যুদ্ধের ফলাফল:

অবশেষে মুসলমানদের গোড়া পাকাপোক্ত হল। এবং গোটা আরব উপদ্বীপে তারা হয়ে উঠল অন্যতম পরাশক্তি। এতে মদিনায় রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অবস্থান আরো মজবুত হয়। সেখানে ইসলামের নক্ষত্র আরো উপরে উন্নীত হয়।

যারা নতুন দ্বীনের আহবানে সন্দেহবাদী তারা সন্দেহ পোষন করতে, মদিনার মুশরিকরা তাদের কুফুরী প্রকাশ করতে ও ইসলামের বিরুদ্ধে শত্রুতা পোষণ করার দুঃসাহস করেনি। ফলে কপটতা, ষড়যন্ত্র এবং ধোকাবাজি প্রকাশ পেল। তারা নবী ও সাহাবীদের সামনে ইসলাম জাহির করতো। আল্লাহ ও তার রাসুলের প্রতি মুসলমানদের বিশ্বাস দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছিল, মুশরিকীনে কুরাইশদের মধ্য হতে বেশকিছু লোক ইসলামের ছায়াতলে প্রবেশ করেছিলেন। এগুলোর ফলে যারা তখনো মক্কায় রয়ে গিয়েছিলেন তাদের হিম্মত বাড়তে থাকে, তাদের অন্তরাত্মা আল্লাহ’র সাহায্যের আনন্দে ভরে উঠতে থাকে। তারা ভিতরে ভিতরে আশ্বস্ত হচ্ছিলেন যে বিজয় অতি সন্নিকটে। তাদের ঈমান আরো দৃঢ় হতে থাকে এবং তারা তাদের একত্ববাদের ঈমানে অটল থাকে।

মুসলিমরা আরব উপদ্বীপের অভ্যন্তরে ও বাইরে সামরিক দক্ষতা এবং যুদ্ধের নতুন পদ্ধতিতে ব্যাপক খ্যাতি অর্জন করেছিল। আবু জাহল বিন হিশাম এবং উমাইয়া বিন খালাফ, উতবা ইবনে রবীয়াহ ছাড়াও আরো কাফের নেতৃবৃন্দ যারা ছিল কুরাইশদের মধ্যে অত্যাধিক সাহসী, শক্তিশালী ও প্রভাবশালী তারা নিহত হওয়া ছাড়াও কুরাইশদের ক্ষয়ক্ষতির পাল্লা অনেক ভারী ছিল। এই পরাজয়ের ফলে মুশরিকীনে কুরাইশদের শুধুমাত্র যুদ্ধলব্ধ ক্ষতিই হয়নি বরং এই যুদ্ধের ফলে তাদের নৈতিক পরাজয়ও ঘটেছিল। আর তা হল, এই পরাজয় শুধুমাত্র উক্ত অঞ্চলে তাদের বাণিজ্যকে হুমকিতে ফেলেনি বরং সমগ্র হেজাজে তাদের নেতৃত্ব ও কর্তৃত্বকে ফেলে দিয়েছিল হুমকির মুখে। এ কারণেই আল্লাহ পাক উক্ত দিনটিকে ‘ইয়াওমুল ফুরকান’ তথা সত্য-মিথ্যার মাঝে পার্থক্যের দিন নামে পবিত্র কোরআনে পাকে অভিহিত করে বলেন,
{وَمَآ أَنزَلْنَا عَلَىٰ عَبْدِنَا يَوْمَ ٱلْفُرْقَانِ يَوْمَ ٱلْتَقَى ٱلْجَمْعَانِ} [আনফাল:৪১]

এই যুদ্ধের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা হক এবং বাতিলের মাঝে পার্থক্য স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন। এবং তিঁনি হকের কালিমাকে বাতিলের কালিমা থেকেও সুউচ্চে উন্নীত করেছেন, তাঁর দ্বীনকে প্রকাশ করে দিয়েছেন এবং তাঁর নবী ও তার যোদ্ধাদেরকে সাহায্য করেছেন।

