সোমবার, মে ৫, ২০২৫

নারী শুধু জন্মগত নারীরা, ট্রান্সজেন্ডার নয়: ব্রিটেনের সুপ্রিম কোর্ট

spot_imgspot_img

নারীর নিরাপত্তায় ব্রিটেনের সুপ্রিম কোর্ট ঐতিহাসিক এই রায় দিয়েছে। রায়ে বলা হয়েছে, জন্ম জন্মসূত্রে নারীরাই নারী হিসেবে গণ্য হবে, ট্রান্স বা রূপান্তরিতদের নারী হিসেবে বিবেচনা করা হবে না।

বুধবার (১৬ এপ্রিল) নারীর আইনি সংজ্ঞা নির্ধারণ করে ঐতিহাসিক এ রায় দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের সুপ্রিম কোর্ট।

এই রায়ের মধ্য দিয়ে নিজেদের সমতা আইনকে ঘিরে ব্রিটেনে দীর্ঘদিন ধরে চলা একটি আইনি লড়াইয়ের চূড়ান্ত অবসান ঘটলো। ধারণা করা হচ্ছে, এ রায় স্কটল্যান্ড, ইংল্যান্ড ও ওয়েলসে লিঙ্গভিত্তিক অধিকারগুলো বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বড় প্রভাব ফেলবে।

আদালতের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করতে বিচারক গিয়ে লর্ড হজ বলেন, আইনে নারী ও লিঙ্গ শব্দগুলো কীভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়, তা নির্ধারণ করাই ছিল আমাদের মূল কাজ।

তিনি বলেন, সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হলো, ২০১০ সালের সমতা আইনে নারী এবং লিঙ্গ শব্দের মাধ্যমে যথাক্রমে জৈবিক নারী ও জৈবিক লিঙ্গকে বোঝানো হয়েছে। কিন্তু আমরা এই রায়কে আমাদের সমাজের কোনো গোষ্ঠীর অধিকারকে উপেক্ষা করে অন্য এক বা একাধিক গোষ্ঠীর বিজয় হিসেবে না দেখার পরামর্শ দিচ্ছি। আইনটির আওতায় এখনো ট্রান্সজেন্ডারদের বৈষম্য থেকে সুরক্ষা পাওয়ার অধিকার রয়েছে।

২০১০ সালের সমতা আইনের সঠিক ব্যাখ্যা সম্পর্কে সিদ্ধান্ত জানানোর জন্য “ফর উইমেন স্কটল্যান্ড” নামের একটি নারী অধিকারবিষয়ক সংগঠনের পক্ষ থেকে সুপ্রিম কোর্টের কাছে আবেদন জানানো হয়েছিল। আইনটি ব্রিটেনজুড়ে প্রযোজ্য হয়।

ব্রিটেনের সমতা আইনের আওতায় নারীর সংজ্ঞায়ন প্রশ্নে স্কটল্যান্ড সরকারের বিরুদ্ধে আদালতের শরণাপন্ন হয়েছিল “ফর উইমেন স্কটল্যান্ড”। তাদের যুক্তি ছিল, যারা জন্মগতভাবে নারী, তাদের ক্ষেত্রেই কেবল লিঙ্গভিত্তিক সুরক্ষাগুলো প্রযোজ্য হওয়া উচিত। আদালত সংগঠনটির পক্ষে তাঁদের অবস্থান জানিয়েছেন।

স্কটল্যান্ড সরকারের যুক্তি ছিল, কোনো ব্যক্তি জিআরসি সনদ পাওয়ার অর্থ হলো, তিনি যে উদ্দেশ্যেই হোক না কেন, লিঙ্গ পরিবর্তন করেছেন। তবে নারী-পুরুষ শব্দ দুটির সাধারণ ব্যাখ্যাকে তুলে ধরে “ফর উইমেন স্কটল্যান্ড” এর পাল্টা যুক্তি ছিল, লিঙ্গ একটি “অপরিবর্তনীয় জৈবিক অবস্থা”।

আদালতের রুলের পর সংগঠনটির পক্ষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে সুপ্রিম কোর্টের বাইরে দেওয়া বক্তব্যে “ফর উইমেন স্কটল্যান্ড” সহপ্রতিষ্ঠাতা সুসান স্মিথ বলেন, আজ বিচারকেরা যা বলেছেন, তা আমরা সব সময় বিশ্বাস করে এসেছি যে নারীরা তাদের জৈবিক লিঙ্গ পরিচয়ের ভিত্তিতে সুরক্ষিত থাকবেন।

তিনি বলেন, এর রায়ের ফলে জন্মগত নারীরা এখন নিরাপদ বোধ করতে পারেন যে নারীদের জন্য নির্ধারিত পরিষেবা ও স্থান নারীদের জন্যই সুরক্ষিত থাকবে।

স্কটল্যান্ডের ফার্স্ট মিনিস্টার জন সুইনি বলেন, স্কটিশ সরকার রায়টি মেনে নিয়েছে।

সর্বশেষ

spot_img
spot_img
spot_img