শনিবার | ২০ সেপ্টেম্বর | ২০২৫

আল্লামা বাবুনগরীকে জড়িয়ে এমপি নদভীর বক্তব্য উদ্দেশ্যপ্রণোদিত : হেফাজত

শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফী (রহ.)এর জানাযায় অংশগ্রহণ না করে হেফাজত আমীর, হাটহাজারী মাদরাসার শায়খুল হাদীস ও শিক্ষা পরিচালক আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীকে জড়িয়ে জাতীয় সংসদে প্রদত্ত এমপি আবু রেজা নদভী সাহেবের বক্তব্য সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। বাস্তবতার সাথে তাঁর এই বক্তব্যের কোন মিল নেই। বরং শায়খুল ইসলামের জানাযায় অংশগ্রহণ না করা নিয়ে তিনি এ পর্যন্ত ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য দিয়েছেন। এতে প্রমাণিত হয় যে, এমপি সাহেবের বক্তব্য অসত্য ও স্ববিরোধী।

আজ (১৮ জুন) শুক্রবার সংবাদমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ-এর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা মীর ইদরীস নদভী এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, আল্লামা আহমদ শফী (রহ.)এর জানাযায় অংশগ্রহণে কারো জন্য কোনপ্রকারের বাধা ছিলো না। ফলে কোন প্রকারের অনুমতি দেওয়া ও নেওয়ার প্রশ্নই উঠে না। হযরতের জানাযায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা লাখো মুসল্লির নির্বিঘ্নে স্বতস্ফূর্ত উপস্থিতিই ছিল তার জ্বলন্ত প্রমাণ। জানাযায় আইন-শৃঙ্খলার দায়িত্বে ছিল স্থানীয় প্রশাসন। মুসল্লীদের ব্যাপক উপস্থিতির কারণে জানাযায় হযরতের লাশ রাখতে হয়েছিলো মাদরাসা ক্যাম্পাসের বাইরে ডাকবাংলো চত্বরে। স্থানীয় এমপিসহ রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গও উপস্থিত ছিলেন। কী অজানা কারণে আবু রেজা নদভী সাহেব জানাযায় অংশগ্রহণ করেননি, তা আমাদের জানা নেই।

তিনি আরও বলেন, আল্লামা আহমদ শফী (রহ.)এর জানাযায় অংশগ্রহণে সরকারী-বেসরকারী বিধি-নিষেধ না থাকা সত্ত্বেও যে বা যারা অংশ গ্রহণ করেনি, এটা একান্তই তাদের ব্যক্তিগত বিষয়।

বিবৃতিতে মাওলানা মীর ইদরীস নদভী আরও বলেন, আবু রেজা নদভী সাহেব নিজ ইচ্ছায় আল্লামা আহমদ শফী (রহ.)এর জানাযায় অংশগ্রহণ না করে দীর্ঘদিন পর এর দায়ভার আল্লামা বাবুনগরীর উপর চাপানোর অপচেষ্টা করেছেন। অথচ আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীর নয়, বরং আল্লামা আহমদ শফী (রহ.)এর পরিবার ও মাদরাসা কর্তৃপক্ষের তদারকিতেই হযরতের দাফন-কাফন সহ আনুষাঙ্গিক কার্যাদি সম্পন্ন হয়েছে। সুতরাং আবু রেজা নদভী সাহেব জানাযায় অংশগ্রহণ করতে না পারার দায়ভার আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীর উপর চাপানো সম্পূর্ণ পরিকল্পিত ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তাঁর বক্তব্য শুনে মনে হয়েছে তিনি শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করছেন। একজন এমপির মুখে এমন ভিত্তিহীন বক্তব্য খুবই দুঃখজনক।

তিনি বলেন, আবু রেজা সাহেব তার বক্তব্যে বলেছেন- বারবার অনুমতি চাওয়ার পরও তাঁকে জানাযায় অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়া হয়নি। আমাদের প্রশ্ন হলো, তিনি কখন কার কাছে অনুমতি চেয়েছেন? মহান আল্লাহ তায়ালাকে সাক্ষী রেখে এ প্রশ্নের জবাব কি আদৌ তিনি দিতে পারবেন? নাকি রকী বড়ুয়া প্রসঙ্গ এবং আভ্যন্তরীণ অডিও ফাঁস হওয়ার ইস্যুতে নিজের প্রশ্নবিদ্ধ রাজনৈতিক অবস্থানকে ধামাচাপা দিতে অপ্রাসঙ্গিকভাবে হেফাজত ও আল্লামা বাবুনগরীকে ঢাল বানাচ্ছেন- তা আল্লাহ ভালো জানেন।

মাওলানা মীর ইদরীস আরও বলেন, এমপি আবু রেজা নদভী সাহেব একজন বড় মাপের এনজিও ব্যক্তিত্ব। বেশির ভাগ এনজিও ব্যক্তিদের কর্মপদ্ধতি হচ্ছে দেশি-বিদেশি ক্ষমতাধরদের তেল মেরে নিজেদের আখের গোছানো। দেশে কোনো প্রকার অস্থিরতার সৃষ্টি হলে বিদেশে পাড়ি জমানোর জন্য রাস্তা উন্মুক্ত রাখা। যেখানে দেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য হচ্ছে কওমী মাদরাসাসমূহ কোনো প্রকার সন্ত্রাসবাদের সাথে সম্পৃক্ত নয়, সেখানে তিনি কাকে খুশী করার জন্য জঙ্গিবাদের জুজু তুলে খাল কেটে কুমির আনার অপচেষ্টা করছেন, জাতির কাছে এটা রহস্যজনক।

হেফাজতের সাংগঠনিক সম্পাদক আরও বলেন, জাতীয় সংসদের মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় দাঁড়িয়ে দেশের শীর্ষ স্থানীয় সর্বজন শ্রদ্ধেয় আলেম আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীকে নিয়ে একজন এমপির মুখে এমন অবাস্তব বক্তব্যে তৌহিদী জনতা যারপরনাই মর্মাহত হয়েছেন। হেফাজতে ইসলামের পক্ষ থেকে আমি তাঁর এ বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

spot_img
spot_img

এই বিভাগের

spot_img