সিনাই উপদ্বীপে এস-৪০০ সমপর্যায়ের উন্নত চীনা আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মোতায়েন করেছে মিশর।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) মিডল ইস্ট মনিটরের এক প্রতিবেদনে একথা জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরাইল কর্তৃক নিজ দেশে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় সিনাই উপদ্বীপের কৌশলগত স্থানে চীনের এইচকিউ-৯বি মডেলের দীর্ঘ-পাল্লার উন্নত আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মোতায়েন করেছে মিশর।
ইসরাইলী সংবাদমাধ্যমের তথ্যমতে, মিশরের এই পদক্ষেপ অবৈধ রাষ্ট্রটির জন্য নতুন উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। নতুন ফ্রন্টে সামরিক উত্তেজনার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
ইতোপূর্বে অবৈধ রাষ্ট্রটির সংবাদমাধ্যমগুলোতে এ বিষয়ে সতর্ক করে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিলো। যেখানে বলা হয়েছিলো, মিশর চীনের কাছ থেকে এস-৪০০ সমমানের এইচকিউ-৯বি উন্নত আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা অর্জন করতে যাচ্ছে।
মিশরের প্রতিরক্ষামন্ত্রী আব্দুল মাযেদ সাকর সম্প্রতি জোর দিয়ে বলেছেন যে, সামরিক প্রস্তুতি কেবল মনোবলের ব্যাপার নয়, বরং স্থলপথে যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলার প্রকৃত প্রস্তুতি।
তিনি ইসরাইল ও তার দোসরদের সতর্ক করে বলেন, মিশরের সীমান্ত দুর্বল করার যে কোনো প্রচেষ্টা, এমনকি ভাবনাটুকুও বিশ্বকে বিস্মিত করবে। আমাদের হাতে এমনই কিছু রয়েছে এবং যা এখনো প্রকাশ পায়নি।
মিশরের উন্নত আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মোতায়েনের পদক্ষেপ এমন সময়ে এসেছে, যখন ইসরাইলের গণহত্যামূলক গাজ্জা যুদ্ধ মিশরেও ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফিলিস্তিনিদের ব্যাপকভাবে সিনাইয়ে বাস্তুচ্যুত করার ইসরাইলী প্রচেষ্টাকে কায়রো লাল রেখা হিসেবে দেখছে। এইচকিউ-৯বি মোতায়েনের মাধ্যমে স্পষ্ট বার্তা দিচ্ছে যে, প্রতিরোধ এবং সম্ভাব্য হুমকির জবাব দেওয়ার পূর্ণ ক্ষমতা রয়েছে তাদের।
চীনের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা মডেলগুলোর সর্বশেষ সংস্করণ হলো এইচকিউ-৯বি মডেলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। যা ২০০ কিলোমিটার পর্যন্ত ক্ষেপণাস্ত্র হামলার বিরুদ্ধে সুরক্ষা দিতে সক্ষম। এটি যুদ্ধবিমান, ড্রোন ও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রও অনায়াসে আটকানোর ক্ষমতা রাখে। এর উন্নত রাডার তীব্র ইলেকট্রনিক জ্যামিংয়ের মধ্যেও ৩০০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তু শনাক্ত করতে পারে। এর নমনীয় নকশা স্থানান্তরযোগ্য ট্রাকের পাশাপাশি স্থায়ীভাবে ঘাঁটিতেও মোতায়েনের সুবিধা দেয়, যা বিমান ও নৌ-বন্দর এবং সামরিক ঘাঁটি সুরক্ষিত করতে পারে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মিশরের সেনাবাহিনী উত্তর সিনাইতে ব্যাপকভাবে সেনা উপস্থিতি বাড়িয়েছে, যেখানে কয়েক দশক হাজার সৈন্য ও হাজার হাজার ভারী যান মোতায়েন করা হয়েছে। মিশরের এ সামরিক শক্তিবৃদ্ধি ও আধুনিকায়ন নিয়ে ইসরাইল অস্বস্তিও প্রকাশ করে।
আঞ্চলিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এটি কৌশলগত ভারসাম্য নতুন করে গড়ে তুলছে এবং কায়রোর দীর্ঘমেয়াদি প্রতিরক্ষা অবস্থান নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনা তৈরি করছে।