শিয়াদের পবিত্র আশুরা উদযাপন উপলক্ষে নিরাপত্তা জোরদার করছে ইমারাতে ইসলামিয়া আফগানিস্তান।
বুধবার (২ জুলাই) কাবুল জন-নিরাপত্তা পুলিশের এক বিবৃতিতে একথা জানানো হয়।
বিবৃতিতে কাবুল পুলিশের মুখপাত্র জানান, আশুরার ধর্মীয় অনুষ্ঠানসমূহকে সুরক্ষিত রাখতে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ধর্মীয় কেন্দ্র ও জনসমাগমস্থলের আশপাশে পুলিশের উপস্থিতি বাড়ানো হয়েছে।
কাবুল জন-নিরাপত্তা পুলিশের প্রধান মোল্লা আব্দুর রহিম জাহির জানান, অন্যান্য নিরাপত্তা সংস্থার সাথে সমন্বয় করে পুলিশ টহল জোরদার করেছে। মোবাইল চেকপয়েন্ট স্থাপন করেছে। সংবেদনশীল এলাকায়, বিশেষত ধর্মীয় স্থানগুলোর আশপাশে বিশেষ নজরদারি শুরু করেছে।
এছাড়া নতুন নিরাপত্তা পরিকল্পনার আওতায় কাবুলের বিভিন্ন জেলায় অবস্থিত প্রধান প্রধান ধর্মীয় কেন্দ্রগুলো এখন সার্বক্ষণিক নজরদারির আওতায় রয়েছে। সেখানে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
কাবুলের ৬ষ্ঠ জেলার বাসিন্দা আব্দুল খালেক সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “ধর্মীয় কেন্দ্রগুলোর আশপাশে পুলিশ থাকা আমাদের জন্য স্বস্তিদায়ক। আমরা এখন নিশ্চিন্তে অনুষ্ঠানগুলোতে অংশ নিতে পারি।”
কাবুল পুলিশ স্থানীয় বাসিন্দা ও আশুরা উদযাপনকারীদের প্রতি নিরাপত্তা বজায় রাখার আহবান জানায়। নিরাপত্তা বজায় রাখতে অনুষ্ঠান চলাকালীন সকলের সহযোগিতা কামনা করে। সন্দেহজনক কিছু নজরে পড়লে তাৎক্ষণিক পুলিশকে অবহিত করার পরামর্শ দেয়।
উল্লেখ্য, পবিত্র আশুরা বা মহররম মাসের ১০ তারিখকে বিশেষত শিয়া সম্প্রদায়ের লোকজন বেশ ঘটা পালন করে। দিনটিকে তারা কেবল হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নাতি হযরত হুসাইন (রাদি.) শাহাদাত বার্ষিকী রূপে উদযাপন করে। শোক প্রকাশার্থে তাজিয়া মিছিল বের করে।
তবে আশুরার দিনটি কেবল কারবালায় হযরত হুসাইন (রাদি.)এর শাহাদাতের মাঝে সীমাবদ্ধ নয়, যেমনটি শিয়া সম্প্রদায়ের লোকজন মনে করে থাকে। বরং ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী দিনটির তাৎপর্য এর বিশেষ ফজিলতে এবং বিভিন্ন সময়ে সংঘটিত ঐতিহাসিক ঘটনায়।
আফগানিস্তানের শিয়ারাও অন্যান্য শিয়া সম্প্রদায়ের ন্যায় এই দিনটিকে বেশ ঘটা করে উদযাপন করে থাকে। বিশেষত, কাবুলে আশুরার সবচেয়ে বড় আয়োজন হয়।
সুন্নি মুসলিমরাও আশুরার দিনকে গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। তবে তারা দিনটিকে শিয়াদের মতো নয়, বরং রোজার ন্যায় ইবাদাতের মাধ্যমে দিনটির বিশেষ ফজিলত হাসিল করেন। ইসলামের নানান ঐতিহাসিক ঘটনা স্মরণ করেন। যেমন, মহান আল্লাহ পাক এই দিনটিতেই হযরত মূসা (আ.) ও তার সম্প্রদায়কে ফেরাউনের হাত থেকে রক্ষা করেছিলেন।
সূত্র: বাখতার