কুর্দি বিচ্ছিন্নতাবাদীরা স্বেচ্ছায় অস্ত্র ত্যাগ শুরু করায় তুরস্ককে সন্ত্রাসমুক্ত ঐক্যবদ্ধ রাষ্ট্র ঘোষণা করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান।
শনিবার (১২ জুলাই) আঙ্কারায় একে পার্টির ৩২তম পরামর্শ ও মূল্যায়ন সভায় তিনি এই ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, আজ একটি নতুন দিন। ইতিহাসের একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা। তুর্কী শতাব্দী ও মহান শক্তিশালী তুরস্কের দরজা আজ সম্পূর্ণভাবে উন্মুক্ত হয়েছে। তুরস্ক এখন ঐক্য ও শক্তির এক নতুন যুগে প্রবেশ করছে।
সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কয়েক দশকের যুদ্ধ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শুক্রবার আরম্ভ হওয়া প্রক্রিয়া পিকেকে সন্ত্রাসবাদের ৪৭ বছরব্যাপী অভিশাপের সমাপ্তি বলে আমরা আশাবাদী।
তিনি এই সশস্ত্র গোষ্ঠীর অস্ত্র পরিত্যাগের সিদ্ধান্তকে বিজয় হিসেবে বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, আজ তুর্কি, কুর্দি, আরব আমাদের ৮৬ মিলিয়ন নাগরিকের সবাই বিজয়ী হয়েছে।
খেলাফতকালীন বৃহত্তর আঞ্চলিক ঐক্যের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, এর মধ্যদিয়ে আবার মালাজগিরতের চেতনা, জেরুসালেম জোট ও স্বাধীনতা যুদ্ধের মূল আত্মা পুনর্গঠিত হচ্ছে।
৪০ বছরের সংঘাতের সমাপ্তি ঘটানো ‘সন্ত্রাসমুক্ত ঐক্যবদ্ধ তুরস্ক’ উদ্যোগটি প্রচলিত সমঝোতা, দর কষাকষি কিংবা লেনদেন প্রক্রিয়া থেকে আলাদা ছিলো বলেও জানান।
এছাড়া জাতীয় ঐক্যের উপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, আমাদের সকলের অভিন্ন ঘর ও ছাদ হলো, তুরস্ক প্রজাতন্ত্র। আমরা ৮৬ মিলিয়ন নাগরিক চিরকাল একে অপরের ভাই, এক ও অটুট।
তিনি জানান, সন্ত্রাসমুক্ত ঐক্যবদ্ধ তুরস্কের ব্যপ্তি ইরাক ও সিরিয়ায় বসবাসরত কুর্দি জনগণের দিকেও সম্প্রসারিত হচ্ছে। এর প্রক্রিয়া নিয়ে তাদের সাথেও সক্রিয়ভাবে আলোচনা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
এর আগে শুক্রবার (১১ জুলাই) তুরস্ক সংলগ্ন উত্তর ইরাকের সুলাইমানিয়ায় তুরস্ক কর্তৃক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে বিবেচিত ও আমেরিকা-ইউরোপের সমর্থন পাওয়া কুর্দি বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর সদস্যরা আগুনে অস্ত্র জ্বালিয়ে স্বেচ্ছায় নিজেদের নিরস্ত্রীকরণ প্রক্রিয়া শুরু করে।
প্রাথমিকভাবে ২০-৩০ জনের পিকেকে সদস্য নিজেদের অস্ত্র জ্বালিয়ে দেয়। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান সেদিন একে স্বাগত জানিয়ে এক বার্তায় বলেছিলেন, এর মধ্যদিয়ে আমরা সেই রক্ত জিঞ্জির থেকে মুক্ত হলাম, যা আমাদের পায়ে বাঁধা ছিলো। পিকেকের এই পদক্ষেপ সমগ্র অঞ্চলের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে ইনশাআল্লাহ।
সূত্র: ইয়েনি শাফাক