বৃহস্পতিবার | ২৮ আগস্ট | ২০২৫

আগামী পাঁচ বছরের উন্নয়ন কৌশল ঘোষণা করল তালেবান সরকার

আফগানিস্তানের আগামী পাঁচ বছরের উন্নয়ন পরিচালনার লক্ষ্যে তালেবানের নেতৃত্বাধীন সরকার একটি দীর্ঘমেয়াদি ও সর্বাত্মক পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে। ইতোমধ্যে এর বাস্তবায়ন কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী মোল্লা আব্দুল গনি বারাদার আখুন্দের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ পরিকল্পনা অনুমোদন করা হয়।

বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে ইমারাতে ইসলামিয়ার মুখপাত্র ও ডেপুটি তথ্যমন্ত্রী মাওলানা জবিহুল্লাহ মুজাহিদ উন্নয়ন কৌশল সম্পর্কিত সিদ্ধান্ত তুলে ধরেন।

আফগানিস্তানের সর্বোচ্চ নেতা বা আমিরুল মু’মিনীন শাইখুল হাদিস হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদার নির্দেশে অনুমোদিত এই উন্নয়ন কৌশল দেশীয় সক্ষমতা ও সম্পদ ব্যবহার করে জাতীয় মৌলিক লক্ষ্য অর্জনের উদ্দেশ্যে প্রণয়ন করা হয়েছে। এটি একটি সর্বাত্মক, একীভূত ও দীর্ঘমেয়াদি দলিল, যা আগামী পাঁচ বছরের জন্য রাষ্ট্রের সব সম্পদকে অভিন্ন পথে পরিচালিত করবে।

আফগান ডেপুটি তথ্যমন্ত্রী মাওলানা মুজাহিদ বলেন, “এই পরিকল্পনা আফগানিস্তানের উন্নয়নের জন্য একটি সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ। ধাপে ধাপে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে, যাতে জনগণ বাস্তব সুফল পায়।”

তিনি জানান, কৌশলে সুশাসন ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, নিরাপত্তা ও জনশৃঙ্খলা, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও সামাজিক উন্নয়নসহ দশটি খাত অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এর মধ্যে অর্থনীতি ও কৃষি, প্রাকৃতিক সম্পদ ও জ্বালানি, আবাসন ও সামাজিক সমন্বয়, পরিবহন ও যোগাযোগ, দ্বীনি ও আধুনিক শিক্ষা ও সংস্কৃতি, স্বাস্থ্য, সামাজিক সুরক্ষা ও পরিবেশ সংরক্ষণ সহ অন্যান্য খাত রয়েছে। পাশাপাশি পনেরোটি অগ্রাধিকারমূলক কর্মসূচিও নির্ধারণ করা হয়েছে।

বৈঠকে ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী মোল্লা আব্দুল গনি বারাদার বলেন, “ইমারাতে ইসলামিয়ার উন্নয়ন কৌশল শরিয়াহর বিধান, বৈজ্ঞানিক মানদণ্ড এবং দেশের বাস্তব পরিস্থিতির আলোকে প্রণয়ন করা হয়েছে। এতে জাতীয় উন্নয়নের মৌলিক লক্ষ্য ও অগ্রাধিকার নির্ধারণ করা হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “গত চার বছরে ইমারাতে ইসলামিয়ার মন্ত্রণালয় ও প্রতিষ্ঠানগুলো রাষ্ট্রের ভিত্তি মজবুতকরণ এবং অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।”

তিনি উল্লেখ করেন, “সীমিত সম্পদ ও ক্রমবর্ধমান চাহিদা মোকাবিলায় সব নীতি, কর্মসূচি ও প্রকল্পকে এই দলিলের আলোকে সাজাতে হবে। কৌশল বাস্তবায়নে কর্মসূচি প্রণয়ন, প্রকল্পের অগ্রাধিকার নির্ধারণ, ব্যয়ের মূল্যায়ন ও কার্যকর তদারকি সব মন্ত্রণালয় ও প্রতিষ্ঠানের যৌথ দায়িত্ব। এজন্য ধারাবাহিক সহযোগিতা ও পূর্ণ মনোযোগ জরুরি।”

উল্লেখ্য, এই উন্নয়ন কৌশল ইসলামী বিধানের আলোকে প্রণীত। এর লক্ষ্য হলো সুশাসন প্রতিষ্ঠা, সর্বাত্মক নিরাপত্তা ও ভৌগোলিক অখণ্ডতা রক্ষা, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করা। দলিলটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা শক্তিশালী হবে এবং সরকারের প্রতি জনগণ ও আন্তর্জাতিক সমাজের আস্থা আরও বৃদ্ধি পাবে। পাশাপাশি শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও অন্যান্য মৌলিক সেবায় প্রবেশাধিকারও উন্নত হবে।

সূত্র : আরটিএ ও আরিয়ানা নিউজ

spot_img

এই বিভাগের

spot_img