ঈদুল আযহার দিন ঈদের জামাতের পাশেই পবিত্র কুরআন পোড়ানোর ঘটনা ঘটেছে সুইডেনের স্টকহোমে।
বুধবার (২৮ জুন) পুলিশী নিরাপত্তায় স্টকহোমে মেডবোরগারপ্ল্যাটসেন বা সিভিক স্কয়ারের স্টকহোম মসজিদের বাইরে ঈদের নামাজের সময় এই ঘটনা ঘটে।
সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, সুইডেনে বসবাসকারী সালওয়ান মোমিকা নামের এক ইরাকি নাগরিক প্রথমে ইসলামকে নিয়ে তুচ্ছতাচ্ছিল্য ও আপত্তিকর কথা বলতে বলতে মুসলিমদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ আল কুরআন মাটিতে ছুড়ে মারেন। এরপর তাতে আগুন ধরিয়ে দেন।
এছাড়া সুইডিশ পুলিশের পক্ষ থেকেও আগাম ঘোষণা দেওয়া হয় যে, আজ ঈদের নামাজের পর স্টকহোম মসজিদের সামনে একটি প্রতিবাদ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে। এতে মুসলিমদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থও পোড়ানো হবে।
স্টকহোম মসজিদ এসোসিয়েশনের প্রধান ও মসজিদের প্রধান ইমাম মাহমুদ হালফী জানান, ঈদের নামাজের পর পর এমন ঘটনা অপ্রত্যাশিত ছিলো আমাদের কাছে। কুরআন পোড়ানোর ঘটনা আমাদের মতো পুরো মুসলিম বিশ্বকেও গভীরভাবে মর্মাহত করেছে। কুরআন পোড়ানোর পাল্টা প্রতিক্রিয়া রোধে তারা পুলিশী সহায়তাও নিয়েছে! আমরা এধরণের উস্কানিমূলক ও ইসলাম বিদ্বেষী কর্মকাণ্ড ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করি। নিন্দা জানাই হিংসাত্মক কর্মকাণ্ডে পুলিশের আনুষ্ঠানিক সমর্থনের।
নয়ান্স পার্টির প্রধান মিকাইল ইউকসেল জানান, স্কুলগুলোতে সুইডিশ সরকারের স্কার্ফ নিষিদ্ধের পায়তারার মাঝে ঈদের দিন কুরআন পোড়ানোর ঘটনা আমাদের জন্য মরার উপর খরার ঘা হয়ে এসেছে। মুসলিমদের মনে গভীর ক্ষত সৃষ্টি করেছে। সুইডেনে মুসলিম সম্প্রদায় এখন তুরস্কের দিকে তাকিয়ে আছে। বার বার কুরআন পোড়ানো বন্ধে ও ইসলাম বিদ্বেষ মোকাবিলায় তুরস্ক তাদের প্রয়োজনীয় সহায়তা করবে বলে আশা করছে।
এই ঘটনা এমন সময়ে ঘটলো যখন আগামী মাসে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ন্যাটো শীর্ষ সম্মেলনে দেশটির ন্যাটোতে যোগদান নিশ্চিত হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। ন্যাটোতে যোগদানে প্রধান বাঁধা উতরে যেতে তুরস্কের সকল শর্ত মেনে নিতেও রাজি হয়েছে।
তবে তুরস্কের চাপে পড়ে এর আগে কুরআন পুড়িয়ে প্রতিবাদের স্বাধীনতার উপর যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিলো দেশটির উচ্চ আদালত তা বহাল রাখেনি তারা। নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নিতে গত ১২ জুন সুইডিশ আপিল বিভাগ নিম্ন আদালতের একটি রায়কে বহাল রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। এতে স্পষ্টভাবে বলা দেওয়া হয় যে, কুরআন পুড়িয়ে প্রতিবাদ প্রকাশ করাকে আইনি ভাবে প্রতিরোধ করতে পুলিশ কোনো ধরণের ভূমিকা পালন করতে পারবে না।
সূত্র: আল জাজিরা ও আনাদোলু