দখলকৃত জম্মু-কাশ্মীরে স্বাধীনতা সংগ্রাম দমনে কাশ্মীরী নারীদের উপর যৌন সহিংসতার আশ্রয় নিয়ে যাচ্ছে ভারতীয় বাহিনী।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) কাশ্মীর মিডিয়া সার্ভিসের এক বিশেষ প্রতিবেদনে একথা জানানো হয়।
আন্তর্জাতিক সংঘাতকালীন যৌন সহিংসতা নির্মুল দিবস উপলক্ষে প্রকাশিত প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, কাশ্মীরী নারীদের লাঞ্ছনা ও যৌন নিপীড়ন হলো ভারতীয় দখলদারিত্বে থাকা জম্মু-কাশ্মীরের স্বাধীনতার ন্যায্য সংগ্রাম দমন করার একটি বর্বর যুদ্ধাস্ত্র, ভারতীয় শাসকগোষ্ঠী যা যুগের পর যুগ ব্যবহার করে আসছে।
আন্তর্জাতিকভাবে বিরোধপূর্ণ কাশ্মীর অঞ্চল ভারত অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মীরে কাশ্মীরি নারীরা ভারতীয় দখলদারিত্বের সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী। গত ৩৭ বছরে ১১ হাজার ২৬৭ জন কাশ্মীরী নারী ভারতীয় বাহিনী কর্তৃক ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে।
ভারতীয় বাহিনী সামরিক কৌশল হিসেবে ধর্ষণ, শ্লীলতাহানি ও যৌন হয়রানির বাস্তবায়ন ঘটায়। কাশ্মীরিদের ভীত, অপমানিত ও মনোবল ভেঙে দিতে যৌন সহিংসতাকে তারা অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে। কাশ্মীরিদের স্বাধীনতার ন্যায্য রাজনৈতিক দাবী দমন করতেই তারা এসব নৃশংসতা চালিয়ে থাকে।
এছাড়াও প্রতিবেদনে কয়েকটি মর্মান্তিক ঘটনা উল্লেখ করা হয়,
১. কুনানপোশপোরা গণধর্ষণ (২৩ ফেব্রুয়ারি ১৯৯১): কুপওয়ারা জেলার কুনানপোশপোরা এলাকায় রাতভর তল্লাশি অভিযানের নামে ভারতীয় সেনারা ১০০ এর অধিক কাশ্মীরী নারীকে দলবদ্ধভাবে ধর্ষণ করে।
২. শোপিয়ান দ্বি-ধর্ষণ ও হত্যা (২৯ মে ২০০৯): আসিয়া ও নিলুফার নামের দুই নারীকে ভারতীয় সেনারা অপহরণ করে এবং গণধর্ষণ শেষে হত্যা করে। পরদিন সকালে তাদের মরদেহ একটি নালায় পড়ে থাকতে দেখা যায়।
৩. কাঠুয়া শিশু ধর্ষণ ও হত্যা (জানুয়ারি ২০১৮): ৮ বছর বয়সী মুসলিম কন্যাশিশু আসিফা বানুকে ভারতীয় পুলিশ ও হিন্দুত্ববাদীরা দলবদ্ধভাবে ধর্ষণ করে এবং নির্মমভাবে হত্যা করে।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, এই সমস্ত ভয়াবহ অপরাধে জড়িত ভারতীয় বাহিনীর কোনো সদস্যকে এখন পর্যন্ত কোনো শাস্তি দেওয়া হয়নি।
এছাড়া ৩৬ জনের অধিক কাশ্মীরি নারী যাদের মধ্যে জনপ্রিয় নারী নেত্রী সাইয়িদা আসিয়া আন্দারাবি, ফাহমিদা সোফি ও নাহিদা নাসরিন রয়েছেন, তারা দীর্ঘদিন ধরে মিথ্যা মামলায় ভারত ও দখলকৃত কাশ্মীরের জেলগুলোতে বন্দি রয়েছেন। তাদের একটাই অপরাধ, তা হলো স্বাধীনতার ন্যায্য দাবির জন্য সোচ্চার হওয়া।