  • ১~ইমাম তাবারী: তারীখুল উমাম ওয়ার রুসুল ওয়াল মুলূক যা তারীখে তাবারী নামে প্রসিদ্ধ। খঃ২য়। পৃঃ৪০৪।
  • ২~আলী সাল্লাবী: ‘আস সীরাতুন নাবাওয়িইয়্যাহ’ এবং ‘আরজু ওয়াকাইয়ীন ওয়া তাহলীলু আহদাসীন’। পৃষ্ঠা নং যথাক্রমে ৫৫৩ এবং ৫৯০।
  • ৩~মোহাম্মদ আল আবেদ: হাদিসুল কোরআনী আন গাজওয়াতী রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। খঃ১ম। পৃঃ ৯১-৯৯।
  • ৪~মাহমুদ শিত খাত্তব: গাজওয়াতু বদরিল কুবরাল হাসিমাহ। পৃঃ২৩-২৪।
  • ৫~ইমাম মুসলিম: সহীহ মুসলিম।অধ্যায়, কিতাবুল জিহাদ ওয়াস সিয়ার। বাব,ফেরেশতা কর্তৃক বদর যুদ্ধে সাহায্য ও গণিমতের সম্পদের বৈধতার আলোচনা।খঃ৩য়। পৃঃ ১৩৮৪।
  • ৬~মাহদী রিজকুল্লাহ আহমদ: আস সীরাতুন নাবাওয়িইয়াতু আলা দূয়িল মাসাদিরিল আসলিয়্যাহ। অধ্যায়, দিরাসাতু তাহলীলিয়্যাহ।
  • ৭~ইয়াকুত আল হামাওয়ি: মু’জামুল বুলদান। খঃ ১ম। পৃঃ৩৫৭।

সর্বোচ্চ: দেশে একদিনে ১০৩৪ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত

0

দেশে ২৪ ঘন্টায় আরও ১০৩৪ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।

এনিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ১৫৬৯১ জনে।

সোমবার বিকালে স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য তুলে ধরেন অধিদফতরটির অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।

এছাড়া, দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১১ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।

এনিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ২৩৯ জনে।

এসময়ের মধ্যে নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৭২০৮টি।

এছাড়া নতুন করে ২৫২ জনসহ মোট ২ হাজার ৯০২ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন।

নতুন গাইডলাইনে দেশে করোনায় সুস্থতার হার ৪০ শতাংশ

0

বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদফতর কোভিড-১৯ থেকে সুস্থ হয়ে ওঠার যে নতুন গাইডলাইন দিয়েছে তা অনুযায়ী মোট সুস্থ হয়েছেন ৫৭৩৮ জন।

সর্বশেষ আপডেট অনুযায়ী আক্রান্ত বলে শনাক্ত হয়েছে ১৪৬৫৭ জন। অর্থাৎ মোট আক্রান্তের চল্লিশ শতাংশ মানুষ সুস্থ হয়ে উঠছেন।

কী সেই গাইডলাইন
বাংলাদেশের ক্লিনিক্যাল ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্য ডা: এম এ ফয়েজ জানিয়েছেন, আগের গাইডলাইন অনুযায়ী কারো মধ্যে যদি করোনাভাইরাস পজিটিভ শনাক্ত হতো তাহলে তার ১৪-২১ দিনের মধ্যে দ্বিতীয় টেস্ট করা হতো।

সেখানে ফলাফল নেগেটিভ এলে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টা অথবা দুই-তিন দিনের মধ্যে আরেকটি টেস্ট করা হতো। সেখানেও ফলাফল নেগেটিভ এলে রোগীকে সুস্থ ঘোষণা করে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেয়া হতো।

এবং বলা হতো তারা যেন আরো ১৪ দিন বাড়িতে কোয়ারেন্টাইনে থাকেন।

তবে নতুন নিয়মে রোগী যদি ক্লিনিক্যালি সুস্থ হয়ে ওঠেন অর্থাৎ পর পর তিন দিন যদি তার আর জ্বর না থাকে, কাশি বা শ্বাসকষ্ট না হয় তাহলে তাকে হাসপাতালে না রেখে বাড়িতে ১৪ দিনের আইসোলেশনে পাঠিয়ে দেয়া হবে।

বাড়ি থেকেই তার পরবর্তী দুটো পরীক্ষা করা হবে। যেটা কিনা আগে হাসপাতালে থেকে করা লাগতো।

হাসপাতালে রোগীর চাপ ক্রমশ বাড়তে থাকায় এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

সূত্র : বিবিসি

এক হাজার তালেবান বন্দিকে মুক্তি দিলো মার্কিন পন্থী আফগান সরকার

0

তালেবান ও আমেরিকার মধ্যে সই হওয়া শান্তিচুক্তির আওতায় এক হাজার তালেবান বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে মার্কিনপন্থী আফগান সরকার। এ ছাড়া আরও ৫০০ তালেবান বন্দিকে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে মুক্তি দেয়া হবে বলে জানিয়েছে আফগান সরকার।

আফগানিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল বা এনএসসির দফতর শনিবার এক টুইটার বার্তায় তালেবান বন্দিদের মুক্তির বিষয়টি ঘোষণা দিয়ে জানিয়েছে, আফগানিস্তানে শান্তি প্রক্রিয়ার যথাযথ পরিবেশ সৃষ্টি করার পাশাপাশি দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মনোযোগ দিতে প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনির নির্দেশে তালেবান বন্দিদের মুক্তি দেয়া হয়েছে।

এনএসসি আরও বলেছে, কাবুল সরকার প্রত্যাশা করছে– এর বিনিময়ে তালেবানও আফগানিস্তানের জাতীয় প্রতিরক্ষা এবং নিরাপত্তা বাহিনী বা এএনডিএসএফের সদস্যদের অবিলম্বে মুক্তি দেবে এবং আন্তঃআফগান সংলাপের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুতি নেবে। এ ক্ষেত্রে কোনো রকম বিলম্ব করা হবে চুক্তির বরখেলাপ।

বেশ কয়েকবার ভেস্তে যাওয়ার পর গত ২৯ ফেব্রুয়ারি তালেবান ও মার্কিন সরকারের মধ্যে শান্তিচুক্তি সই হয়। কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যে সে চুক্তি ঝুঁকির মুখে পড়ে।

ওই চুক্তিতে ৫ হাজার তালেবান বন্দি মুক্তির কথা বলা হয়েছে; কিন্তু মার্কিনপন্থী  আফগান সরকার নিজেদের অস্তিত্বের জানান দিতে বন্দিদের মুক্তি দেয়ার ব্যাপারে বেঁকে বসে।

অন্যদিকে তালেবান বলছে– ওই ৫ হাজার বন্দিকে মুক্তি দিলেই শুধু তারা আফগান সরকারের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় বসবে।

করোনা পরবর্তী মাদরাসা শিক্ষা ব্যবস্থাপনা বিষয়ক জাতীয় অনলাইন সেমিনার আগামীকাল

0

আগামীকাল মঙ্গলবার (১২ মে)  সেমিনার করোনাভাইরাস পরবর্তী বেসরকারি মাদরাসা শিক্ষা ব্যবস্থাপনা বিষয়ক জাতীয় অনলাইন অনুষ্ঠিত হবে।

সেমিনারটি আয়োজন করেছে মারসুস সহযোগিতায় দেশের প্রথম ইসলামী ঘরানার অনলাইন পত্রিকা ইনসাফ।

বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ এর মহাপরিচালক অধ্যাপক মাওলানা যুবাইর আহমাদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ এর সহ-সভাপতি আল্লামা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী।

প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন বিশিষ্ট কলামিস্ট ও ইসলামী বিশেষজ্ঞ শায়খ প্রফেসর ডঃ আ.ফ.ম.খালিদ হোসাইন।

আলোচক হিসেবে থাকবেন শায়খ যাকারিয়া ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার এর মহাপরিচালক মুফতী মিজানুর রহমান সাঈদ,  জামিয়াতুল আল ইসলামিয়া লালখান বাজার মাদরাসা, চট্টগ্রাম এর নির্বাহী পরিচালক শায়খ মুফতী হারুন ইজহার, জামেয়া রহমানিয়া, ঢাকা এর শাইখুল হাদিস মাওলানা মামুনুল হক, বাইতুল মামুর জামে মসজিদ এর খতিব মাওলানা হাসান জামিল,  প্রফেসর ড. আবু ইউসুফ খান (তামিরুল মিল্লাত), ড. আ.খ.ম আবু বকর সিদ্দিক (দারুন্নাজাতের অধ্যক্ষ), প্রফেসর এ.কে.এম. আবদুল মান্নান, হেড মাওলানা,ঢাকা আলিয়া। সেমিনারে মডারেটর হিসেবে থাকবেন আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশেষজ্ঞ, ইংল্যান্ড শায়খ ড. আব্দুস সালাম আযাদী মাদানী।

সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য রাখবেন ইবরাহিম খলিল, কোঅর্ডিনেটর , মারসুস। ধন্যবাদ জ্ঞাপন জামিয়া আশরাফিয়া কামরাঙ্গিচর, ঢাকা এর মুহাদ্দিস মাওলানা মুসা বিন ইজহার।

মাওলানা মুহিউদ্দীন খান (রাহ.)এর সহধর্মীনির ইন্তিকালে আল্লামা কাসেমীর শোক

0

বাংলা সাহিত্যের কিংবদন্তীতুল্য সম্পাদক, লেখক, অনুবাদক, প্রাজ্ঞ ইসলামী রাজনীতিবিদ ও আলেম এবং জমিয়তের সাবেক সহসভাপতি মাওলানা মুহিউদ্দীন খান (রাহ.)এর মহীয়সী সহধর্মীনির ইন্তিকালে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ’র মহাসচিব শায়খুল হাদীস আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী।

রোববার (১০ মে) এক শোকবার্তায় জমিয়ত মহাসচিব বলেন, মরহুম মাওলানা মুহিউদ্দীন খান (রাহ.) শিক্ষা জীবন শেষে পুরো যিন্দেগীই বিভিন্ন পর্যায়ে ইসলামের খেদমতে ব্রত ছিলেন। এ সময় তাঁকে অনেক কঠিন ও জটিল পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছে। দ্বীনের প্রয়োজনে দেশ-বিদেশেও প্রচুর সফর করতে হয়েছে। অনেক সময় দিনের পর দিন ঘরের বাইরে কর্মব্যস্ত থাকতে হয়েছে। মরহুম মাওলানা খান সাহেবের কাছ থেকে যতটা জেনেছি, এ সময়ে তার মরহুমা জীবনসঙ্গীনি সবসময় যেমন তাঁকে প্রেরণা ও সাহস যোগাতেন, তেমনি অত্যন্ত দায়িত্বশীলতার সাথে পরিবার সামলানো ও সন্তানদের অভিভাবকত্বের দায়িত্ব সুচারুরূপে পালন করেছেন। যার ফলে মাওলানা মুহিউদ্দীন খান (রাহ.)এর যোগ্য উত্তরসুরী হিসেবে তাঁর সন্তানরাও দক্ষতার সাথে কর্মজীবন ও জাতীয় পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। যে কারণে এই মহিয়সী নারী একজন ‘রত্নগর্ভা মা’ হিসেবেও সমাদৃত।

আল্লামা কাসেমী মরহুমাকে মাগফিরাত এবং জীবনের নেক আমলসমূহ কবুল করে তাঁকে জান্নাতুল ফিরদাউসে স্থান দান করার জন্য মহান আল্লাহর কাছে বিশেষভাবে দোয়া করেন।

জমিয়ত মহাসচিব মরহুমার শোক-সন্তপ্ত পরিবার-পরিজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়ে শোকবাণীতে বলেন, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা তাদের সকলকে এই কঠিন বেদনাকাতর শোকে সবরে-জামিল অবলম্বনের তাওফিক দান করুন।

উল্লেখ্য, মাওলানা মুহিউদ্দীন খান (রাহ.)এর সহধর্মীনি আজ রোববার বিকেল ৪টা ১০ মিনিটে গেন্ডারিয়ার নিজ বাসভবনে ইন্তিকাল করেছেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। মৃত্যুর সময়ে তাঁর বয়স হয়েছিলো ৮০ বছর।

তিনি দীর্ঘদীন কিডনীর রোগে আক্রান্ত ছিলেন বলে জানা গেছে। পাঁচ সন্তানের জননী মরহুমার গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহ জেলায়। পরিবারের পক্ষ থেকে দেশবাসীর কাছে মরহুমার রূহের মাগফিরাত কামনা করা হয়েছে।

মাওলানা মুহিউদ্দীন খান রহ. এর সহধর্মীনির ইন্তিকাল করেছেন

0

বাংলায় সীরাত সাহিত্যের জনক মাসিক মদীনার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক মাওলানা মুহিউদ্দীন খান রহ. এর সহধর্মীনি ইন্তিকাল করেছেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।

আজ রোববার বিকেল ৪.২০ মিনিটে উনার নিজ বাড়ি গ্যান্ডারিয়াতে ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালীন তার বয়স হয়েছিলো ৮০ বৎসর।

মাওলানা মুহিউদ্দীন খান রহ. এর ছোট ছেলে মাসিক মদীনার সম্পাদক মাওলানা আহমদ বদরুদ্দীন খান স্বাক্ষরিত এক বিবৃতি এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

এর আগে ফেব্রুয়ারি মাসের ২৫ তারিখে গুরুতর অসুস্থ হলে তাকে চিকিৎসার জন্য ঢাকার পান্থপথের সমরিতা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।